ছবি: কুনাল বর্মণ।
পূর্বানুবৃত্তি: কনকবালার পাকাদেখা উপলক্ষে আসা পাত্রপক্ষের সঙ্গে শশিকান্তর আলাপ করিয়ে দেন রমানাথ। কনকবালার হবু শ্বশুর শশিকান্তর হাতের লেখা দেখতে চান। শশিকান্ত দু’লাইন লিখে দেখালে তিনি মুগ্ধ হয়ে প্রশংসা করেন এবং শশিকান্তকে একটি সোনার নিবওয়ালা কলম উপহার দেন। তিনি বলেন, সাহেবদের কাছে সুন্দর হস্তাক্ষরের খুব কদর। শশিকান্ত চাইলে তিনি সাহেবদের কাছে তার চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে পারেন। মহালয়ার ভোরে তর্পণ সেরে এসে রমানাথ দেখতে পান কনকবালার গয়নার মাপ নিতে এসেছে চারু স্যাকরা। সে কাজ শেষ হলে ভিতরবাড়ি থেকে নিভাননী খবর নিয়ে আসেন, বাবার খুব জ্বর, কমছে না। অবিনাশ কবিরাজকে ডাকা হলে তিনি এসে দেখেন, চেষ্টা করার প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু বিশেষ ভরসা দিতে পারেন না। বিচলিত রমানাথ কলকাতা থেকে ডাক্তার আনানোর জন্য উমানাথকে কলকাতা পাঠান।
বিকেলের দিকে প্রতাপ ডাক্তার এলেন। হাঁটাচলায় বয়সের ছাপ। হাতে একটা শৌখিন লাঠি। এসেই বললেন, “এত দূর আসতাম না। কিন্তু বিপ্লবীর বাপ বলে কথা। তা কোথায় রোগী?”
রমানাথ প্রতাপ ডাক্তারকে পথ দেখিয়ে বনমালীর ঘরে নিয়ে যান।
ডাক্তার একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকেন বনমালীর মুখের দিকে। দৃষ্টি মুখ থেকে পায়ের দিকে নামে। চোখ থেকে চশমা খুলে হাতে নিয়ে বলেন, “জ্বর কত এখন? জ্বর দেখা হয়েছে?”
রমানাথ ও উমানাথ হতবুদ্ধি হয়ে পরস্পরের মুখের দিকে তাকান।
প্রতাপ ডাক্তার বলেন, “বুঝেছি। থার্মোমিটার দেওয়া হয়নি।”
চামড়ার ব্যাগ থেকে থার্মোমিটার বার করে বনমালীর বগলের খাঁজে চেপে ধরেন ডাক্তার। উমানাথকে বলেন চেপে থাকতে খানিক ক্ষণ। পকেট থেকে ঘড়ি বার করে সময় দেখেন। তার পর নিজেই বার করে নেন থার্মোমিটার। বিভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পারদের ঊর্ধ্বগতি পর্যবেক্ষণ করেন। তার পর স্টেথো বুকে দিয়ে দেখেন। সব শেষে নাড়ি ধরে বসে থাকেন মিনিট খানেক।
কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। রমানাথ কিছু বলতে যাচ্ছিলেন, ইশারা করে তাকে চুপ থাকতে বলেন ডাক্তার। তার পর ব্যাগ থেকে ওষুধ বার করেন। কয়েকটি পুরিয়াতে সেই ওষুধ ঢালেন। পুরিয়ার কাগজের মোড়কগুলোর মুখ বন্ধ করে রমানাথকে বুঝিয়ে , কী ভাবে কখন সেই পুরিয়াগুলো খাওয়াতে হবে। আরও কিছু ওষুধ দিলেন। সেগুলোর সম্বন্ধেও রমানাথকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিলেন। তার পর এক সময় উঠে দাঁড়ালেন।
রমানাথ এ বার জিজ্ঞেস করলেন, “কেমন বুঝলেন, ডাক্তারবাবু?”
