ধারাবাবিক উপন্যাস পর্ব ১০
Serial Novel

খরস্রোত

সন্ন্যাসী উঠে জানালার কাছে যান। জানালা বন্ধ করে আবার ফিরে আসেন। তবে, চেয়ারে না বসে, পায়চারি করতে শুরু করেন। পায়চারি করতে করতে এক সময় স্থির হয়ে দাঁড়ান।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২৪ ০৭:২৮
Share:

পূর্বানুবৃত্তি: নিবারণ যে কোনও দিনই সময়মতো কাজের জায়গায় আসে না, তার উপর উমানাথকে কলকাতার নানা আমোদের জায়গা চিনিয়ে বেড়ায়, এ সব রমানাথের অজানা ছিল না। তাই এক দিন হঠাৎই গদিতে উপস্থিত হয়ে তাদের সাবধান করে দেন রমানাথ। কলকাতা থেকে ফিরে বড়দা নীলমণির মুখোমুখি হন তিনি। নীলমণি উমানাথের বিয়ের প্রসঙ্গ তুললে রমানাথ সে বিয়ে একটু পিছিয়ে দেওয়ার কথা বলেন। মুখে বলেন, উমানাথ ব্যবসায় আর একটু থিতু হলে তার বিয়ের কথা ভাবা উচিত। নীলমণির যুক্তি, বিয়ে না দিলে বারমুখো স্বভাব ঘরমুখো হবে না। উমানাথের জন্য তাঁর পাত্রী ঠিক করাই আছে। শুধু বাবার সঙ্গে কথা বলে নেওয়াই বাকি। ওদিকে ভাইয়ের বাইজিবাড়ি যাওয়ার স্বভাব নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান রমানাথ। আদিত্যনাথের বাগানবাড়িতে আগমন ঘটেছে এক সন্ন্যাসীর। তাঁর ঘরে কারও যাওয়া নিষেধ। কৌতূহলী শশিকান্তর খুব ইচ্ছে সন্ন্যাসীকে দেখার। সে সেই ঘরের আশপাশে খেলার ছলে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে ধরা পড়ে যায় নীলমণির কাছে।

Advertisement

জেঠামশাইয়ের চোখের দিকে তাকাতেও ভয় করছে শশিকান্তর। সে জানে, ওই চোখে এখন আগুন জ্বলছে।

“ওকে ঘরে আসতে বলো, নীলমণি...” একটি জলদগম্ভীর কণ্ঠস্বর শশিকান্তকে সচকিত করল। মুখ তুলে তাকাল সে। দেখল, দরজার সামনে সন্ন্যাসী এসে দাঁড়িয়েছেন। শান্ত, সৌম্য চেহারা সন্ন্যাসীর। দৃষ্টি তার দিকেই।

Advertisement

নীলমণি শশিকান্তকে বললেন, “যাও, উনি তোমায় ডাকছেন।”

শশিকান্ত তবুও দাঁড়িয়ে রইল। এত ক্ষণ তার সন্ন্যাসীর বিষয়ে কৌতূহল ছিল। এখন তার ভয় করতে লাগল। পালিয়ে যাবে, সে উপায়ও নেই। সামনে জেঠামশাই দাঁড়িয়ে।

“কী হল, দাঁড়িয়ে আছ যে! যাও, উনি ডাকছেন,” নীলমণি বললেন।

শশিকান্ত ধীরে ধীরে দরজার দিকে এগোল। এই প্রথম এই ঘরে আসছে সে। কাকাকে বন্ধুদের নিয়ে এই ঘরে কয়েক বার আসতে সে দেখেছে। সেও অনেক দিন আগে। এখন এই ঘরে একমাত্র জেঠামশাই ছাড়া আর কেউ আসেন না। সন্ন্যাসী নিশ্চয়ই জেঠামশাইয়ের অতিথি। তা না হলে, এই ঘরে প্রবেশের অধিকার সন্ন্যাসীরও থাকত না।

ঘরে ঢুকেই শশিকান্তর চোখে পড়ল বিছানার উপর রাশি রাশি বই। তার মনে প্রশ্ন জাগল, এত বই কে পড়েন? সন্ন্যাসী? তাঁর তো ধুনি জ্বালিয়ে বসে থাকার কথা। ধুনির আগুন কোথায়? আরও একটা জিনিস লক্ষ করল শশিকান্ত। এই ঘরে খাট, আলমারি ও একটি চেয়ার ছাড়া আর কোনও আসবাব নেই। শশিকান্ত দাঁড়িয়ে ছিল। সন্ন্যাসী তাকে বসতে বললেন। শশিকান্ত মেঝেয় বসতে যাচ্ছিল। সন্ন্যাসী তাকে বিছানায় বসতে ইঙ্গিত করলেন। বইপত্র টপকে শশিকান্ত বিছানার এক কোণে গিয়ে বসে। সন্ন্যাসী চেয়ারে বসেন।

সূর্যদেব অস্ত গেছেন। এখনও তার শেষ আলো পড়ে রয়েছে পৃথিবীর বুকে। ছিটেফোঁটা আলো একটি মাত্র খোলা জানালা দিয়ে এই ঘরেও প্রবেশ করেছে। সেই আলোয় শশিকান্ত দেখল, সন্ন্যাসী তার দিকেই চেয়ে আছেন একদৃষ্টে। শশিকান্তর কেমন ভয় করতে লাগল। মনে হল যেন বাঘের খাঁচার মধ্যে সে ভুল করে ঢুকে পড়েছে। এখান থেকে পালানোরও কোনও পথ নেই। হঠাৎ দরজায় একটা খুট করে শব্দ হল। শশিকান্তর চোখ চলে গেল দরজার দিকে। দরজা দিয়ে প্রবেশ করলেন তার পিসি, নিভাননী। প্রায় নিঃশব্দে একটা লণ্ঠন রেখে নিভাননী চলে যাওয়ার পর, সন্ন্যাসী বললেন, “সন্ন্যাসীকে দেখলে শশিকান্ত?”

শশিকান্ত অবাক হল সন্ন্যাসী তার নাম জানেন দেখে। উত্তর না দিয়ে সে মাথা নাড়ল।

“সন্ন্যাসীকে দেখে তোমার কী মনে হল?”

“একেবারে অন্য রকম।”

সামান্য অবাক হলেন সন্ন্যাসী। বললেন, “অন্য রকমটা কোথায়?”

শশিকান্ত ভয়ে ভয়ে উত্তর দিল, “আমি ভেবেছিলাম, সন্ন্যাসী ধুনি জ্বালিয়ে বসে থাকবেন। এখন দেখছি...”

“সন্ন্যাসী ঘরে বসে বই পড়ছে, তাই তো?” তিনি বলেন। মুখে মৃদু হাসি।

শশিকান্ত কোনও উত্তর দেয় না।

সন্ন্যাসী বলেন, “অধ্যয়নং তপঃ... এ কথা শুনেছ তো?”

“অনেক বার,” শশিকান্ত চটপট উত্তর দেয়, “আমাদের স্কুলের পণ্ডিতমশাই বলেন— ছাত্রাণাম্ অধ্যয়নং তপঃ।”

“অর্থাৎ অধ্যয়নই তপস্যা। আর ছাত্র তো সকলেই। অধ্যয়ন না করলে, তুমি জানবে কেমন করে? কুয়োর ব্যাঙ হয়ে পড়ে থাকবে। কুয়োর ব্যাঙের গল্পটা জানো তো?”

শশিকান্ত ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে সন্ন্যাসীর দিকে। না, এই রকম কোনও গল্প তার জানা নেই।

“আচ্ছা, শোনো সেই গল্পটা...” বলে সন্ন্যাসী গল্প বলা শুরু করেন। একটি ব্যাঙ কুয়োর মধ্যেই থাকে। কুয়োর মধ্যেই সে বড় হয়। কুয়োর বাইরের জগৎ তার অজানা। এক দিন অন্য একটি ব্যাঙ সেই কুয়োয় এসে হাজির হয়। কুয়োর ব্যাঙ তাকে জিজ্ঞেস করে, সে কোথা থেকে আসছে। উত্তরে সে বলে, তার আগমন সমুদ্র থেকে। সমুদ্রের নাম শোনেনি কুয়োর ব্যাঙ। তাই সে তার কাছে জানতে চাইল, সমুদ্র তার কুয়োর চেয়ে বড় কি না। সমুদ্রের ব্যাঙ কুয়োর ব্যাঙকে অনেক বার সমুদ্রের বিশালতা বোঝানোর চেষ্টা করে, ব্যর্থ হয়ে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হল যে, কূপমণ্ডূককে বহির্জগৎ চেনানো যায় না।

গল্প শেষ করে সন্ন্যাসী বললেন, “তুমি নিশ্চয়ই স্বামী বিবেকানন্দের নাম শুনেছ? এই গল্পটি তিনি শিকাগো ধর্ম সম্মেলনে শুনিয়েছিলেন। তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, না জানলে, না দেখলে, একটা ছোট্ট কুয়োর মতো জায়গায় বসে থাকলে, মনের পরিসরও ছোট হয়ে যায়। সেই সঙ্কীর্ণতা থেকে নিজের জগৎটাকেই মানুষ সর্ববৃহৎ ও সর্বোত্তম মনে করে। কিছু বুঝলে?”

শশিকান্ত খুব সংক্ষেপে উত্তর দেয়, “হ্যাঁ।”

সন্ন্যাসী উঠে জানালার কাছে যান। জানালা বন্ধ করে আবার ফিরে আসেন। তবে, চেয়ারে না বসে, পায়চারি করতে শুরু করেন। পায়চারি করতে করতে এক সময় স্থির হয়ে দাঁড়ান। বলেন, “কিন্তু, তুমি জানবে কী ভাবে? এই কূপমণ্ডূকতা থেকে তুমি বেরোবে কী করে? তোমাকে বই পড়তে হবে। তবেই তোমার জ্ঞানের জগৎ বিস্তৃত হবে। তবে শুধু বই পড়লেই হবে না, জ্ঞানের সন্ধানের জন্য বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে তোমাকে পরিচিত হতে হবে।”

সন্ন্যাসী লণ্ঠনের আগুনের দিকে চেয়ে থাকেন খানিক ক্ষণ। তার পর বলেন, “তুমি ধুনির আগুন নেই দেখে অবাক হয়েছ। খুবই স্বাভাবিক। তবে, এই সময়ের যাঁরা সন্ন্যাসী, তাঁদের ধুনির আগুন জ্বলছে ভিতরে। ওটা তুমি দেখতে পাবে না। বুঝতেও পারবে না।”

সত্যিই কিছু বুঝতে পারল না শশিকান্ত।

সন্ন্যাসী নিচু হয়ে খাটের তলা থেকে একটি ছোট্ট সুটকেস বার করলেন। সুটকেসটি খুলে ভিতর থেকে একটি বই বার করে এনে শশিকান্তর হাতে দিয়ে বললেন, “এই বইটা নিয়ে যাও। মাঝে মাঝে পড়বে। এখন এসো।”

ঘর থেকে বেরোনোর আগে শশিকান্ত পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করল সন্ন্যাসীকে। তার পর বাইরে এসে দাঁড়াল।

খানিক আগে সন্ধে নেমেছে। গাঢ় অন্ধকারে ঢেকে গেছে চার দিক। একটা পেঁচা মাথার উপর দিয়ে উড়ে গেল। শশিকান্ত বাড়ির পথে পা চালাল। একটু হেঁটেই থমকে দাঁড়াল সে। মনে হল কে যেন দাঁড়িয়ে ছিল এত ক্ষণ। তাকে আসতে দেখে সরে গেল। ঠিক দেখল সে? নাকি মনের ভুল? এই সব ভাবতে ভাবতেই বাড়িতে প্রবেশ করল শশিকান্ত।

বাড়িতে ঢুকতেই পিসি নিভাননীর মুখোমুখি হল শশিকান্ত। নিভাননী বললেন, “খুব যে এ দিক-ও দিক ঘুরে বেড়াচ্ছ, নিজের বাপটা অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে আছে, সেটা খেয়াল আছে? এক বার বাপের কাছে বসেছ?”

হাতমুখ ধুয়ে শশিকান্ত বাবার ঘরে প্রবেশ করল। বাবার মাথার পাশে দাঁড়াল। মাথায় হাত বোলাল। রমানাথ চোখ মেললেন। বললেন, “শশী এসেছিস? বোস।”

শশিকান্ত না বসে বাবার মাথায় হাত বোলাতে লাগল, প্রশ্ন করল, “তোমার কী হয়েছে বাবা?”

“কী জানি? পেটে ব্যথা হয়। জ্বরও হয় মাঝে মাঝে। দেখি, তোর জেঠামশাই আজ এক জন ডাক্তার আনবেন। তিনি কী বলেন, দেখা যাক...” রমানাথ থামেন। বেশি কথা বললে তাঁর কষ্ট হয়।

“বাবা, তোমার কি কষ্ট হচ্ছে?” শশিকান্ত বলে।

“হ্যাঁ, শশী। তুমি এখন পড়তে যাও। আমার কথা ভেবো না...” বলে রমানাথ পাশ ফেরেন।

শশিকান্ত ধীরে ধীরে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। খেয়াল হয়, তার দু’গাল বেয়ে জলের ধারা নামছে। ডান হাতের তালুর পিছন দিক দিয়ে সেই জল মুছে শশিকান্ত নিজের ঘরে ঢুকে পড়ে। লণ্ঠনের আলোয় সন্ন্যাসীর দেওয়া বইটি মেলে ধরে সে। বইটির নাম ‘জ্ঞানযোগ’। লেখক স্বামী বিবেকানন্দ। আগ্রহের সঙ্গে বইটির পাতা উল্টে চলে শশিকান্ত।

একটু পরেই বাইরে কথাবার্তার আওয়াজ পেয়ে ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসে সে। দেখে, জেঠামশাই বাবার জন্য ডাক্তার নিয়ে এসেছেন। শশিকান্ত জেঠামশাই আর ডাক্তারবাবুর পিছন পিছন বাবার ঘরে প্রবেশ করে। ডাক্তারবাবু রমানাথের সারা শরীর পরীক্ষা করে দেখছেন। শশিকান্ত দেখছে ডাক্তারবাবুকে। কোথায় যেন দেখেছে এই ডাক্তারবাবুকে। কোথায়... মনে করতে পারে না।

জেঠামশাইয়ের সঙ্গে কথা বলতে বলতে ডাক্তার চলে গেছেন অনেক ক্ষণ। শশিকান্ত তার ঘরে ফিরে এসেছে। সে শুধু ভেবে চলেছে, কোথায়... কখন...

ভোররাতে ঘুম ভেঙে গেল শশিকান্তর। বাইরে একটা হট্টগোল হচ্ছে, শুনতে পেল। শীতকাল। তাই ঘরের সব জানালা বন্ধ। শশিকান্ত একটা জানালা খুলে বাইরে তাকাল। আবছা আলোয় স্পষ্ট দেখল, তাদের বাগানের বাড়িটা ঘিরে ফেলেছে লাল পাগড়ি পরা পুলিশের দল। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বাড়ির ভিতরেও ঢুকছে। কিন্তু কেন? সন্ন্যাসীকে ধরতে? কী তার অপরাধ? শশিকান্ত জানালার কাছ থেকে সরে আসে। তার উদ্দেশ্য বাগানবাড়িতে গিয়ে আরও কাছ থেকে সব কিছু পর্যবেক্ষণ করা।

দরজার দিকে পা বাড়াতেই পিছন থেকে পিসির গলার আওয়াজ ভেসে এল— “বাইরে বেরোস না। এখানে এসে শুয়ে পড়।”

শশিকান্ত গুটিগুটি পায়ে পিসির কাছে ফিরে আসে। বলে, “সন্ন্যাসীর ঘরে পুলিশ এসেছে।”

“এ বাড়িতেও আসবে। কিন্তু শুধু হাতেই ফিরে যাবে,” পিসি বলেন।

“আমি এক বার যাই না ওখানে?” শশিকান্ত কাতর ভাবে বলে।

“কী হবে তোর ওখানে গিয়ে? পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করবে। শুধু শুধু ঝামেলায় জড়াবি কেন? সন্ন্যাসীকে না পেয়ে এমনিতেই ওরা তেলেবেগুনে জ্বলে আছে!” নিভাননী বলেন।

“সন্ন্যাসীকে পাবে না? তুমি জানলে কী করে?” শশিকান্ত প্রশ্ন করে।

নিভাননী বলেন, “তোর অত জানার দরকার নেই। আয়, আমার পাশে শুয়ে পড়। সকাল হতে দেরি আছে।”

শশিকান্ত বাধ্য ছেলের মতো পিসির পাশে শুয়ে পড়ে। পিসি তার মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। শশিকান্তর চোখে আবার ঘুম নেমে আসে।

১২

আদিত্যনাথের বাড়িতে এক বিপ্লবী সন্ন্যাসীর বেশে লুকিয়ে ছিল, এ খবর রাষ্ট্র হয়ে গেল সারা গ্রামে। অনেকেই শশিকান্তকে জিজ্ঞেস করল সন্ন্যাসীর কথা। শশিকান্তর একই উত্তর, সে কিছু জানে না। পুলিশকেও সে একই উত্তর দিয়েছে। সন্ন্যাসী ও তার জেঠামশাইয়ের খোঁজে পুলিশ দু’দিন তাদের বাড়িতে এসেছে। সকলকে জেরা করেছে। পুলিশ যাওয়ার সময় বলে গেছে, গ্রামে বিপ্লবী কার্যকলাপ বেড়ে চলেছে তার জেঠামশাইয়ের জন্য। দেয়ালে দেয়ালে লিবার্টি সাঁটাও নাকি তার জেঠামশায়ের নির্দেশে হয়েছে। তাদের কাছে খবর আছে।

ঈশানকে এ কথা বলাতে সে হা-হা করে হেসে উঠল। ঈশানকে আজকাল দেখতে পাওয়া যায় না খুব একটা। আজ খেলার মাঠে এসে মাঠের ধারে বসেছিল, তখনই দেখা।

ঈশানকে হাসতে দেখে শশিকান্ত প্রশ্ন করেছিল, “হাসলি কেন?”

ঈশান বলল, “এমনি। হাসি পেল, তাই।” তার পর একটু চুপ করে থেকে আবার বলল, “দেয়ালে লিবার্টি লাগানো তার মানে, তোর কাজ। তুই তোর জেঠামশাইয়ের নির্দেশে...”

ঈশানকে কথা শেষ করতে দিল না শশিকান্ত, চিৎকার করে উঠল। বলল, “মিথ্যে বলবি না। জেঠামশাই বললেও আমি ও কাজ করতে পারতাম না। আমার কি সেই সাহস আছে?”

“কেন নেই? তুই না বিপ্লবীর ঘরের ছেলে!”

“সবাই এক রকম হয় না ঈশান। সাহস থাকলে তোর আর বিশুর মতো আমিও সেদিন পাঁচিল টপকাতে পারতাম।”

ঈশান চুপ করে যায়। মাঠ থেকে কয়েকটা ঘাস ছিঁড়ে কুটিকুটি করে। তার পর বলে, “তোর সাহসী হতে ইচ্ছে করে না?”

শশিকান্ত উত্তর দেয়, “কেন করবে না? অনেক সময়ই করে। কিন্তু ওই যে বললাম, সবাই এক রকম হয় না। আমি চাইলেই ঈশান হতে পারব না।”

ক্রমশ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement