ধারাবাহিক উপন্যাস পর্ব ১৬
Bengali Serial Novel

শূন্যের ভিতর ঢেউ

প্রমিতের সাধারণ প্রশ্নেও উত্তর খুঁজে না পেয়ে থতমত খায় মল্লার। চিরশ্রী পরিস্থিতি সামলে নেয়। কোনও রকমে চা খেয়ে বেরিয়ে আসে মল্লার।

Advertisement

সুমন মহান্তি

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:১০
Share:

ছবি: প্রসেনজিৎ নাথ।

পূর্বানুবৃত্তি: সুমির সঙ্গে নানা বিষয়ে কথাবার্তা হয় অভ্রর। টাকাপয়সার দিক থেকে সুমি বেশ আত্মবিশ্বাসী। তার ফ্ল্যাট কেনারও পরিকল্পনা আছে। অভ্র তাকে দেখে অবাক হয়। সুমি যে তাকে কোনও রাস্তা দেখানোর চেষ্টা করছে, তা ভেবে ভাল লাগে তার। অন্য দিকে, চিরশ্রীর সঙ্গে গোপন সম্পর্ক চলতে থাকে মল্লারের। বেড়ে চলে পরস্পরের প্রতি তীব্র টান, কিন্তু কেউই সীমা পেরোয় না, সংযমের পরীক্ষা দিয়ে চলে। চিরশ্রী আর প্রমিত প্রায় দিন পনেরোর জন্য বাইরে যাবে বেড়াতে। সে কথা জেনে মনখারাপ হয় মল্লারের। চিরশ্রীরও খারাপ লাগে। সেই সন্ধেয় ক্লাস চলতে চলতেই বাড়ি ফেরে চিরশ্রীর স্বামী প্রমিত। প্রমিতের সাধারণ প্রশ্নেও উত্তর খুঁজে না পেয়ে থতমত খায় মল্লার। চিরশ্রী পরিস্থিতি সামলে নেয়। কোনও রকমে চা খেয়ে বেরিয়ে আসে মল্লার।

Advertisement

বাইক থেকে নেমে পানগুমটির সামনে গিয়ে দাঁড়াল মল্লার। জর্দাপান মুখে দিতেই মোবাইল ফোনটা বাজল। অভ্র কল করেছে।

“হ্যালো।”

Advertisement

“কোথায় আছিস?”

“জলট্যাঙ্কের সামনে। দু’জায়গায় শেখানো হল, আর একটা বাকি।”

“আচ্ছা, শেয়ার কেনাবেচা নিয়ে তোর কোনও আইডিয়া আছে?”

মল্লার উত্তর দিল, “না। আমার ফাদারের এই বিষয়ে প্রচুর ফান্ডা আছে। থাকারই কথা। তার কাছে টাকা স্বর্গ, টাকা ধর্ম, টাকা জগতের আলো। এক্সট্রা ইনকামের সুযোগ ছাড়ে কখনও?”

“তুই করিস না কেন?”

মল্লার খ্যাঁক করে উঠল, “বুদ্ধু, শেয়ার-মার্কেটে বিনিয়োগের জন্য টাকা লাগে। সেটা কে দেবে?”

“বুঝলাম।”

“ফাদার ডেলি বেসিসে কেনাবেচা করে। সারা দিন ফোনের দিকে চেয়ে থাকে, খুটখাট করে, মাঝে মাঝে মোটা দাঁও মারে। সে-সব দিন বুড়ো ব্যাপক মুডে থাকে। ও নিয়ে আমার অবশ্য কোনও ইন্টারেস্ট নেই। হঠাৎ এই প্রশ্ন?”

“ভাবছি নামব।”

“তা হলে আমার বাবার কাছে ট্রেনিং নিয়ে নে। মাথায় শেয়ারের পোকা নড়ল কেন?”

“ইচ্ছে হল। হাতে কিছু পয়সা এলে ক্ষতি কী?”