কোনও উত্তর না দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন প্রতাপ ডাক্তার। তার পর রমানাথের দিকে ফিরে বললেন, “যত ক্ষণ শ্বাস, তত ক্ষণ আশ। তবে কত ক্ষণ শ্বাস থাকবে, সেটাই চিন্তার। রোগীর যা অবস্থা, তাতে দু’দিন কাটে কিনা সন্দেহ।”
ধীর গতিতে সিঁড়ির দিকে এগিয়ে গেলেন ডাক্তার। রমানাথ ফিজ় দিতে গেলে, প্রতাপ ডাক্তার অদ্ভুত ভাবে রমানাথের দিকে তাকালেন। বললেন, “দেখো, এই বৃদ্ধ বয়সে আমি সাধারণত কলে যাই না। এত দূরে তো নয়ই। কেন এলাম জানো? শুধু নীলুর নাম শুনে। অনেক বিপ্লবী তো দেখলাম। অনুশীলনের নীলু অন্য রকম। তার বাপকে দেখতে এসে টাকা নেব, এমন চশমখোর আমি নই। তুমি বরং ট্যাক্সি ভাড়াটা দিয়ে দিয়ো। ভাল কথা, তোমাদের উঠোনে দেখলাম ম্যারাপ বাঁধা হচ্ছে...”
রমানাথ বললেন, ‘‘বাড়িতে দুর্গাপুজো করছি। এ বারই প্রথম।’’ প্রতাপ ডাক্তার সিঁড়ি দিয়ে নামছিলেন। মুহূর্তকাল দাঁড়িয়ে গেলেন। তার পর হেঁটে এগিয়ে গেলেন গাড়ির দিকে।
পরের দিন ভোরবেলায় চলে গেলেন বনমালী বন্দ্যোপাধ্যায়। সারা রাত্রি মাথার কাছে বসেছিলেন কন্যা নিভাননী। কপালে জলপট্টি দিয়েছেন, আর ডাক্তারের নির্দেশ মতো ওষুধ খাইয়ে গেছেন। ভোরের দিকে চোখটা একটু লেগে গিয়েছিল। কে যেন ধাক্কা দিয়ে জাগিয়ে দিল। বাবার দিকে চাইতেই, অন্য রকম মনে হল তার। নীলুর বৌ বিভাবতীকে ডাকলেন। তিনিও সারা রাত জেগে নিভাননীর সঙ্গে শ্বশুরের সেবা করেছেন। বিভাবতী ঝুঁকে পড়েন শ্বশুরের মুখের উপর। নাকের কাছে হাত নিয়ে দেখেন, শ্বাস পড়ছে কি না।
“মনে হচ্ছে, উনি আর নেই। এক বার ঠাকুরপোদের ডাকতে হবে,” বলে উঠে পড়েন বিভাবতী। নিভাননী একদৃষ্টে চেয়ে থাকেন বাবার দিকে। মাথার উপর থেকে একটা ছাদ সরে গেল মনে হয়। চোখের জল আটকাতে না পেরে অঝোর কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
অবিনাশ কবিরাজ নাড়ির স্পন্দন না পেয়ে বলেন, “আমি তো আগেই বলেছিলাম। কেন যে শুধু শুধু কলকাতা থেকে ডাক্তার ডাকতে গেল এরা। কী জানে ওরা?”
রমানাথের কানে গেল কথাটা। তিনি কোনও উত্তর না দিয়ে চুপ করে একটা চেয়ারে বসে রইলেন। তাঁর কথা বলার শক্তি যেন এক নিমেষে চলে গেছে।
উমানাথ এগিয়ে গেল কবিরাজের কাছে। বলল, “প্রাণ কি আছে?”
