ছবি: পিয়ালী বালা।
পূর্বানুবৃত্তি: আকিঞ্চন বাড়ি ফিরে এসে খোঁজখবর শুরু করে মেহুলির। জানতে চায় মেয়ে এক বারও তাকে দেখতে যায়নি কেন। নিরুপায় কস্তুরী সব খুলে বলে আকিঞ্চনকে। আকিঞ্চন মেয়ের খোঁজ খবর করতে যাবে, তখনই বাড়ি ফেরে মেহুলি। সঙ্গে এক জন ভদ্রলোক, যাকে কস্তুরী বা আকিঞ্চন চেনে না। কস্তুরীর ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পেয়ে তার প্রোফাইল চেক করে মিশুক। মেহুলি তার বাবার প্রেমিকা রাধিয়ার কথা জানে। কিন্তু বাবা-মার সম্পর্কে শীতলতার কারণ সে বুঝতে পারে না।
মেহুলির মনে পড়ল, সেও এক জন পুরুষের সঙ্গে রাত কাটিয়েছে সম্প্রতি। বয়স্ক হলেও পুরুষ তো আল্টিমেটলি। এক বারের জন্যও কিন্তু শারীরিক সম্পর্কের কথা মাথায় আসেনি। মেহুলি হেসে ফেলল নির্জন বারান্দায়। ধুস! স্বর্ণেন্দুকে দেখলেই কেমন একটা বাবা-বাবা ফিল আসছিল। স্বর্ণেন্দুর মুখটা মনে পড়তেই তার মনটা ভাল হয়ে গেল। কী আশ্চর্য একটা রাত! সে রাতে তারা কত গল্প করেছিল। সেই সব গল্পের কোন মাথামুন্ডু ছিল না। এক জন অসমবয়সি মানুষের গল্প শুনতে শুনতে বুঁদ হয়ে গিয়েছিল সে। ভদ্রলোক ডিভোর্সি। না। ভুল হল। গোদা বাংলায় বৌ পালিয়েছে। দেশের বাইরে। শেষ জানতে পেরেছিল ভেনেজুয়েলায় আছে। ওদের একটি মেয়ে ছিল। নাম বলেছিল পৌষালী। যখন বৌটি চলে গিয়েছিল এক কালো সাহেবের হাত ধরে, মেয়ের তখন বয়স সাত কি আট। মেয়ের কথা বলতে বলতে স্বর্ণেন্দুর চোখ ভিজে এসেছিল, পেট্রোম্যাক্সের আলোয় স্পষ্ট দেখেছিল মেহুলি। সে আগে কোনও দিন কোনও পুরুষকে কাঁদতে দেখেনি। ভারী অবাক হয়েছিল। কত কী জানার এখনও বাকি থেকে গেছে, ভেবে গালে হাত দিয়েছিল। তার পর আবোল তাবোল কথার ফুলঝুরিতে রাত ভোর হয়ে এসেছিল।
তার পর ভদ্রলোক কী ভাবে তাকে তার বাড়ি পৌঁছে দিয়েছিল আর তার পরের গল্প, সে সব বাহ্য ব্যাপার। একটা ভাল লাগা বোধ মেহুলির মনের কোণে ভাল লাগার সৃষ্টি করেছিল। হয়তো অনেক দিন সে ভুলতে পারবে না অথবা বলা ভাল, ভুলতে চাইবে না।
সে দিন ভদ্রলোক সবে গাড়িতে স্টার্ট দিয়েছেন, মেহুলি এসে দাঁড়িয়েছিল গাড়ির জানালার পাশে।
“কী রে? কিছু বলবি?”
“তোমার ফোন নাম্বারটা দাও।”
“আমার? কেন রে, ফের যাবি না কি মাঠ-বাড়িতে? হা হা।”
“মজা নয়। দেবে?”
স্বর্ণেন্দু পকেট থেকে মোবাইল বার করে বললেন, “তোর নাম্বার দে। আমি রিং করে দিচ্ছি। ভাল থাকিস মা।”
“ফের মা!”
“একটা কথা বলব? কাল প্রায় সারা রাত ভেবেছি তোর সঙ্গে গল্প করতে করতে।”
“কী গো?”
স্বর্ণেন্দু কিছু ক্ষণ থেমে ধরা গলায় বললেন, “তুই আমার পৌষালী হবি?”
হতভম্ব মেহুলির স্থির চোখের দিকে অল্প কিছু ক্ষণ তাকিয়ে থেকে ভদ্রলোক তাঁর গাড়ি ফার্স্ট গিয়ারে রেখেছিলেন।
কিন্তু সেই ভাল লাগার মোহটা বেশি ক্ষণ থাকেনি। বাপি এসেছিল তার ঘরে। কোনও ভূমিকা না করে একটা প্যাকেট বিছানার উপর ছুড়ে দিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়েছিল। জিনিসটা দেখে ঘাবড়ে গিয়েছিল সে। এটা কী করে বাপির হাতে এল? এটা তো তার আলমারিতে রাখা ছিল সঙ্গোপনে। কে বার করল? বাপি এই কাজ করবে না। তা হলে মা! উফ, এই ভদ্রমহিলাকে সে খুন করে ফেলবে। ফের তার আলমারি ঘেঁটেছে। বাপি জলদগম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করেছিল, “এ জিনিস তোমার কাছে কী করে এল? অ্যান্ড প্লিজ়, ডোন্ট ট্রাই টু মেক আ স্টোরি।”
মেহুলি কাঠ হয়ে গিয়েছিল। নিজেকে মনে মনে গুছিয়ে নিয়ে বলেছিল, “এটা আমার নয়।”
“কার?”
“কী মুশকিল, নাম বললে তুমি চিনবে?”
“বেশ। তার বয়স কত?”
“অ্যাজ ইউজ়ুয়াল, সেম এজ।”
“মাই গড! তুমি... মানে তোমরা... মানে এতটা বেড়েছ আমি তো জানতাম না। তা হলে দেখছি তোমার মা ঠিকই বলে। তোমাকে একটা চড় মারতে পারলে ভাল হত। বাট...বাট...”
“বাপি, মা যে আমার আলমারি ঘেঁটেছে, সে বিষয়ে কিছু বলছ না? উইদাউট মাই পারমিশন...”
“শাট আপ। ইউ... ইউ...”
আকিঞ্চন টেবিলের উপর থেকে একটা খাতা তুলে ছুড়ে মারলেন মেহুলির দিকে। খাতাটা মেহুলির মাথায় ঠোক্কর খেয়ে বিছানায় ল্যান্ড করল। হতভম্ব মেহুলির চোখের সামনে দিয়ে আকিঞ্চন প্যাকেটটা তুলে হনহন করে বেরিয়ে গেল। মেহুলির কাঁদতে খুব ইচ্ছে করছিল, কিন্তু পারল না। বাপি তাকে মারল! বাপি! আজ অবধি বাপি তাকে কোনও দিন বকেনি, মারা তো দূরের কথা। শেষ অবধি বাপিও! এই মুহূর্তে কিচ্ছু ভাল লাগছে না মেহুলির, কিচ্ছু না।
“তোর মা কোথায় রে?”
পায়ের আওয়াজে শ্যামলেন্দুবাবু ঠিক বুঝেছেন কস্তুরী ঘরে এসেছে। কী করে যে বোঝেন! আকিঞ্চন বেরিয়ে যেতেই ঘড়ি দেখে কস্তুরী বুঝল আজ লেট হতে যাচ্ছে। সপ্তাহের প্রথম দিন। তড়িঘড়ি লাঞ্চবক্স ব্যাগে ভরে হুড়মুড় করে বেরিয়ে যাচ্ছিল। অবশ্য প্রতিদিন বেরোনোর আগে শ্বশুরমশাই আর শাশুড়ি মাকে প্রণাম করে বেরোয় কস্তুরী। প্রণাম করতে যাওয়ার জন্য নিচু হতেই শ্যামলেন্দু টের পেয়ে গেলেন।
“রান্নাঘরে। আমি বেরোচ্ছি বাবা।”
“চন্দন? সে আছে আশপাশে?”
“দেখছি না। আমি বেরোচ্ছি। আসার পথে তোমার বিস্কুট নিয়ে আসব। কাল বলেছিলে, ভুলে গেছি। আজ নিয়ে আসব।”
“তুই একটু বোস, কথা আছে।”
কস্তুরী হাতঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল, “এখনই? ফিরে এসে শুনলে হত না বাবা?”
“দু’মিনিট লাগবে।”
বাধ্য হয়ে পাশে বসল কস্তুরী। শ্যামলেন্দুবাবু প্রায় ফিসফিস করে বললেন, “গত দু’দিন ধরে একটা ব্যাপার হচ্ছে।”
“কী বল তো?”
“যখন বসে থাকি তখন কিছু না। যেই উঠে দাঁড়াই, এই ধর বাথরুমে যাই বা ঘরের অন্য কোথাও, একটা লোক আমার সঙ্গে সঙ্গে হাঁটে।”
“লোক? তাকে দেখতে পাও?”
“না। মুখ দেখা যায় না। শুধু সাদা কাপড়, না, না, ঠিক সাদা নয়, তবে হালকা রঙের মাথা ঢাকা পোশাক পরে থাকে। আমি যেখানে যাই সেও আমার পাশে পাশে যায়। মুখ দেখতে পাই না।”
“তা হলে তোমার ছায়া হবে।”
“সে হতে পারে, কিন্তু আমি দেখতে পাচ্ছিকী করে?”
হুম, তা বটে। কিন্তু এখন এ সব ভাবার একদম সময় নেই। এ বার সত্যি দেরি হচ্ছে। শ্যামলেন্দু বুঝতে পারলেন হয়তো, “তুই যা, পরে ডিটেলসে বলব। আরও কথা আছে।”
“আচ্ছা।”
প্রণামপর্ব সেরে কস্তুরী এক রকম দৌড়ে রাস্তায় এল। বাবার এই অদ্ভুত অদ্ভুত জিনিস দেখার সঙ্গে সে পরিচিত, আজ ফের একটা যোগ হল। একটা জিনিস ভেবে কস্তুরীর মজা লাগে। সে শ্যামলেন্দুকে তুমি বলে আর কেতকীবালাকে আপনি। কেতকীবালাও তাকে তুমি বলেন আর শ্যামলেন্দু তুই।
কস্তুরী কাল সারা দিন নানা কাজে ফেসবুক খোলার সময় পায়নি। চলন্ত বাসে বসে ফেসবুক খুলেই প্রায় লাফিয়ে উঠল কস্তুরী। দু’এক জন পেন্ডিং ফ্রেন্ড রিকোয়েস্টের ঠিক উপরে জ্বলজ্বল করছে, ‘মিশুক মুখার্জি অ্যাকসেপ্টেড ইয়োর ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট’। কস্তুরীর হাত কাঁপছে। মিশুক মুখার্জি তার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট করেছে! মেসেজটা বার বার দেখেও তার আশ মিটছে না যে। কস্তুরী তাড়াতাড়ি মেসেঞ্জার খুলে মিশুক মুখার্জিকে একটা ধন্যবাদ আর একটা স্মাইলি পাঠিয়ে দিল। বাসে বড্ড ভিড়। একটা উৎকট ঘামের গন্ধ আসছে। অন্য দিন হলে তার বিরক্তি জাগত, কিন্তু মুহূর্তে অন্য কোনও অনুভূতি আসছে না তার। মিশুক! মিশুক মুখার্জি তার ফ্রেন্ড! যদিও ফেসবুকে, তবু এও কম কী? এ বার মেয়েটির লেটেস্ট পোস্টগুলোয় সে অনেক লাইক, কমেন্ট করতে পারবে, প্রচুর শেয়ার করতেও ছাড়বে না। আচ্ছা, মিশুক কি কোনও দিন তার পোস্টে লাইক করবে? ইস, কী দারুণ হত! আচ্ছা, সে কি এক বার মেসেঞ্জারে আর একটা কমেন্ট করবে? বেশি কিছু না, এই কী করছ, কেমন আছ, কোথায় বাড়ি? নাঃ, থাক, আর কিছু দিন যাক। এখনই অত কিছু করলে যদি আনফ্রেন্ড করে দেয়?
আকিঞ্চন বেরিয়ে যেতে ফের একটু ঘুম ঘুম পেয়ে গিয়েছিল রাধিয়ার। এ বার চোখ খুলেই দেওয়ালে ঝোলানো ঘড়িটার দিকে চোখ গেল। উফ! কত বেলা হয়ে গেল। নাঃ, এ বার উঠতে হয়। এত ভাল একটা শারীরিক সুখের পরেও মনটা কিছুতেই ভাল হচ্ছে না রাধিয়ার। আকিঞ্চন তো এলই প্রায় দু’সপ্তাহ পরে, তাও থাকল না। অথচ দিন দুই আগেই প্ল্যান হল আজকের দিনটা শুধু রাধিয়ার জন্য। আকিঞ্চন বোয়ালের ঝাল খেতে পছন্দ করে। সেই জন্য আকিঞ্চন আসার আগে থেকেই সে রেসিপি রেডি করে রেখেছিল। খান দশেক মাছের টুকরো, রসুনবাটা, আদাবাটা, জিরেবাটা, হলুদ-লঙ্কা-নুন সব রেডি করে রেখেছিল। ইচ্ছে ছিল মাঝারি করে কাটা আলু দিয়ে দেবে, কিন্তু আকিঞ্চন মাছে আলু পছন্দ করে না বলে আলুর টুকরোগুলো দিয়ে ভুন্দাটাইপের কিছু বানাবে ভেবেছিল। প্ল্যানমতো আজকের সকালে জমিয়ে স্নান করেছে সে। তার পর পুজো করেই বসে গেছে রান্না করতে। আকিঞ্চন যদিও একটু দেরি করে এল, কিন্তু থাকল না। ঠিক ছিল আজকের দুপুর নাগাদ বসবে বোয়ালের ঝাল আর রেড ওয়াইন নিয়ে। তার পর বিকেল নাগাদ মিলেনিয়াম পার্ক, নয়তো একটা মুভি। ব্যস। খুব কি বেশি চেয়েছিল সে? সব প্ল্যান ভেস্তে গেল। আকিঞ্চন আজ এসেই তাকে নিয়ে শুয়ে পড়ল। পুজোর শাড়ি আর ছাড়তে দেয় না। অনেক কষ্টে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে শাড়ি বদলে ম্যাক্সি পরে আসতে হয়েছিল খাটে। তার পরের আধ ঘণ্টায় সে আর আকিঞ্চন যে-যার সুখ আদায় করেছে পরস্পরের শরীর থেকে।
রাধিয়া নিজের মনটাকে ভাল করবার চেষ্টা করল। আকিঞ্চন তাকে ভালবাসে, সেও। অথচ কী ভাবে আকিঞ্চন রায়ের সঙ্গে জড়িয়ে গেল রাধিয়া শ্রীবাস্তব নামটা, এখনও ভাবলে স্বপ্নের মতো মনে হয়। ভাল লাগে, তার দরকার ছিল এই স্বপ্নটার, নইলে আদিনাথের সঙ্গে কাটানো তার দুঃস্বপ্নগুলো ভুলতে পারত না সে।
একদম ছোট্টবেলাতেই মাকে হারিয়েছিল রাধিয়া। তার আগেই বাবা আত্মহত্যা করেছিল। এক ভাই ছিল, জন্ম থেকেই ন্যালা-খ্যাপা। কথা বলতে গেলে লাল ঝরে পড়ত। তবু ভাই তো। প্রচণ্ড ভালবাসত তাকে রাধিয়া। সেই ভাইও এক দিন ছাড়ল না তাকে। কী জানি মাসখানেক আগে থেকেই সবাই বলছিল ভাইয়ের মাথার শিরা-ধমনীগুলো গড়বড় করছে। সবাই বলতে কাকা আর কাকিমা। মা চলে যাওয়ার পরে ওদের কাছেই হাতে পায়ে বড় হচ্ছিল রাধিয়া আর তার ভাই। এক রাতে রাধিয়া টের পেল একটা বালিশ তার মুখে। ভাইয়ের ওই রোগাপটকা চেহারায় এত জোর, কে জানত? মুহূর্তে অনুভব করল ভাইয়ের আর একটা হাত টেনে নামানোর চেষ্টা করছে তার নিম্নাঙ্গের আবরণ। কী এক অজানা ভয়ে কাকিমাকে ডাকার চেষ্টা করেছিল রাধিয়া। পারেনি। মাথা কাজ করছিল না। তার পর খুব ধীরে ধীরে একটা অভাবিত যন্ত্রণার ভিতর ডুবে যাচ্ছিল সে। দমটা বন্ধ হয়ে আসছিল, শুধু তারই মধ্যে নীরবে চিৎকার করে বলেছিল, “ভাই রে, আমি তোর নিজের দিদি।”
মনে আছে, পরদিন সকালে জ্ঞান আসতে চার দিকে কতগুলো উদ্বিগ্ন মুখ দেখেছিল, কানে এসেছিল ভয়ঙ্কর চেঁচামেচি। পরে ধাতস্থ হয়ে এটা বুঝেছিল যে, তার যা সর্বনাশ হওয়ার তা তো হয়েই গেছে, ভাইটিও নিখোঁজ। সে আর ফিরে আসেনি। জীবন থেমে থাকেনি, থাকেও না কারও। রাধিয়াও বড় হতে লাগল আর পাঁচটা মেয়ের মতো। গ্র্যাজুয়েশনের পরে প্রেম এল। ছেলেটি ব্যবসার সূত্রে এসেছিল তাদের ছোট্ট টাউনে। আদিনাথ। সেই আদিনাথের উপাধিই সে তার নামের সঙ্গে বয়ে বেড়াচ্ছে আজ অবধি। অসহ্য।
বিরাটির পৈতৃক বাড়ি ছেড়ে এই বাড়িতে আদিনাথের উঠে আসা বছর বারো হতে চলল। কী সব শরিকি ঝামেলা ছিল শুরু থেকেই। এটা ছিল তিন ভাইয়ের বাড়ি। দুই ভাই নাকি বাড়িটাকে প্রোমোটারের হাতে দিতে উদ্যোগী হলেও বড় ভাই অনড় ছিল। তার যুক্তি ছিল বাড়িটাকে রি-মডেলিং করা হোক, নিজেদের টাকাতেই। তিন পুরুষের বাড়ি অন্যের হাতে না দেওয়াই ভাল। শুরু হল ঝামেলা। সে ঝামেলা গড়াতে গড়াতে মামলাবাজির দরজা অবধি যেতে গিয়েও আটকে গেল। বড় ভাই জেদের বশে তার দখলে থাকা পুবদিকের দোতলাটা বেচে দিল স্কুলের বন্ধু আদিনাথকে। আদিনাথ ব্যবসাটা বুঝত। দাঁও মারতে দ্বিধা করেনি। পাশাপাশি আদিনাথ টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করেছিল বাকি দুই ভাইয়েরও। হয়তো ভাইয়েরা বুঝেছিল, মামলা-মোকদ্দমায় যথেষ্ট অর্থ আর সময় জলে গেছে, আরও যাবে। অতএব এক শুভ দিন দেখে আদিনাথ বৌ সমেত এসে সংসার সাজিয়ে বসল এই গুলু ওস্তাগর লেনের দোতলা জুড়ে।
ক্রমশ