ছবি: সৌমেন দাস
ক্যুরিয়ারটা যখন এল, ভীষণ বিরক্ত হলেন মনোময়। এই এক ঢং হয়েছে আজকাল, ক্যুরিয়ারে জিনিসপত্র আসা! আগে ছেলে-বৌমার নামে শুধু চিঠিপত্রই আসত, এখন শুরু হয়েছে জিনিসপত্র আনানো। নাতিবাবু নাকি কম্পিউটারে দেখে পছন্দ করে পয়সা চুকিয়ে কিনে রাখেন ও সব, ডেলিভারিটি বার বার দরজা খুলে নিতে যেতে হয় মনোময়কে!
আজকের ক্যুরিয়ারটা কার দেখতে গিয়ে বিরলরোম ভুরুদুটো কাছাকাছি চলে আসে মনোময়ের। এ যে তাঁর নামে আসা পার্সেল! প্রেরকের নামেও চমক, পরিচয় গুপ্ত। সে আবার কে? দুই ভুরুর মধ্যিখানের উল্লম্ব ভাঁজগুলো গভীর হয় মনোময়ের। কিছু ক্ষণ পরে সেগুলো আবার সমতলও হয়ে যায়। বোঝেন, যে পাঠিয়েছে সে নিজেকে জানান দিতে চায় না, তাই ওই নামের ভেক ধরা। কিন্তু ছিয়াত্তুরে বৃদ্ধ তিনি, শরীর-মন-মেজাজ সবই বিকল এখন তাঁর, এই অসময়ে তাঁর সঙ্গে এমন রহস্য করার সাধটা জাগল কার?
পার্সেলটা টিপেটুপে মনে হল বই বা শক্ত বাক্সের মতো কিছু আছে ভিতরে। ‘দুগ্গা’ বলে কাঁচি চালিয়ে দিলেন মোড়কে। বই-ই। বইয়ের নাম দেখে ভ্রুযুগল ফের কাছাকাছি মনোময়ের— ‘বিন্দাস বানপ্রস্থ’। মলাট ওল্টাতে দেখা গেল উৎসর্গপত্রে লেখা— ‘দুনিয়ার যত পথহারা পাকামাথাদের জন্য’।
আশ্চর্য হওয়ার মতো আইটেমের যেন শেষ নেই বইটায়! ওই পাতারই নীচের দিকে পেনে লেখা, ‘তুমিও পথ হারিয়েছ, তাই…’ পাশে আঁকা ফচকে হাসিমাখা একখানি মুখ, যাকে বলে স্মাইলি। বইটা উল্টেপাল্টে, পাতাগুলো ফরফরিয়ে এমন কোনও ক্লু খুঁজে পেলেন না মনোময়, যার থেকে আন্দাজ করতে পারেন এটা কার কীর্তি। ভাবলেন খানিক ক্ষণ, তার পর ভাবনায় ক্ষান্ত দিয়ে দেওয়ালে ঝোলানো বিমলার ছবিখানার দিকে মুখ ফিরিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “কে পাঠাল বলো দেখি?”
বাড়িতে কেউ না থাকলে স্ত্রীর ছবির সঙ্গে মনোময় কথা বলেন স্বাভাবিক স্বরে। ছবি হয়ে যাওয়া বিমলা যা উত্তর দেন, সে সব দিব্যি শুনতেও পান স্পষ্ট। যেমন এখন।
“যেই পাঠাক, ভাল জিনিসই তো পাঠিয়েছে। চোখ বুলিয়ে দেখো কেমন বই। নামের তো খুব বাহার দেখছি!”
