ছবি কুনাল বর্মণ।
পূর্বানুবৃত্তি: মতিশীলের বাগানে খেয়ে বেরনোর পর বাড়ির পুরনো ভৃত্য রঘুর হাতে ধরা পড়ে যায় শশিকান্ত। সে তার কাকাকে কিছু বলতে বারণ করে। বাড়ি ফেরার পর উমানাথ তার সঙ্গে বেশ আন্তরিক ব্যবহার করে। পাটের কারবারে যোগ না দিয়ে মন দিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে বলে। তার লেখাপড়ার সব খরচ জোগানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। কাঙালিদের সঙ্গে বসে খাওয়ার কথা জানতে পেরে শশিকান্তর পিসি নিভাননী এবং জেঠাইমা বিভাবতী খুবই কষ্ট পেলেন। উমানাথের প্রতি বিরক্তও হলেন যথেষ্ট। কিন্তু সব মিলিয়ে অস্বস্তি গেল না শশিকান্তর। সে ঠিক করে, পড়াশোনা আর নয়। সে চাকরি করবে। দিদির শ্বশুরমশাই তাকে একটি ঠিকানা দিয়ে যোগায়োগ করতে বলেছিলেন। সে সেখানেই যাবে। অন্য দিকে বিপ্লবী অমরেন্দ্রনাথ রাজনৈতিক কার্যকলাপের পাশাপাশি শুরু করেছেন জল-চিকিৎসা। তাঞ্জোরে সন্ন্যাসী থাকাকালীন এক জার্মান চিকিৎসকের কাছ থেকে এই প্রক্রিয়াটি শিখেছিলেন তিনি।
তত ক্ষণে বাড়িতে কান্নার রোল উঠেছে। অমরেন্দ্রনাথ মনে মনে বললেন, ‘আমি হারব না। আমি শেষ দেখে ছাড়ব।’
বড়বাজার থেকে খুঁজে খুঁজে নিয়ে এলেন একটা আয়তাকার গামলা। পুজোর দালানে সেই গামলা রেখে তাতে জল ঢেলে নিজের হাতে শুইয়ে দিয়েছিলেন ছেলেকে। বাড়ির কেউই, এমনকি পড়শিরাও মেনে নেননি অমরেন্দ্রনাথের এই পাগলামি। বয়োজ্যেষ্ঠরা তাঁকে ভর্ৎসনা করলেন। যাঁরা তা করতে পারলেন না, তাঁরা মনে মনে তাঁকে ধিক্কার জানালেন। অমরেন্দ্রনাথ ভ্রুক্ষেপ করেননি। তাঁর কাছে এটা পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় তিনি যদি পাশ করতে পারেন, তা হলে অনেক মানুষের জীবন বাঁচাতে তিনি সক্ষম হবেন।
প্রায় পনেরো মিনিট হল ছেলেকে শুইয়ে রেখেছিলেন জলের মধ্যে। মাঝে মাঝে গামলা থেকে জল নিয়ে সেই জল ছেলের মাথায় ঢেলেছেন আর বিড়বিড় করে নিজের সঙ্গে কথা বলেছেন। এক সময় পকেট থেকে ঘড়ি বার করে অমরেন্দ্রনাথ দেখলেন, ঠিক কুড়ি মিনিট হয়েছে। সামনে দাঁড়ানো একটি অল্পবয়সি ছেলেকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “যাও তো ভাই, একটা গামছা বা তোয়ালে নিয়ে এসো তো।”
ছেলেটি দৌড়েছিল ঘরের ভিতর, মুহূর্তের মধ্যে একটি তোয়ালে নিয়ে এসে অমরেন্দ্রনাথের হাতে দিল। অমরেন্দ্রনাথ ছেলেকে জল-ভর্তি গামলা থেকে তুলে ঘরে নিয়ে এলেন। ভাল করে গা, হাত-পা, মাথা মুছিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিয়েছিলেন। ছেলের মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে জানতে চেয়েছিলেন, ‘‘কেমন বোধ করছ বাবা?”
ধীরে ধীরে চোখ মেলে ছেলে বলেছিল, “ভাল...”
অমরেন্দ্রনাথ থার্মোমিটার বগলে দিয়ে দেখলেন, জ্বর নেই। জ্বর নেমে গেছে। অমরেন্দ্রনাথের চোখে জল এল। আনন্দের অশ্রু।
মুহূর্তে খবরটা ছড়িয়ে পড়ে চার দিকে। ঘরে ঘরে জ্বর। ডাক্তার-বদ্যিরা নাজেহাল হয়ে যাচ্ছে। মৃত্যুও ঘটেছে বেশ কিছু। এমন সময়ে অমরেন্দ্রনাথের এই জল-চিকিৎসার সাফল্য বেশ সাড়া ফেলে দিল। অনেকেই আসতে শুরু করল রোগীকে নিয়ে অমরেন্দ্রনাথের বাড়িতে। অমরেন্দ্রনাথ পড়লেন বিপদে। তিনি রোগীকে ফেরাতেও পারেন না। আবার বাড়ির অন্যান্য লোকের আপত্তিতে সাগ্রহে গ্রহণ করতেও পারেন না। দু’-চার দিন বাড়ির পুজোর দালানে জল-চিকিৎসা চালিয়ে বন্ধ করে দিলেন সব। অনেকেই প্রশ্ন করে এ ব্যাপারে। কিন্তু কোনও সদুত্তর দিতে পারেন না অমরেন্দ্রনাথ। কাউকে বলতে পারেন না যে, বাড়ির লোকের তীব্র আপত্তিতে তাকে বন্ধ করতে হয়েছে জল-চিকিৎসা।
এক দিন এক ভদ্রলোক এসে চেপে ধরলেন অমরেন্দ্রনাথকে। নাম গোপালচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। বয়সে অমরেন্দ্রনাথের চেয়ে একটু বড় হওয়ায়, অমরেন্দ্রনাথকে তিনি নাম ধরেই ডাকেন। বললেন, “কী ব্যাপার অমর, তুমি তোমার চিকিৎসা হঠাৎ বন্ধ করে দিলে? তুমি তো তেমন মানুষ নও হে! তোমার জল-থেরাপিতে এলাকার লোকের যখন আস্থা বাড়ছে, তখনই বন্ধ করে দিলে! আজ আমার পাশের বাড়ির একটি অল্পবয়সি ছেলে মারা গেল। কে বলতে পারে যে, ছেলেটি তোমার জল-চিকিৎসায় সেরে উঠত না!”
অমরেন্দ্রনাথ চুপ করে শুনছিলেন ভদ্রলোকের কথা। শেষ কথাটিতে চমকে উঠে ভদ্রলোকের দিকে তাকালেন। বললেন, “আপনাকেই বলছি গোপালদা, আপনি যেন কাউকে বলতে যাবেন না।”
“আমার উপর আস্থা রাখতে পারো, আমি কাউকে কিছু বলব না...” ভদ্রলোক বললেন।
অমরেন্দ্রনাথ খানিক ক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন, “রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায়, বাড়ির অনেকে আপত্তি জানাতে শুরু করল। বোঝেন তো সব, শরিকি বাড়ি। কেউ যদি বলে বাড়িতে শুধু রোগী নয়, রোগও ঢুকছে, আমি কী করি? তাই বন্ধ করে দিলাম সব। এমনিতে বাড়ির সবাই আমাকে সম্মান করে। কিন্তু সত্যিই যদি রোগের সংক্রমণে কারও কোনও ক্ষতি হয়, তখন কি আমি সকলের চোখে দোষী হয়ে যাব না?”
ভদ্রলোক হাসলেন। বললেন, “শুধু এই কারণে তুমি তোমার জল-চিকিৎসা বন্ধ করে দেবে? না, তা হয় না। যদি বুঝতাম, তোমার এই থেরাপিতে লোক মরছে, তা হলে অন্য কথা। কিন্তু যে পদ্ধতিতে লোকের উপকার হচ্ছে, তা তুমি বন্ধ করবে কেন? বেশ, যদি তোমার বাড়িতে অসুবিধে হয়, আমার বাড়িতে করো। আমার ব্যানার্জিপাড়ার বাড়িটা তো ফাঁকাই পড়ে আছে। তুমি সেখানে শুরু করে দাও তোমার চিকিৎসা। কিছু মানুষের তো উপকার হবে।”
অমরেন্দ্রনাথের মুখ আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে উঠল। ভদ্রলোকের হাত দুটো ধরে বলে উঠলেন, “আপনি আমাকে বাঁচালেন গোপালদা। জল-থেরাপি বন্ধ করে আমি খুব কষ্ট পাচ্ছিলাম। এখন আপনার বাড়িতে আবার পূর্ণোদ্যমে এই কাজে হাত দিতে পারব।”
“সেই জন্যই তো এলাম তোমার কাছে। আমার কেমন যেন সন্দেহ হয়েছিল। তোমাকে তো আজ দেখছি না হে। তোমার মধ্যে যে উদ্যমী মানুষটা আছে, সে তো হঠাৎ কোনও কিছু বন্ধ করতে পারে না,” উঠতে উঠতে বললেন ভদ্রলোক।
অমরেন্দ্রনাথ ভদ্রলোককে দরজা অবধি এগিয়ে দিতে দিতে বললেন, “আপনার বাড়িটি তো দোতলা? ঘরের সংখ্যাও উপর-নীচ মিলিয়ে আট-দশেক হবে, তাই তো?”
“হ্যাঁ, তা তো হবেই।” ভদ্রলোক উত্তর দিলেন।
“আপনার যদি আপত্তি না থাকে, আমি ওই বাড়িতে একটি বিদ্যালয় স্থাপন করতে পারি। ইতিহাস, ভূগোল, অঙ্কের ক্লাসের পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষাও চালু করে দেব সেখানে,” অমরেন্দ্রনাথ একটু ইতস্তত করে বললেন।
ভদ্রলোক বাড়ির বাইরে পা দিয়েও থমকে দাঁড়ালেন। দু’হাতে অমরেন্দ্রনাথকে জড়িয়ে ধরে বললেন, “শুরু করে দাও। স্কুল এবং চিকিৎসা একই সঙ্গে চলুক। ওই বাড়িটিকে তুমি যেমন খুশি, তেমন করে ব্যবহার করো। মানুষের প্রয়োজনে লাগুক আমার বাড়ি, এই আমার ইচ্ছে।”
বেশ খানিক ক্ষণ হল গোপালবাবু চলে গেছেন। অমরেন্দ্রনাথের মনে একটা ফুরফুরে ভাব। তিনি কল্পনাই করতে পারেননি, এ ভাবে মেঘ না চাইতেই জল পেয়ে যাবেন। তাঁর অনেক দিনের সাধ পূরণ হতে চলেছে। দেশ এক দিন স্বাধীন হবেই। কিন্তু সেই স্বাধীন দেশের মানুষ যদি অশিক্ষিত থেকে যায়, তার চেয়ে বড় বিড়ম্বনা আর কিছু হতে পারে না। তাই আগে দেশের মানুষকে শিক্ষিত করা প্রয়োজন।
অমরেন্দ্রনাথ হাত বাড়িয়ে একটি ডায়েরি টেনে নিলেন। এটি তাঁর অজ্ঞাতবাসের সাক্ষী এবং দলিলও বটে। ডায়েরির পাতায় লিখতে শুরু করলেন গোপালবাবুর কথা। তাঁর মহানুভবতার কথা যদি না লিখে যান, তা হলে উত্তরপাড়াবাসী মানুষের কাছে তিনি অপরিচিত থেকে যাবেন। কে বলতে পারে, এই বিদ্যালয় এক দিন মহীরুহ হয়ে উঠবে না?
ডায়েরির পাতায় লিখতে লিখতে এক অদ্ভুত রোমাঞ্চ হয় তাঁর। এখন তিনি জল-চিকিৎসার কথা ততটা ভাবছেন না, যতটা ভাবছেন বিদ্যালয়ের কথা। কী ভাবে শুরু করবেন তার এই স্বপ্নের কাজ? ছাত্র আসবে তো? সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনও বিপ্লবীদের সম্পর্কে একটা ভয়ের মনোভাব কাজ করে... তবু, দেখা যাক।
ডায়েরির পাতা বন্ধ করে চেয়ার থেকে উঠলেন। বাইরে খুটখাট আওয়াজ হচ্ছে। আর কয়েক দিন পরেই দুর্গাপুজো। ঠাকুরদালানে মায়ের মূর্তি গড়ার কাজ চলছে। শেষ মুহূর্তের কাজ। তাই কুমোর এ বাড়িতে থেকেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। অমরেন্দ্রনাথ পুজোর দালানের দিকে পা বাড়ালেন।
পরের দিন থেকেই শুরু হয়ে গেল কাজ। কাজের মানুষ অমরেন্দ্রনাথ। কাজ পেলে বসে থাকতে পারেন না।
গোপালবাবুর সঙ্গে ঘুরে ঘুরে তাঁর দোতলা বাড়িটি দেখলেন অমরেন্দ্রনাথ। উপর-নীচ মিলে বেশ কয়েকটা ঘর আছে। অমরেন্দ্রনাথ গোপালবাবুর সঙ্গে পরামর্শ করে ঠিক করলেন, কোন ঘরে তিনি কোন ক্লাসের বন্দোবস্ত করবেন। বাড়ির পিছন দিকে খানিকটা জায়গা ঘিরে জল-চিকিৎসা চালাবেন বলে ঠিক করলেন। গোপালবাবুর সম্মতির জন্য, তাকে জিজ্ঞেস করলে, তিনি বললেন, “তোমার উপর বাড়ি ছেড়ে দিয়েছি, তোমার ইচ্ছেতেই সব হবে। আমাকে এত জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন নেই তোমার।”
অমরেন্দ্রনাথ হাসলেন। মনে মনে তিনি পরিকল্পনা করলেন, এই বাড়িটিকে তিনি আরও একটি কাজে ব্যবহার করবেন।
পিসিমা পুলিশের হাতে ধরা পড়ায় রিষড়ার আশ্রয় বন্ধ হয়ে গেছে বিপ্লবীদের। চন্দননগরেও পুলিশের নজর আছে। এখন এখানে দু’-এক জনের জন্য আশ্রয়ের ব্যবস্থা করলে মন্দ হয় না। কথাটা গোপালবাবুকে বলতে গিয়েও বলতে পারলেন না অমরেন্দ্রনাথ। বিপ্লবের সঙ্গে সংস্রবহীন কোনও মানুষকে এ কথা বলা বৃথা। বিপ্লবীদের একটি নিরাপদ আশ্রয়ের যে কতখানি প্রয়োজন, তা তাঁর চেয়ে ভাল আর কে জানেন।
পিসিমার কথা মনে পড়ল অমরেন্দ্রনাথের। কী অসীম স্নেহে তিনি বিপ্লবীদের আগলে রাখতেন তাঁর রিষড়ার বাড়িতে, তা তিনিই জানেন। তিনি যখন গুয়াহাটিতে আত্মগোপন করে আছেন, তখন খবর পেলেন, পিসিমা ধরা পড়েছেন এবং পুলিশ তাঁর উপর নির্মম অত্যাচার করছে। পুলিশ অত্যাচার করবে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু তাঁর চিন্তা হয়েছিল অন্য জায়গায়। পিসিমা ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিপ্লবীদের রিষড়ার আশ্রয়টিও চলে গেল!
অমরেন্দ্রনাথকে চিন্তান্বিত দেখে গোপালবাবু প্রশ্ন করলেন, “কিছু ভাবছ মনে হচ্ছে অমর?”
“না, তেমন কিছু নয়। আচ্ছা গোপালবাবু, আপনার ছাদের ঘরে কী আছে?” বললেন অমরেন্দ্রনাথ।
এক টিপ নস্যি নাকে দিয়ে, রুমাল দিয়ে নাক মুছে গোপালবাবু বললেন, “তুমি চিলেকোঠার কথা বলছ তো? কিছুই নেই সেখানে, কয়েকটা পুরনো আসবাব পড়ে আছে।”
অমরেন্দ্রনাথ আশ্বস্ত হলেন। গোপালবাবুকে বললেন, “আসলে, রোগীদের মধ্যে যারা মুর্মূষু, তাদের কোনও একটি ঘরে রাখার কথা ভাবছিলাম। আমার মনে হয়, ওই ঘরটি হবে উপযুক্ত।”
“ইস্কুলের সঙ্গে হাসপাতালও চালাবে বলছ?” হাসতে হাসতে বললেন ভদ্রলোক।
“ওই এক রকম। দেখা যাক...” বললেন অমরেন্দ্রনাথ।
বেলা হয়েছিল। অমরেন্দ্রনাথের হাতে বাড়ির চাবি দিয়ে ভদ্রলোক বললেন, “আমি আজ উঠি অমর। আমাকে আবার মিছরিবাবু ডেকেছেন। দেখা করে আসি। তোমার সঙ্গে আলাপ আছে তো তাঁর?”
“বিলক্ষণ!” উত্তর দিলেন অমরেন্দ্রনাথ, “প্যারীমোহন মুখুজ্যের ছেলে মিছরিবাবুর কথা বলছেন তো? তাঁকে আমার কথা বলবেন এক বার। এই বিদ্যালয়ের পরিকল্পনার কথাও তুলবেন একটু। তাঁকে আমারও প্রয়োজন। পুজো কাটলে এক বার যাওয়া যাবে’খন।”
গোপালবাবু বিদায় নিলে, অমরেন্দ্রনাথ ফের বাড়ির ভিতরে ঢুকলেন। ছাদের সিঁড়ি দিয়ে উঠে চিলেকোঠার ঘরের সামনে এলেন। ভেজানো দরজা একটু ঠেলতেই খুলে গেল। অমরেন্দ্রনাথ ঘরে ঢুকলেন। একটা ভ্যাপসা গন্ধ নাকে এল। ঘরের জানালাগুলো খুলে দিলেন তিনি। ঘরে আলো ঢুকল। সেই আলোয় দেখলেন, কয়েকটি ভাঙা চেয়ার রাখা আছে ঘরের এক কোণে। গায়ে পুরু ধুলোর আস্তরণ। অমরেন্দ্রনাথ মনে মনে বললেন, আত্মগোপন করে থাকার এমন আদর্শ জায়গা আর হয় না। জানালা, দরজা বন্ধ করে নিশ্চিন্ত মনে অমরেন্দ্রনাথ বাড়ির পথে
পা বাড়ালেন।
৩৪
একষট্টি বছরে পদার্পণ করলেন রবীন্দ্রনাথ। বয়সের ছাপ তাঁর শরীরে পড়লেও, মনের উপর পড়েনি। এখনও টানা অনেক ক্ষণ লিখে যেতে পারেন। প্রয়োজনে রাত্রি জাগরণও তাঁকে খুব একটা কষ্ট দেয় না।
ক্রমশ