“পয়সা ডুবেও যেতে পারে চাঁদু।”

“জানি। তবু এক বার ঝুঁকি নিয়ে নেমেই দেখি।”

“বেস্ট অব লাক। ডুবে গেলে আমার কাছে দুঃখের গান গাইবি না কিন্তু,” মল্লার বলল।

“তুই ছাড়া দুঃখের গান শোনার কেউ নেই। তোর বরং আছে। চিরশ্রীর কথা যখন মনে এল, একটা কথা বলব? খিস্তি দিবি না কিন্তু।”

“ভণিতা না করে বলে ফেল,” মল্লার অধৈর্য, “তবে জ্ঞান শুনলে আমার বদহজম হয়ে যায়।”

এই সময় তার চিরশ্রীকে নিয়ে ভাবতে ইচ্ছে করছে, নীরস বিষয় ভাল লাগছে না। আজকের আদর-আহ্লাদের দৃশ্য মনে করে রোমাঞ্চিত হতে চাইছে মল্লারের শরীর-মন।

“তোদের রিলেশনটা কত দূর এগিয়েছে?”

মল্লার গম্ভীর হল, “খুবই পার্সোনাল প্রশ্ন।”

“তুই কবে থেকে বিশেষ পার্সোনালিটি হলি শুনি? বাইপাস করছিস যে!”

“আগ্রহ যে দেখছি ষোলো আনা! শোন, আমাদেরটা হল গিয়ে প্লেটোনিক। টুকটাক মেসেঞ্জার, হাসি বিনিময়, ওটুকুই।”

অভ্র হাসতে শুরু করলে মল্লার জিজ্ঞাসা করল, “হাসছিস কেন?”

“হাসব না? প্লেটোনিক প্রেম, তা-ও এই বয়সে! পৃথিবীর সমস্ত প্লেটোনিক প্রেম বিছানায় গিয়ে শেষ হয়। তুই তো এমন হিপোক্রিট ছিলি না!”

মল্লার বলল, “বলতে আমি রাজি নই। উত্তর দিতে পারলাম না।”

“নেতাদের মতো স্টেটমেন্ট দিচ্ছিস। অত শোনার আগ্রহও নেই। শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে ধরে নে জ্ঞানই দিচ্ছি। আর যাই কর, আল্টিমেট ফিজ়িক্যাল রিলেশনে যাস না। ওতে কমপ্লিকেশন বাড়বে।”

“এটা কি নিজের জীবন দিয়ে উপলব্ধি করেছিস?” মল্লার তির্যক গলায় বলল।

“ওই জায়গায় গেলে রুমকিকে ভোলা বেশি কষ্টকর হত। চুমুর বেশি এগোতে পারিনি। কত বার বলব তোকে? তোর মতো প্রাইভেট, পার্সোনাল বলে মুখে কুলুপ আঁটিনি।”

“আমি তো চুমুতেও যেতে পারিনি!”

অভ্র মজা পাওয়ার ভঙ্গিতে বলল, “রিয়েলি? তুই পরস্ত্রীর সঙ্গে রিলেশনে জড়িয়েছিস। শরীর আসবেই। রুমকির ইনহিবিশন ছিল, কিন্তু চিরশ্রীর থাকবে না।”

“জানিসই তো যে ভোঁতা মাথা। কী সব কঠিন ইংরেজি বললি, ইনহিবিশন। মানে কী?”

“জড়তা বা সঙ্কোচ। রুমকির ছিল। আনম্যারেড মেয়েদের থাকে। অনেকের আবার থাকেও না। চিরশ্রী ম্যারেড। চূড়ান্ত মিলন চাইতেই পারে।”

মল্লার রেগে বলল, “থাম তুই। বিজ্ঞের বাটখারা হয়ে যাচ্ছিস। তা ছাড়া এ নিয়ে প্রাইভেসি রাখতে চাই। তোর নাক গলানোর দরকার নেই।”

অভ্র নিবে গেল, “বেশ। ওটা নিয়ে আর টুঁ শব্দও উচ্চারণ করব না। থাক তুই তোর প্রাইভেট পার্সোনাল লাইফ নিয়ে।”