মুখবন্ধের পাতায় চোখ বোলাতে গিয়ে মনোময় দেখলেন, লেখক পেশায় একজন চিকিৎসক, জেরিয়াট্রিশিয়ান। এ শব্দটিও মনোময়ের কাছে নতুন। জানতেনই না, বুড়োদের জন্য আলাদা ডাক্তার হয়। দীর্ঘ দিন ধরে পাকামাথাদের ঘাঁটতে ঘাঁটতে এই ডাক্তারবাবুটির মনে হয়েছে, যে মূল্যবান অভিজ্ঞতা তাঁর ঝুলিতে জমেছে, তার কিছুটা অন্তত পাকামাথাদের কাছেই ফিরিয়ে দেওয়া দরকার। পথভ্রষ্ট হচ্ছেন কি না, সেটুকু তাঁরা নিজেরাই যাতে বুঝতে পারেন। আর একটি জিনিসও বুঝলেন, ডাক্তারবাবুর লেখার হাতটি চমৎকার। দু’পাতার মুখবন্ধটা পড়তে গিয়ে এক বারও চোখ তুলতে হয়নি তাঁকে, অথচ এখন খবরের কাগজ পড়ার ধৈর্যটুকুও থাকে না তাঁর।
“বেশ বই, বুঝলে!” উজ্জ্বল মুখে স্ত্রীকে জানালেন মনোময়।
“জানিই তো।”
“তুমি সব জানো! না বলতেই বুঝে যাও সব। অন্তর্যামী এলেন আমার!” ছদ্ম-রাগে বললেন মনোময়।
“বুঝিই তো। চিরদিন বুঝে এসেছি। মরার সুবাদে এখন আরও বেশি করে বুঝি। অন্তর্যামী-টামি বলে যত ঠাট্টাই করো, জেনে রাখো এখন আমি সত্যি সত্যিই তাই।”
তিন বছর আগে প্রয়াতা স্ত্রীর সঙ্গে নিরিবিলি বাড়িতে চলা এই খুনসুটিটুকুই জীবনের একমাত্র আনন্দ মনোময়ের। প্রতীক্ষায় থাকেন বাড়িটা কখন খালি হবে। ভাগ্যে বৌমাটিও চাকরি করে।
কিছু দিন ধরে খুব দুর্বল বোধ করছিলেন মনোময়। ছেলে-বৌমা তেমন আমল দেয়নি বলে গজগজ করতে করতে নিজেই এক হোমিয়োপ্যাথের কাছ থেকে ওষুধ এনে খাচ্ছিলেন। সে দিন সেই ওষুধের শিশিটা হাত থেকে পড়ে গেল ভেঙে। ভাঙা শিশি থেকে কোনও ক্রমে নাম উদ্ধার করে পর দিনই আবার ওষুধ এনে দিল পুত্রবধূ জয়িতা। কিন্তু সে ওষুধে মনোময় অন্য গন্ধ পেয়েছেন। মনোময়ের স্থির বিশ্বাস ওটি ওষুধ নয়, অন্য জিনিস। তিনি আজকাল অনুভব করেন, সংসার থেকে তাঁকে সরিয়ে ফেলার একটা প্ল্যান চলছে খুব গোপনে! নিজের একমাত্র সন্তানটিও সে ষড়যন্ত্রে শামিল ভেবে খুবই খারাপ লাগে তাঁর। কিন্তু কী করা যাবে! বুড়োদের আজকাল কেউ চায় না। জয়িতার আনা ওষুধটা আর খাচ্ছেন না মনোময়। হোমিয়োপ্যাথি গুলির মাধ্যমে স্লো-পয়জ়নিং খুব সহজ। কথাটা বিমলাকে বলিবলি করেও বলতে পারছিলেন না, কারণ বৌমাটি মোটের উপর প্রিয়ই ছিল বিমলার। কিন্তু দ্বিধা ঝেড়ে যে দিন বলে ফেললেন, দেখলেন বিমলাও এক কথায় সায় দিল কথাটায়। বিশ্বাসটা আরও দৃঢ় হল তাতে। খাওয়াদাওয়া নিয়ে বেশ সমস্যা চলছে তাই মনোময়ের। এত দিন তাঁর খাবার আলাদা করে বেড়ে ঢাকা দিয়ে রেখে দিত জয়িতা। বারণ করে দিয়েছেন। তার বদলে খাবার টেবিলে সবার সঙ্গে বসে জীবনেও যা করেননি তাই করছেন এখন। খাবারের পাত্র থেকে নিজের হাতে প্লেটে খাবার তুলে তুলে খাচ্ছেন। নাতি শিবম ঠাট্টা করে বলেছিল, “বাহ্ দাদু, সেল্ফ হেল্প! এই না হলে খাওয়া! কী যে এত দিন ভোগ নিবেদনের স্টাইলে খেতে!”
কিন্তু মনে এই দুশ্চিন্তা নিয়ে কাঁহাতক ভাল থাকা যায়! খুব খারাপ আছেন মনোময়। রোজ বিকেলে পার্কে হাঁটতে যান এক বার করে। সেখানে বুড়োদের বেশ বড় একটা দলকে আড্ডা মারতে দেখেন। কিন্তু স্বভাবটা রাশভারী আর নাকউঁচু বলে কিছুতেই মিশতে পারেন না সেই দলে। দিন-দিন বিমলাকে আরও আঁকড়ে ধরছেন তাই। অতখানি গুরুত্ব পাচ্ছেন বলেই কি না কে জানে, মনোময়ের প্রতিটি সব কথাতেই এখন সায় দেন বিমলা। যত দিন জীবিত ছিলেন, স্বভাবটা তাঁর মোটেই এমন ছিল না। দ্বিমত, তর্কাতর্কি, ঝগড়া এ সব তখন ছিল নিত্যকার ঘটনা।
শিবমের এক বন্ধু— বন্ধুটি মেয়ে, নাম ঝিমলি— প্রায়ই আসত বাড়িতে। অল্পবয়সি একটা মেয়ে হুটহাট বাড়িতে চলে আসছে, পর্দাঢাকা ঘরে নাতির সঙ্গে বসে হাহা-হিহি করছে, এ সব একেবারে বরদাস্ত করতে পারতেন না মনোময়। কিন্তু মেয়েটা স্বভাবগুণে মন জয় করে নিয়েছিল তাঁর। নিজের নাতিবাবুটি তো কোনও দিন কাছে এসে দুটো কথা বলল না, ঝিমলি কিন্তু আসত আর এসে রাজ্যের আগডুম-বাগডুম বকত। পাত্তাই দিত না সে মনোময়ের গাম্ভীর্যকে। ফরেন্সিক সায়েন্স নিয়ে নাকি পড়াশোনা করছিল ঝিমলি। স্লো-পয়জ়নিংয়ের বিষয়টা নিয়ে খুব সন্তর্পণে তাই তাকেই শুধিয়েছিলেন মনোময়। বিজ্ঞের মতো অনেক জ্ঞান দিয়েছিল মেয়েটা। সেও আর আসে না আজকাল। এক দিন জিজ্ঞেস করেছিলেন শিবমকে। মুখে উত্তর দেওয়ার বদলে হাত আর মুখ দিয়ে এমন একটা ভঙ্গি করেছিল শিবম, যার অর্থ ‘পাখি উড়ে গিয়েছে’-ও হতে পারে, আবার ‘প্লেনে করে দূরে কোথাও গিয়েছে’-ও হতে পারে। সে ভঙ্গিটি এমন পিত্তপ্রদাহকর ছিল যে, দ্বিতীয় বার কিছু আর জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হয়নি মনোময়ের।
জয়িতা আসায় দরজা খুলতে উঠলেন যখন, কুড়ি পাতা পড়া হয়ে গিয়েছে। উদ্বিগ্ন মুখে জয়িতা শুধোয়, “ঘুমিয়ে পড়েছিলেন না কি? এত বার বেল বাজাতে তো হয় না কখনও?”
মিথ্যে করে ‘হ্যাঁ’ বললেন মনোময়। একটা বইয়ে ডুবে গিয়েছিলেন, বললেন না। আসলে বইটার কথা চেপে যেতে চাইলেন। নিজে কিন্তু অবাক হলেন বেজায়। বাহ্যজ্ঞান ভুলে একটানা পাতা বিশেক কবে পড়েছেন শেষ বার!
লুকিয়ে পড়ছেন বলে শেষ হতে দেরি হচ্ছে বইটা। সবাই বেরিয়ে গেলে বিমলার সঙ্গে গল্প করার বদলে এখন ওটাই পড়েন মনোময়। বিমলাও বলেন, “পড়ো, পড়ো।”
অবশেষে এক দিন শেষ হল ‘বিন্দাস বানপ্রস্থ’। সর্বশেষ বাক্যটির পাঠ সমাপ্ত হল যখন, ঘড়িতে তখন সন্ধে ছ’টা। অনেক ক্ষণ স্তব্ধ হয়ে বসে রইলেন মনোময়। খুব গাঢ় অনুভব হল তাঁর, পড়ন্ত এই সন্ধ্যাটি তার অন্ধকারের চাদর দিয়ে এক দিকে যেমন ঢেকে দিচ্ছে চরাচরকে, অন্য দিকে তাঁর মনের উপর পড়ে থাকা আর একটা অন্ধকার চাদরকে টান মেরে সরিয়েও যেন দিচ্ছে। মগজের ভিতর হাতুড়ি পিটে পিটে অনেক কিছু ভাঙছিলও বইটা। সব মিলিয়ে দারুণ এক ছটফটানি। কোনও বই কখনও এতখানি চঞ্চল করেনি তাঁকে।
সেই সন্ধেয় পার্কের খোলা হাওয়ায় নিজের মুখোমুখি বসে অনেক তর্কবিতর্ক করেছিলেন মনোময় নিজের সঙ্গে এবং আশ্চর্য হয়ে দেখেছিলেন, নিজেরই একটা অংশ সবলে ধরাশায়ী করে দিল অন্য অংশটাকে।
বাড়ি ফিরে গলা ঝেড়েটেড়ে জয়িতাকে ডেকে বলেছিলেন, “এখন থেকে আবার আমার খাবারটা আলাদা করে ঢাকা দিয়ে রেখো। রাতেও একটু তাড়াতাড়ি খেয়ে শুয়ে পড়তে চাই।” কারণ হিসেবে প্রাতর্ভ্রমণের সাধ হওয়ার কথাই বলেছিলেন জয়িতাকে।
মাস ছয়েক কেটে গিয়েছে।
মনোময় এখন এ তল্লাটের ছোটখাটো এক নবজাগরণের পুরোধা। যাদের সঙ্গে মিশতে পারতেন না, পার্কে আড্ডা দেওয়া সেই পাকামাথাদের নিয়েই একটা দল গড়েছেন তিনি। তার পর তাদের নিয়ে যা সব কাণ্ড করে বেড়াচ্ছেন, তা দেখে চোখ কপালে উঠছে সকলের। গোবেচারা নবকুমারবাবু পুত্রের গলগ্রহ ছিলেন। বাড়িখানা অবশ্য তাঁর নিজেরই ছিল, কিন্তু পুত্রের অত্যাচারে বেসামাল হয়ে এক দিন সেখানা লিখে দিতে যাচ্ছিলেন তার নামে। সে দিন তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে মনোময় ও তাঁর দলবল যে ভাবে সে অঘটন রোধ করলেন এবং নবকুমারের দুর্বৃত্ত পুত্রটিকে শায়েস্তা করলেন তা, এক কথায় সেলাম পাবার যোগ্য।
এমন চোরাগোপ্তা অত্যাচার অনেকেরই জুটত বাড়িতে।
যারা করত তারা সে সব মুলতুবি রেখেছে এখন।
এর পর তাঁরা পড়েছিলেন পার্কটাকে নিয়ে। নামেই পার্ক ছিল সেটা এত দিন। মনোময়ের নেতৃত্বে সে খোলা জায়গাটুকুর ভোল একেবারে বদলে দিয়েছে এই বৃদ্ধ-ব্রিগেড। পার্কের পর ব্রিগেড এখন ব্যস্ত পাড়া সংলগ্ন বস্তিটা নিয়ে, যেখান থেকে বেরিয়ে এসে গীতা, মিতা, অনিতার দল নিত্য হাল ধরে তাঁদের সংসারের।
এত কর্মক্ষমতা, এত উদ্দীপনা তাঁর মধ্যে কোথায় লুকিয়ে ছিল কিছুতেই ভেবে পান না মনোময়। তবে বোঝেন নিজের সঙ্গে প্রবল লড়াই করে স্লো-পয়জ়নিংয়ের ভাবনাটাকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে তাড়াতে পেরেছিলেন যে দিন, সেই দিনটিই ছিল তুবড়িতে অগ্নিসংযোগের দিন। আর সে কাজ তাঁকে দিয়ে করিয়ে নিয়েছিল ওই বই। সে বইকে আজও ধর্মগ্রন্থ জ্ঞানে পুজো করেন মনোময়। বইটা অনেককে পড়তেও দিয়েছিলেন তিনি। তবে তারা সকলেই যে ওটা পড়ে এমন চনমনিয়ে উঠেছে, তা নয়। অনেকে তো না পড়েই ফেরত দিয়েছে। তবে তাতে বিন্দুমাত্র ক্ষুণ্ণ হননি মনোময়। আগে হয়তো হতেন। এখন তিনি বোঝেন, সব কিছু সবার জন্য নয়।
সে দিন বস্তিবাসীদের জন্য কম খরচে ঘরোয়া এক ওয়াটার ফিল্টার তৈরির প্ল্যান নিয়ে গভীর ভাবনাচিন্তা করছিলেন, তখনই এল ফোনটা, “আমাকে চিনতে পারছ, দাদু?”
গলা আর খিলখিলে হাসি শুনেই চিনলেন মনোময়, শুধোলেন, “তুমি কোথায় আছ?”
“আমেরিকায় পড়তে এসেছি তো! কেন, শিবম বলেনি তোমায়? উফ, কী ছেলে! না-হয় ব্রেক-আপই হয়েছে, তাই বলে বলবি না? নাতিটা তোমার আর বড় হল না, দাদু! যাকগে, কেমন আছ বলো? আচ্ছা, তোমার মাথা থেকে স্লো-পয়জ়নিংয়ের সেই পাজি ভূতটা নেমেছে? নাকি এখনও মাথায় চড়িয়ে রেখেছ তাকে? আন্টির মতো মানুষ হয় না গো দাদু। তাকে তুমি প্লিজ় সন্দেহ কোরো না। শি ইজ় জাস্ট আ জেম অব আ লেডি। তোমার জন্য কত চিন্তা যে করে আন্টি, তুমি জানোই না। ভাল লাগত বলে সাইকোলজির একটা কোর্স করেছিলাম এক বার। তাই বুঝেছিলাম বাজে একটা সন্দেহবাতিক রোগে ভুগছ তুমি। অনেক বয়স্ক মানুষই এমন ভোগে। আচ্ছা, একটা বই পাঠিয়েছিলাম তোমায়, পড়েছ?”
ফোনটা রাখার পর আজ অনেক দিন পর স্ত্রীর ছবির দিকে চেয়ে হেসে জিজ্ঞেস করলেন মনোময়, “কি গো অন্তর্যামী, বইটা যে ঝিমলি পাঠিয়েছিল, জানতে তুমি?”
বিমলার গলার স্বর এখন আর শুনতে পান না মনোময়। তবে ছবিতে বিমলার ঠোঁটে লেগে থাকা স্মিত হাসিটা যেন বলে উঠল, ‘জানতামই তো! আরও একটা খুব দামি কথা জানি। বেঁচে থাকার জন্য এই পৃথিবীটা সবচেয়ে সুন্দর জায়গা— সব ভুবনের সেরা! সক্কলকে নিয়ে জড়িয়েমড়িয়ে এখানে বেঁচে থাকার মতো সুখ এই ব্রহ্মাণ্ডে আর কোত্থাও নেই।”