“না, নেই। বেশ খানিক ক্ষণ আগেই চলে গেছেন। চাইলে অন্য ডাক্তার এনে দেখিয়ে নিতে পারো,” বলে উঠে পড়লেন অবিনাশ কবিরাজ।
ঘণ্টাখানেকের মধ্যে গ্রামের লোকে ভরে গেল বাঁড়ুজ্জেবাড়ি। সকলের মুখেই বনমালীর প্রশস্তি— কত ভাল লোক ছিলেন! কেউ কেউ রমানাথের প্রশংসাতেও পঞ্চমুখ— চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেনি রমানাথ। কলকেতা থেকে বড় ডাক্তার এনে দেখিয়েছে, কিন্তু কী করা যাবে, আয়ু যার যে পর্যন্ত। দুর্গাপুজো হওয়া নিয়েও অনেকের মনে সংশয়— তা হলে কি বাঁড়ুজ্জেদের দুর্গাপুজো শুরু হবে না? রমানাথ উমানাথের মনের অবস্থা যা, তাতে ওদের জিজ্ঞেস করা যায় না। তাই নিজেরাই আলোচনা চালিয়ে গেল। উমানাথের বন্ধুরা সবাই খবর পেয়ে চলে এসেছে। তাদের আক্ষেপ, বুড়ো মরার সময় পেল না! দুর্গাপুজোর ঠিক দু’দিন আগেই মরতে হয়! কত আমোদ-ফুর্তি হত বাঁড়ুজ্জেদের পুজোয়। ও দিকে, বৃদ্ধ হরিপদ মুখুজ্জে তত ক্ষণে একটা আলোচনাসভা বসিয়ে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, সবার সব সহ্য হয় না। দুর্গাপুজো করব বললেই হল না। দেখতে হবে, মা সেই পুজো গ্রহণ করবেন কি না।
ভিড়ের মধ্যে কে এক জন বলে উঠল, “এটা তো অঘটন। রমানাথ জানবেই বা কী করে? তা ছাড়া রমানাথ তো এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। বাঁড়ুজ্জেরা পুজো চালাতেও পারে।”
সবাই হইহই করে উঠল এ কথায়। এক বাক্যে সবাই বলল, “অশৌচ গায়ে দুর্গাপুজো! বেশ ভাল কথা শোনালে ভায়া।”
এই রকম আলোচনা চলতেই থাকল। ছেলে-ছোকরার দল যে যার বাড়ি থেকে গামছা নিয়ে এসে কোমরে বেঁধে নিল। এই কাজে তাদের উৎসাহই বেশি। উমানাথ তাদের নির্দেশ দিচ্ছে, কী কী করতে হবে। উমানাথের নির্দেশ মতো হরিসঙ্কীর্তনের দলও চলে এল। আশপাশের আত্মীয়-স্বজনের শেষ দেখা হয়ে গেলে, শ্মশানযাত্রা শুরু হল।
যারা শ্মশানযাত্রায় গেল না, তারা হাত তুলে নমস্কার জানাল মৃত বনমালী বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
এড়েদা শ্মশান। বেলঘরে যাঁদের মৃত্যু হয়, তাঁদের দাহকার্য হয় এখানে। ফাঁকা জায়গা। আশপাশে বাড়ির সংখ্যা খুব কম। শ্মশানঘাট লাগোয়া প্রবাহিত গঙ্গা। সেই গঙ্গার ঘাটে এখন দাঁড়িয়ে রমানাথ। আর একটু পরেই বাবার মুখাগ্নি করতে হবে। তারা দুই ভাই মুখাগ্নি করবে।
রমানাথের হঠাৎ মনে হল, বড়দা জানতেও পারলেন না যে, তিনি পিতৃহারা হয়েছেন।
হঠাৎ উমানাথের কণ্ঠস্বরে সংবিৎ ফিরল রমানাথের। বললেন, “কী হয়েছে?”
“বড়দা এসেছেন,” উমানাথ বলল।
বলতে বলতেই, রমানাথের পাশে এসে দাঁড়ালেন নীলমণি। বড় চুল ও গালভর্তি দাড়ির আড়ালে নীলমণিকে দেখলে কে বলবে যে, তিনিই নীলমণি বন্দ্যোপাধ্যায়। বড়দাকে দেখে রমানাথের চোখে জল এসে গেল।
নীলমণি বললেন, “এটা আবেগের সময় নয়, রমা। তোমার উপর অনেক দায়িত্ব। আমি তোমাকে ভরসা করি। আমি যে কোনও দিন অ্যারেস্ট হতে পারি। এমনকি আজও। তবু খবর পৌঁছনোমাত্র দেরি করিনি। দেখে গেলাম বাবাকে শেষ বারের মতো। এ বার চলি।”
নীলমণি অগ্রসর হন ফেরিঘাটের দিকে। পার হয়ে ও পারে গিয়ে, চন্দননগরের ট্রেন ধরলেই
পগার পার।
ফেরিঘাটের সিঁড়িতে নামতেই, একটি লোক এগিয়ে এল। বয়স আন্দাজ চল্লিশ-একচল্লিশ। বলল, “আরে নীলমণিবাবু যে!”
নীলমণি তৎক্ষণাৎ উত্তর দিলেন, “আপনি ভুল করছেন। আমি দাশুরথি বসাক।”
পান খাওয়া দাঁতে হাসল লোকটা। বলল, “কুলীন বামুন থেকে তাঁতি! যাক, আজ আর বেশি কথা বলব না। শোকের দিন। কথাবার্তা সব পরে হবে। এখন চলুন।”
নীলমণি পকেটে হাত ঢুকিয়েই বুঝলেন, এখানে পিস্তল বার করা অর্থহীন। কারণ তত ক্ষণে চার পাশে সাদা পোশাকের অনেক পুলিশ চলে এসেছে।
লোকটা তাদের উদ্দেশে বলল, “অ্যারেস্ট হিম। উই গট দ্য রাইট নিউজ়।”
মুহূর্তে খবরটা ছড়িয়ে পড়ল। রমানাথের কানেও গেল। রমানাথ দৌড়ে এলেন, যদি পুলিশ অফিসারকে বলে কিছু করা যায়। অন্তত আজকের দিনের জন্য। রমানাথ এসে দেখলেন, পুলিশের গাড়ি ধোঁয়া ছড়িয়ে এগিয়ে চলেছে। রমানাথ সে দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে রইলেন।
১৭
আজ তিন দিন হল তিলজলার এই আশ্রয়ে এসেছেন অমরেন্দ্রনাথ। দক্ষিণ কলকাতার এই অঞ্চলটিতে বেশির ভাগই মুসলমান সম্প্রদায়ের বাস। অধিকাংশই দরিদ্র পরিবার। বস্তিতে বাস। হিন্দুদের অবস্থা অপেক্ষাকৃত ভাল। চোখ ধাঁধানো না হলেও, তাদের বাড়িগুলো তাদের সম্পন্ন অবস্থার পরিচয় দেয়। কয়েক ঘর মুসলমান পরিবারও বিত্তশালী। বস্তিবাসীদের সঙ্গে তাদের হৃদ্যতা নেই, বরং আছে হিন্দুদের সঙ্গে। অমরেন্দ্রনাথ ঘরে বসেই এই সব খবর পান। বাইরে যাওয়ার তাঁর সুযোগ নেই।
ঘরের দু’টি জানালার একটি সব সময় বন্ধ থাকে। পশ্চিম দিকের জানালাটা মাঝে মধ্যে খোলা হয়। সেই জানালা দিয়ে অনেক দূর দেখা যায়। জানালার বাইরে একটা বকুল গাছের মাথায় বিদায়ী সূর্যের নরম আলো আটকে আছে। অমরেন্দ্রনাথ সেই দিকে তাকিয়ে আছেন অনেক ক্ষণ। কল্পনায় যেন দেখতে পাচ্ছেন বুড়িবালামের তীর ভেসে যাচ্ছে এক সাহসী যুবকের রক্তে। জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে যতীন প্রমাণ করে গেল, কতটা ভালবাসত সে এই দেশকে। হয়তো তাকেও প্রমাণ করতে হবে এক দিন। কত দিন আর এই ভাবে লুকিয়ে থাকা যাবে।
যতীন আর চিত্তপ্রিয়র জন্য অনুশোচনা হয় তাঁর। সব সময় মনে হয়েছিল সমস্ত পরিকল্পনার মধ্যে কোথাও যেন একটা ফাঁক থেকে যাচ্ছে। পুলিশের কাছে খবর ঠিকই পৌঁছবে। আর সেটা দেবে নিজেদের মধ্যেই কেউ এক জন। তা ছাড়া, তাঁর এটাও মনে হয়েছিল ব্যাঙ্ক থেকে ড্রাফ্ট ভাঙানোর কাজটা খুবই বিপজ্জনক। পুলিশের নজরে আসবেই। আর হলও তাই। যদিও পুলিশ যাতে না জানতে পারে, তার জন্য চেষ্টা কম করেননি তিনি। দু’জন ব্যাঙ্কের লোককে কাজে লাগিয়েছিলেন। তারা ধরা পড়তেই পুলিশের কাছে সবটা জলের মতো পরিষ্কার হয়ে যায়। কিন্তু এ ছাড়া উপায় তো আর কিছু ছিল না। অস্ত্রের যেমন দরকার, টাকারও তো দরকার। মে মাসে গার্ডেনরিচ আর বেলেঘাটায় দুটো ডাকাতি থেকে এসেছে বিয়াল্লিশ হাজার টাকা। কিন্তু এত বড় কর্মযজ্ঞে এই টাকা তো সামান্য। কিছু একটা করতেই হত। শ্রমজীবী সমবায়ে রেড হয়েছে। তছনছ করে দিয়েছে সব কিছু। এত দিনের পরিশ্রম শেষ হয়ে গেল, ভাবেন অমরেন্দ্রনাথ।
“কবিতা-টবিতা লিখছেন নাকি, অমরদা?” ভূপেন্দ্রকুমারের কণ্ঠস্বরে চমক ভাঙল অমরেন্দ্রনাথের। খেয়াল করেননি, কখন নিঃশব্দে ঘরের এসেছেন তিনি।
অমরেন্দ্রনাথ বললেন, “এই অবস্থায় কবিতা! পাগল হয়েছিস! আসলে, ভাবছিলাম হাবিজাবি। কত কিছু ঘটে গেল এই কয়েক মাসের মধ্যে!”
“কত কিছু এখনও যে ঘটতে বাকি, অমরদা!” ভূপেন্দ্র তার গোল ফ্রেমের চশমাটা খুলে একটা সাদা রুমাল দিয়ে পরিষ্কার করতে করতে বললেন।
অমরেন্দ্রনাথের সঙ্গে খুব বেশি দিন আলাপ হয়নি ভূপেন্দ্রকুমারের। প্রথম দেখা দামোদরের বন্যায় মেদিনীপুরের কালীনগরে একটি ত্রাণ শিবিরে। যতীন্দ্রনাথ, যাদুগোপাল ও আরও অনেকের সঙ্গে অমরেন্দ্রনাথও ছিলেন ত্রাণকার্যে মুখ্য ভূমিকায়। স্বল্প আলাপেই ভূপেন্দ্র বুঝেছিলেন যে, এই মানুষটির সাংগঠনিক ক্ষমতা অসাধারণ। এঁকে দেশের প্রয়োজন। খুব প্রয়োজন।
“বল, কী বলছিলি...” অমরেন্দ্রনাথ বলেন।
“আপনাকে বিদেশ পাঠিয়ে দেব। এখানে বেড়ালছানার মতো বারবার এ-জায়গা ও-জায়গা করলেও ধরা পড়বেনই। পুলিশ চার দিকে জাল পেতে রেখেছে।”
“আমাদের নিজেদের মধ্যেই পুলিশের চর আছে। এ কথাটা আমার জার্মান পরিকল্পনার আগেও মনে হয়েছিল, আজও মনে হচ্ছে।”
ক্রমশ