অভ্র হয়তো রাগ করল। রাগ করলেও তার কিছু করার নেই। চিরশ্রীকে সে প্রমিস করেছে। তাদের অন্তরঙ্গতা নিয়ে একটি শব্দও যেন মল্লার কাউকে না বলে। চিরশ্রীকে দেওয়া অঙ্গীকার সে অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে। চিরশ্রী এখন তার সব কিছু, সে সমস্তটাই জানে। অভ্রর কথা জানে, ভাই এবং ভাইয়ের বৌয়ের কথাও জানে। এই একটি ব্যাপারে সে নির্লিপ্ত হতে পেরেছে। তার ভাই সহপাঠিনীর সঙ্গে প্রেম করত, ঘরে অবিবাহিত দাদা থাকলে সে কী করে বিয়ে করে? মল্লার বরং বাড়ির লোককে বুঝিয়ে রাজি করিয়েছিল। কোভিড শুরু হওয়ার ঠিক আগে বিয়ে হয়েছে ওদের, ইস্যুও আসতে চলেছে, সম্ভাব্য তারিখ ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ। অকারণ সেন্টিমেন্ট দেখিয়ে সে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।

সুমি গতকাল বলতে গেলে টানা এক ঘণ্টা তার ‘ক্লাস’ নিয়েছে। শেয়ার সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান হয়েছে তার। ওটুকু যথেষ্ট নয় বলে প্রচুর পড়াশোনা করছে সে, নেট ঘাঁটছে, ইউটিউব দেখছে।

সুমি আজ বিকেলে ভালাইডিহা চলে যাচ্ছে। গত তিন মাসে যেতে পারেনি, সপ্তাহে এক দিনের বেশি ছুটি কখনও পায়নি। খুব মুডে আছে মেয়েটা। একটু আগে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করেছে, “উৎসাহের চোটে এখনই কিছু করে বোসো না। ডি-ম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলেছ। ও নিয়েই ক্ষান্ত থাকো। শুরুর কয়েকটা ইনভেস্টমেন্ট সাবধানে করাই ভাল। যা হবে পুজোর পরে, আমার সাজেশন মাথায় রেখে করবে। তা হলে ডুববে না।”

পুজোর সময়ে নিজের গ্রাম এবং বাড়িতেই সুমি ভাল থাকবে। অভ্রকে যেতে বললেও রাজি হয়নি। সে বলেছে, “যাব এক দিন। যে দিন লোকের প্রশ্নে কুঁকড়ে যাব না, আমার প্রতি অবজ্ঞা ও করুণার দৃষ্টি কেউ দেবে না, মাথা উঁচু করে নিজের পরিচয় দিতে পারব, সে দিনই যাব। শিস দিতে দিতে বেনেপুকুর পেরোব, আনন্দে উদ্বেল হব, মোষের পিঠে বসে থাকা সাদা বকটি উড়ে যাবে দূরে, আর আমি বৈঁচিঝোপ পেরিয়ে নাচতে নাচতে ছোটবেলার সেই বড় সাধের মামাবাড়ির উঠোনে পৌঁছে যাব।”

তেমন দিন কি আসবে আদৌ? সব কিছুই যে ঝাপসা মনে হয়। ধর্মতলার মঞ্চে ছেলেমেয়েগুলো ধর্না দিয়েই চলেছে। ওদের পুজো নেই, থাকার কথাও নয়। এখন মানুষের সব গা-সওয়া হয়ে গেছে। তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরাও আত্মপ্রেমে মগ্ন, নিরাপদ কমফোর্ট জ়োনে বসে নিজেদের পাওনাগন্ডা বুঝে নিতে ব্যস্ত। অভ্র একটা কথা বুঝতে পারে না যে, শাসক হলেই সবাই একই ধাঁচের হয়ে যায় কেন? কৃষকদের মৃত্যু এবং অবস্থানেও টনক নড়ে না, বঞ্চিত শিক্ষিত বেকারদের ধর্নাতেও টনক নড়ে না। শীতল এবং নিষ্ঠুর উদাসীনতা কি পৃথিবীর সমস্ত শাসকের ধর্ম? মানুষের কথা বেশি ভাবে বলে যারা বড়াই করে, তাদের উঁচুমহলের নেতারা বিদেশে বেড়াতে যায়, ফার্ম-হাউসে ছুটি কাটায়। কোনও চাকরি না করেও তাদের দিব্যি রসেবশে কেটে যায়।

অভ্রর মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে। আর একটা মনখারাপে ভরা দুর্গাপুজো আসতে চলেছে। তার কোথাও যাওয়ার নেই, কোনও আনন্দ নেই। দু’-চারটে খুন করতে পারলে জ্বালা জুড়োত।

সুপ্রীতি ডাকলেন, “বাবু, শোন।”

কাছে গিয়ে অভ্র বলল, “কিছু বলছ?”

সুপ্রীতি ইতস্তত করে বললেন, “কত দিন বাপের বাড়ি যাইনি। তোর বাবা চলে যাওয়ার পর থেকে কোথাও যেতে মন চায়নি। ভাবছি এক বার গেলে হত।”

অভ্র হেসে ফেলল, “বেশ তো, মন যখন চাইছে তখন এক বার ঘুরে এসো। কবে যাবে?”

“সুমি আজ বিকেলের বাসে যাবে। ওর সঙ্গে চলে যাব। একা যেতে মন চাইত না। ও যাচ্ছে শুনে মন উতলা হচ্ছে।”

“তা হলে একটা গাড়ির বন্দোবস্ত করি?”

সুপ্রীতি ধমক দিলেন, “থাম, অত বাবুয়ানি করতে তোকে বলেছি? এত অথর্ব নই যে, বাসে তিন ঘণ্টা জার্নি করতে পারব না। তোর রোজগার কমে যাচ্ছে, বিলাসিতা করলে চলবে?”

“কে বলল? সুমি? মেয়েটার পেটে কি কথা থাকে না? সব উগরে দিতে হবে!”

“তুই তো মায়ের কাছে সব কিছু লুকোস। সুমিকে আমিই তোর খবরাখবর রাখতে বলেছি।”

“কাউকে অত আপন ভাবা ঠিক নয়,” অভ্র বলল, “বাস ক’টার সময়?”

“চারটে দশ...” তার পর একটু থেমে জিজ্ঞেস করলেন, “কিন্তু তুই কী ভাবে থাকবি?”

“হোম সার্ভিসে চালিয়ে নেব। একা থাকাটা কোনও সমস্যাই নয় আমার কাছে। জানি তুমি আমার কথা ভেবেই দু’দিনের জন্যও কোথাও যাও না। তুমি যে বাপের বাড়ি যেতে চেয়েছ নিজে থেকে, এতে আমি খুশি হয়েছি। আমাকে কে চিরকাল আগলে রাখবে বলো?”

সুপ্রীতি ছলছল চোখে বললেন, “থাকবে কেউ। ভগবান ঠিক জুটিয়ে দেবেন। দেখে নিস।”

“আচ্ছা, তা-ই হবে। অমনি চোখে জল এসে গেল! ব্যাগপত্র গোছানো শুরু করে দাও। মিষ্টি, ফলমূল কিনে আনতে হবে। সেখানে খালি হাতে যাবে নাকি?”

“বেশি আনিস না। কমসম আনবি।”

“ও নিয়ে ভাবতে হবে না। দরজাটা লাগিয়ে দাও। আমি বেরোচ্ছি,” হাত বাড়িয়ে ব্যাগ নিল অভ্র।

ছ’বছর পরে মা তার বাপের বাড়ি যাচ্ছে, কমসম করে নিলে চলে না। দাদু ও দিদিমা গত হলেও দুই মামা আছেন, মামাতো ভাইবোন এবং তাদের ছেলেমেয়েরা আছে। হাব্বাডাব্বার দৌলতে ফোকটে পাওয়া টাকা কিছু রয়েছে, অন্তত ভাল কাজে খরচ হোক। মা জোরাজুরি করলেও পুজো উপলক্ষে নতুন জামা-প্যান্ট সে কেনেনি।

পাঁচ রকম মিষ্টি কিনল অভ্র, ফলের দোকানের সামনে বাইক রাখল।

“কেমন আছ অভ্র?”

ঘাড় ঘুরিয়ে অভ্র প্রমিতদাকে দেখতে পেল।

“ওই চলে যাচ্ছে। তুমি?”

“এই মোড়ে বাস ধরব। আজ মেচেদা যাচ্ছি। পঞ্চমীর দিনেও আমাদের কাজের বিরাম নেই।”

“সেটাও ভাল। আমার জীবনে কাজ নেই। চাইছি কিন্তু পাচ্ছি না।”

“কাজের জন্য সর্বত্র হাহাকার চলছে। তুমি নতুন কিছু করছ?”

অভ্র কষ্ট করে হাসল, “না।”

প্রমিতদা বলল, “একটা গুড নিউজ় আছে। আমার এক ধাপ প্রোমোশন হচ্ছে। এরিয়া ম্যানেজার হচ্ছি।”

“বা, এ তো গ্রেট নিউজ়!”

“যত উপরে ওঠা, চাপ ততই বেশি। প্রাইভেট জবের এটাই নিয়ম। তবে এখানে বোধহয় আর থাকা হবে না।”

“মানে?”

“আমাকে হুগলি রিজিয়নে পাঠাবে বোধহয়। কোম্পানির উপরমহলে বাটারিং করে চলেছি। চাইছি যেন এখানেই হয়। কিন্তু এখানে মাথার ওপরে এক জন এক্সপিরিয়েন্সড স্টাফ আছে, সে-ই হয়তো পাবে।”

অভ্রর মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল, “খবরটা চিরশ্রী বৌদি জানে?’’

“জানে। তবে ও অন্য কোথাও যেতে নারাজ। বলেছে যে, প্রোমোশনের দরকার নেই। এখানেই থেকে যেতে। এ রকম অবুঝ হওয়ার কোনও মানে হয়? বয়স হলে কোম্পানি এমনিতেই ছুড়ে ফেলে দেবে। তার আগে যতটা পারা যায় গুছিয়ে নিতে হবে। ঠিক কি না?”

অভ্র মাথা নেড়ে সায় দিল, “একদম ঠিক।”

“বারো দিনের জন্য হিমাচল ঘুরতে যাচ্ছি। এনার্জি বুস্ট আপ করে আসি। নতুন উদ্যমে নতুন পোস্টে কাজ শুরু করে দিতে হবে। মনে হচ্ছে নভেম্বরের লাস্ট উইকে বা ডিসেম্বরের শুরুতেই চুঁচুড়া চলে যেতে হবে।”

“বেস্ট অব লাক।”

“থ্যাঙ্কস।”

“তা হলে বৌদির সিন্থেসাইজ়ার শেখাও বন্ধ?”

প্রমিতদা বলল, “বন্ধ কেন হবে? চুঁচুড়াতে গিয়ে শিখবে। তোমার বন্ধুটি ওকে দারুণ শিখিয়েছে। শি মাস্ট কন্টিনিউ।”

“হ্যাঁ, মল্লার খুব মন দিয়ে শেখায়।”

“আসছি। বাস এসে পড়েছে।”

ফলমূল কিনে বাইক স্টার্ট করে নিজের মনে হাসল অভ্র। মল্লার ঘোষ এখনও দুঃসংবাদটা হয়তো জানে না। এক দিক দিয়ে শাপে বর হল বলা চলে। সম্পর্কটা এগোবে না, দৃষ্টির বাইরে চলে গেলে টান কমে যাবে, তেমন অপ্রিয় পরিস্থিতি তৈরি হবে না। প্রমিতদা সাদা মনে তার বৌকে সিন্থেসাইজ়ার শেখানোয় উৎসাহ দিয়েছে, তার বন্ধুটিই বিশ্বাসভঙ্গ করে পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে। থাকুক মল্লার আর কিছু দিন রঙিন স্বপ্ন নিয়ে, তার পর ভাঙা কাচের টুকরো ছাড়া ওর হাতে কিছুই থাকবে না। চিরশ্রী কি মল্লারকে সামান্য ইঙ্গিতটুকুও দেয়নি?

নারী-পুরুষের সম্পর্কের জটিল রসায়ন সে কিছুই বোঝে না। বয়স বেড়েই গেল শুধু, এখনও কত কিছু যে বোঝা হল না!

ক্রমশ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement