Bengali Serial Novel

খরস্রোত

এক বছর একটা অঘটন ঘটায় দুর্গাপুজো শুরুই হবে না— এটা সে ভাবতে পারেনি। বাবাকে এই নিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করার সাহস তার নেই। উমানাথ এই ব্যাপারে দাদার সঙ্গে একমত।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪ ০৯:৩২
Share:

ছবি: কুনাল বর্মণ

পূর্বানুবৃত্তি: অমরেন্দ্রনাথের সঙ্গে কথাবার্তা শেষ করে ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন ভূপেন্দ্রকুমার। অমরেন্দ্রনাথকে সেই খবর পৌঁছে দেয় উমাশঙ্কর আর মন্মথ। যে রামগোপাল অমরেন্দ্রনাথের জন্য ঘরের সন্ধান দেওয়ার কথা বলেছিল, সম্ভবত সেই আছে ভূপেন্দ্রকুমারের ধরা পড়ার নেপথ্যে। এই পরিস্থিতিতে চন্দননগরে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন অমরেন্দ্রনাথ। পরের দিন পাদরির ছদ্মবেশে রওনা হন তিনি, সঙ্গে আর্দালির বেশে থাকে মন্মথ। একই গন্তব্যের উদ্দেশে আলাদা ভাবে রওনা হয় উমাশঙ্করও। রাস্তায় ঘোড়ার গাড়ির চাকা ভেঙে গেলে ছদ্মবেশী অমরেন্দ্রনাথকে চিনতে না পেরে তাঁকে হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত গাড়ির ব্যবস্থা করে দেন রাস্তায় কর্তব্যরত পুলিশ সার্জেন্ট।

Advertisement

বাড়িতে টিন টিন তেল, ঘি, মশলাপাতি, চাল, ডাল ও অন্যান্য জিনিসপত্র বামুন ঠাকুরের ফর্দ অনুযায়ী আনা-ও হয়ে গেছিল। শুধু মণ্ডলপাড়া থেকে প্রতিমা আনাই বাকি ছিল। মাসখানেক আগে রমানাথ উমানাথকে নিয়ে গিয়ে এক দিন ঠাকুর পছন্দ করে বায়নাও করে এসেছিল পালদের কাছে। এ তল্লাটে এই পালরাই ভাল প্রতিমা গড়ে। রমানাথের ইচ্ছে ছিল পরের বছর থেকে বাড়িতেই দুর্গাপ্রতিমা তৈরি করাবেন। একটা মৃত্যুই সব ওলট-পালট করে দিল। তাঁর কাছে মা দুর্গা এখন পিতৃহন্তা দেবী। সেই দেবীর পুজো কখনও শুরুই হবে না এ বাড়িতে— ঘোষণা করে দিয়েছেন রমানাথ। অনেকেই মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছে। সবচেয়ে মন খারাপ শশিকান্তর। বাবার এই সিদ্ধান্তে সে মোটেই খুশি হয়নি। এক বছর একটা অঘটন ঘটায় দুর্গাপুজো শুরুই হবে না— এটা সে ভাবতে পারেনি। বাবাকে এই নিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করার সাহস তার নেই। উমানাথ এই ব্যাপারে দাদার সঙ্গে একমত। রমানাথকে বলেছেও সে কথা। বাধা যখন পড়েছে, থাক পুজো। আবার কী ক্ষতি হয়!

রমানাথের সিদ্ধান্তে সবচেয়ে খুশি বৃদ্ধ হরিপদ মুখোপাধ্যায়। রমানাথের পিঠ চাপড়ে বলেছেন বৃদ্ধ, “এ বার তুমি ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছ রমানাথ। এই যে বাঁড়ুজ্যেবাড়িতে দুর্গাপুজো আর হবে না বলে ঘোষণা করেছ, এতে আমি বলব তোমার সুমতি হয়েছে। দুগ্গাপুজো করা চাড্ডিখানি ব্যাপার নয় বাবা। মা না চাইলে কিছু হয় না। আগেই তোমাদের কুলপুরোহিত গণেশ ভটচাজের সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল।”

Advertisement

রমানাথ বলেছেন, “জেঠামশাই, বাবার মৃত্যুটা একটা অঘটন। আমরা কেউই এর জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। এমন দুর্ঘটনা আপনার বাড়িতেও হতে পারত। হয়নি, সেটা ভাগ্যের। যাক, বাবা নেই বলে এ বাড়িতে আসা বন্ধ করবেন না যেন। আপনাদের তাসের আড্ডাটা যেমন চলছে চলুক।”

“বিলক্ষণ, বিলক্ষণ! তবে কী জানো, এখানে এলেই বড্ড বনমালীর কথা মনে পড়ে যায়। বড় ভাল মানুষ ছিল সে,” বলে কাপড়ের খুঁট দিয়ে চোখের জল মোছেন বৃদ্ধ।

রমানাথ বাইরের পথে হাঁটা দেন।

ইদানীং রমানাথের গন্তব্যস্থান হয়েছে বাগবাজারের সারদা মায়ের বাড়ি। মানসিক অবসাদ থেকে মুক্তির সন্ধানেই এখানে আসা। পাটের কারবারে পার্টনার ঘনশ্যামজি এখানে প্রায়ই আসেন। তিনিই এক দিন জোর করে রমানাথকে এখানে নিয়ে এসেছিলেন। সেই থেকে রমানাথ এখানে আসে। মানসিক যন্ত্রণায় মায়ের মুখটা মনে করলেই যেন সব কষ্ট, যন্ত্রণার লাঘব হয়। রমানাথ দেখেছেন, সন্তানদের উপর কী আশ্চর্য টান মায়ের।

এক মায়ের পুজো থেকে বঞ্চিত হয়ে অন্য মা-কে পেয়েছেন রমানাথ। এই মা যেন সাক্ষাৎ জগদ্ধাত্রী। এক দিন সে কথা মা সারদাকে বলাতে তিনি তো হেসেই খুন। পাশে বসেছিলেন এক শিষ্য। নাম চন্দ্রমোহন। মা তাকে চন্দু বলেই ডাকেন। খুব স্নেহ করেন। সেই চন্দ্রমোহন সঙ্গে সঙ্গে বলে ওঠেন, “তুমি তো ঠিকই বলেছ হে। মা তো জগদ্ধাত্রীরই আর এক রূপ। আমি দেখেছি সেই রূপ! কী অনিবর্চনীয়, তোমাকে কী বলব!”

চন্দ্রমোহনের দু’চোখ বেয়ে জলের ধারা নামে। রমানাথ বিস্ময়াবিষ্ট হয়ে সে দিকে তাকিয়ে থাকেন।

এখানে আসার পর চন্দ্রমোহন সম্পর্কে ভাল-মন্দ অনেক কিছুই শুনেছেন রমানাথ। মায়ের স্নেহধন্য বলে কেউ কেউ চন্দ্রমোহনকে হিংসেও করে। কিন্তু রমানাথের বেশ লাগে ভদ্রলোককে। সরল প্রকৃতির মানুষ।

রমানাথ শুনেছেন, মায়ের বাড়িতে টুকটাক কাজের জন্য শরৎ মহারাজ চন্দ্রমোহনের জন্য প্রথমে দশ টাকা, পরে চব্বিশ টাকা মাইনে ধার্য করেছেন। এতে চন্দ্রমোহনের ভাল ভাবেই চলে যায়। রামকান্ত বসু সেকেন্ড লেনে একটা বাড়িভাড়া নিয়ে, দেশ থেকে স্ত্রী-পুত্র-কন্যাকে আনিয়ে পাকাপাকি ভাবে কলকাতার বাসিন্দা হয়ে গেছেন।

আজ মায়ের কাছে গিয়ে দেখেন, চন্দ্রমোহন মায়ের পায়ের তলায় বসে, কান্না জড়ানো কণ্ঠে কিছু বলে চলেছেন।

খানিক ক্ষণ শোনার পর রমানাথের মনে হল, চন্দ্রমোহনকে তার বাড়িওয়ালা উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছে। বাড়িওয়ালার নানা অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে, চন্দ্রমোহন মায়ের কাছে এসে তাঁর দুঃখ জানাচ্ছেন। রমানাথের এ সব বিষয়ে আগ্রহ নেই। তিনি শুধু মায়ের কাছে আসেন একটু শান্তির জন্য। কত কথা শোনেন, যেগুলো আগে কেউ কখনও বলেনি। সে দিন এক ভক্ত কথাপ্রসঙ্গে বলেন, “মা তোমার কাছে সবাই যে ভাল লোক আসেন এমন নয়। সে দিন দেখলাম, আমাদের গ্রামের ভজহরি এসেছে তোমার কাছে। তার মতো শয়তান লোক আর দু’টি হয় না।”

মা সারদা একটু হাসলেন এ কথায়। বললেন, “ওরে, আমি তো বহু বার বলেছি এ কথা যে, আমি শুধু সতের মা নই, অসতেরও মা। কোনও সন্তান যদি কাদামাটি মেখে জামাকাপড় নোংরা করে ফেলে, তা পরিষ্কার করার দায়িত্ব কি মায়ের নয়?”

চন্দ্রমোহন যখন তাঁর দুঃখের কাহিনি শোনাচ্ছিলেন, মা একটি চেয়ারে বসেছিলেন। চোখ দু’টি বন্ধ ছিল। খানিক পর চোখ খুলে রমানাথকে দেখতে পেয়ে বললেন, “বাবা রমানাথ, তুমি এক বার যাও তো চন্দুর সঙ্গে। দেখো তো গিয়ে, ওর বাড়িওয়ালা ঠিক কী চায়।”

আদেশমাত্র রমানাথ চন্দ্রমোহনকে নিয়ে বেরিয়ে যান। কয়েক পা হাঁটলেই চন্দ্রমোহনের বাসস্থান। দোতলা বাড়ি। চন্দ্রমোহন পরিবার নিয়ে নীচে থাকেন। উপরতলায় থাকেন বাড়িওয়ালা।

রমানাথকে নিয়ে চন্দ্রমোহন দোতলায় উঠে বাড়িওয়ালার সঙ্গে দেখা করেন। চন্দ্রমোহনকে দেখেই তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠেন ভদ্রলোক। বলেন, “আপনাকে তো আমি বলেই দিয়েছি অন্য বাড়ি দেখতে, তবু কেন এসেছেন আবার?”

চন্দ্রমোহন কিছু বলতে যাচ্ছিলেন। তাকে থামিয়ে রমানাথ বলেন, “দেখুন, এই যুদ্ধের বাজারে মানুষের অবস্থা এমনিতেই খারাপ। কলকাতা শহরে এমন বাড়ি ও পাবে কোথায়? অন্তত যদি কিছুটা ভাড়া বাড়িয়েও ওকে থাকতে দেন।”

বাড়িওয়ালা ভদ্রলোক রমানাথের দিকে তাকিয়ে থাকলেন খানিক ক্ষণ। তার পর বললেন, “আপনি কে মশাই, এখানে সালিশি করতে এসেছেন?”

অপমানে রমানাথের গা জ্বলে উঠল, নিজেকে সামলে বললেন, “আমি চন্দ্রমোহনের বন্ধু।”

“বন্ধুত্ব অন্য জায়গায় দেখাবেন। এখন আসুন। আমি চন্দ্রমোহনবাবুকে আগেই জানিয়ে দিয়েছি যে, তাকে বাড়ি ছেড়ে দিতে হবে,” কথাগুলো বলে বাড়ির ভিতর হাঁটা দিলেন ভদ্রলোক।

কয়েক মুহূর্ত সেখানে দাঁড়িয়ে, রমানাথ চন্দ্রমোহনকে বললেন, “চলো, যাওয়া যাক।”

চন্দ্রমোহন মুখ কাঁচুমাচু করে বললেন, “আমার জন্য আজ তোমাকে এই অপমান সইতে হল।”

রমানাথ কোনও উত্তর দিলেন না। শুধু বললেন, “চলো, মায়ের কাছে ফিরে যাই।”

সিঁড়ি দিয়ে নেমে উঠোন পেরিয়ে যাওয়ার সময় চন্দ্রমোহন বললেন, “দাদা, আমার ঘরে একটু বসবেন না?”

“না,” বেশ জোরের সঙ্গে উত্তর দিলেন রমানাথ। তার পর আস্তে আস্তে বললেন, “যে দিন তোমার নিজের বাড়ি হবে, সে দিন তোমাকে বলতে হবে না, আমি নিজেই চলে আসব।”

মায়ের কাছে এসে সব কিছু বললেন রমানাথ। আরও যোগ করলেন, “ওই বাড়িতে চন্দুর পক্ষে থাকাটাও খুব নিরাপদ নয়। বাড়িওয়ালা লোকটি খুবই বদমেজাজি। কখন যে কী করে বসে!”

“তা হলে, কী উপায়?” মায়ের কণ্ঠস্বরে উদ্বেগ।

রমানাথ একটা প্রস্তাব রাখার জন্য প্রস্তুত হলেন। রাস্তায় হেঁটে আসার সময় ভাবতে ভাবতে এসেছেন। বললেন, “মা, আমি একটা কথা বলব?”

“বলো রমানাথ,” মা সারদা উদ্গ্রীব হলেন শোনার জন্য।

রমানাথ বললেন, “ঠাকুরের আশীর্বাদে, আমার বেলঘরে জমিজমা অনেক। আপনি যদি বলেন, আমি বাড়ি করার জন্য কিছুটা জমি চন্দ্রমোহনের নামে দানপত্র করে দিতে পারি।”

“তোমার মঙ্গল হোক। ঠাকুর তোমাকে আশীর্বাদ করবেন,” কথাটি বলে মা সারদা একটু থামলেন। তার পর আবার বললেন, “কিন্তু রমানাথ, চন্দুকে আমি কাছছাড়া করতে চাই না। বেলঘর অনেক দূর হয়ে যাবে এখান থেকে। তুমি বরং এক বার শরৎকে ডেকে আনো। ওর সঙ্গে একটু আলোচনা করি।”

শরৎ মহারাজ কাছেই ছিলেন। রমানাথ ডাকতেই চলে এলেন। বললেন, “মা ডাকছেন?”

“শরৎ,” মা সারদা বললেন, “চন্দুর একটা ব্যবস্থা তোমাকে করে দিতেই হবে।”

“চন্দুর তো ভাল ব্যবস্থাই হয়েছে, মা। আপনার কাছাকাছি আছে, এখানে কাজ করে মাইনে পাচ্ছে। আবার কী করতে হবে?” শরৎ মহারাজ বললেন।

শ্রীমা একটু সময় নিয়ে বললেন, “চন্দুর বড় কষ্ট। বাড়িওয়ালার অত্যাচারে সে বেচারা অতিষ্ঠ। খোকা-খুকির খেলা পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছে বাড়িওয়ালা। একটু আগে রমানাথকে পাঠিয়ে ছিলাম, যদি কথা বলে কিছু একটা ব্যবস্থা করা যায়। তা উনি রমানাথকেও অপমান করেছেন।”

শরৎ মহারাজ চিন্তিত মুখে বললেন, “আমাকে কী করতে বলেন মা?”

“তুমি এই বাগবাজারে একটা জায়গা দেখে চন্দুর একটা মাথা গোঁজার ঠাই করে দাও।”

“আমি জায়গা কোথায় পাব মা? তা ছাড়া বাড়ি তৈরি করতেও যে অনেক খরচ!”

শ্রীমা চুপ করে গেলেন। ঘরে অখণ্ড নীরবতা। মাথা নিচু করে বসে আছেন চন্দ্রমোহন। মনে মনে হয়তো ভাবছেন, তাঁর জন্যেই মায়ের এই আতান্তর। শরৎ মহারাজের দৃষ্টিও মাটির দিকে। হয়তো ভাবছেন, খরচের প্রসঙ্গটা না আনলেই ভাল হত। এমন সময় নীরবতা ভাঙলেন স্বয়ং শ্রীমা। বললেন, “আমি যখন বলেছি, তখন চন্দুর বাড়ি হবেই। সেই বাড়িতে আমার পুজো করা পট পাঠিয়ে দেব। চন্দু তার সেবা করবে।”

খানিক থেমে আবার বললেন, “শরৎ, তুমি আঁদুল-মৌড়ীর জমিদারদের খবর দাও। ওরা ঠাকুরের ভক্ত ছিলেন, আমারও ভক্ত। এই আশ্রমেও অনেক বার এসেছেন। আমি জানি, কাছাকাছি বোসপাড়া লেনে ওদের অনেক জমিজমা আছে। সেখান থেকেই কিছুটা জমি চন্দুর জন্য লিখে দিতে হবে। তুমি বলতে না পারলে, কাগজ-কলম নিয়ে এসো, আমি লিখে দিচ্ছি তাদের।”

শরৎ মহারাজ একটু হাসলেন। গম্ভীর স্বভাবের মানুষ। সচরাচর হাসেন না। কিন্তু আজ তার ঠোঁটের ফাঁকে একটা হাসির রেখা দেখা গেল। বললেন, “না মা, আপনাকে লিখতে হবে না। আপনার নাম উল্লেখ করে, আমিই ওদের চিঠি লিখে দিচ্ছি।”

শ্রীমা বললেন, “হ্যাঁ, দেরি কোরো না। পারলে কালকের মধ্যেই ওদের চিঠি লিখে দিয়ো।’’

শ্রীমা এবার চন্দ্রমোহনের দিকে তাকালেন। বললেন, “চন্দু, তুমি বৌমা ও খোকা-খুকিকে দেশে রেখে এসো। আর যত দিন না তোমার বাড়ির একটা বন্দোবস্ত হচ্ছে, তুমি এখানেই থাকবে।”

শ্রীমায়ের আশ্রম থেকে যখন বেরোলেন রমানাথ, তখন সন্ধে হয় হয়। চন্দ্রমোহনও উঠলেন রমানাথের সঙ্গে। রমানাথ চন্দ্রমোহনকে বললেন, “একটু গঙ্গার ঘাটে যাব। তুমি কি যাবে?”

চন্দ্রমোহন উত্তর না দিয়ে সম্মতিসূচক ঘাড় নাড়লেন। কয়েক পা হেঁটেই দু’জন গঙ্গার ঘাটে এসে দাঁড়ালেন। সূর্যাস্ত হচ্ছে। নদীর জলে রক্তাভ সূর্যের সোনালি আলো গলে গলে পড়ছে। দূরে মাঝিদের নৌকোগুলো যেন এক মায়াময় জগৎ রচনা করেছে। রমানাথ সেই দিকে তাকিয়ে বলে উঠলেন, “অপূর্ব!”

তার পর চন্দ্রমোহনের দিকে তাকিয়ে বললেন, “মা আমাদের সাক্ষাৎ জগজ্জননী।”

চন্দ্রমোহন কোনও উত্তর দিতে পারলেন না। তাঁর দু’চোখ বেয়ে জলের ধারা নেমে আসছে তখন।

১৯

ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষার রেজ়াল্ট বেরিয়েছে। শশিকান্ত স্কুলে প্রথম হয়েছে। রমানাথ খবর পেয়ে দ্বারিক ঘোষের মিষ্টির দোকান থেকে কয়েক হাঁড়ি রসগোল্লা কিনে পাড়ায় সবাইকে বিতরণ করেছেন।

ক্রমশ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement