World’s Tallest Slum

বাণিজ্যিক কেন্দ্র থেকে গরিবদের আশ্রয়স্থল, বিশ্বের উচ্চতম বস্তিতে পরিণত হয় ‘টাওয়ার অফ ডেভিড’

ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে ৪৫ তলা এই আবাসনের নাম ‘টাওয়ার অফ ডেভিড’। এখানে থাকতেন প্রায় হাজার তিনেক মানুষ। এখন আর কেউই থাকেন না সেখানে। থাকার যোগ্যও নয়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৪:৪৩
Share:
০১ ১৮

শহরের অন্যতম বড় বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসাবে শুরু করা হয়েছিল নির্মাণ। ভেনেজুয়েলার সেই বিলাসবহুল বহুতল পরে পরিণত হয় বিশ্বের উচ্চতম বস্তিতে। কী ভাবে হল?

০২ ১৮

ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে ৪৫ তলা এই আবাসনের নাম ‘টাওয়ার অফ ডেভিড’। এখানে থাকতেন প্রায় হাজার তিনেক মানুষ। এঁদের অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা ছিল না, সঙ্গতিও ছিল না।

Advertisement
০৩ ১৮

১৯৯০ সালে এই বহুতল তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। মনে করা হয়েছিল, শহরের অর্থনৈতিক অঞ্চলে এই বহুতল তৈরি করে তাতে গুরুত্বপূর্ণ দফতর তৈরি করা হবে। হোটেল তৈরির কথাও হয়েছিল।

০৪ ১৮

এই বহুতল তৈরিতে যিনি প্রধানত বিনিয়োগ করেছিলেন, তিনি ১৯৯৩ সালে মারা যান। মাঝপথে বন্ধ হয় নির্মাণ কাজ। তখন সরকার এই বহুতল অধিগ্রহণ করে। যদিও তার নির্মাণ শেষ করতে পারেনি ভেনেজুয়েলা সরকার।

০৫ ১৮

আবাসনের ছ’টি বহুতলে কোনও লিফ্‌ট, জানলা, বারান্দার রেলিং, ভিতরের দেওয়াল তৈরি করা ছিল না। জল এবং বিদ্যুৎ সংযোগও ছিল না।

০৬ ১৮

বেশ কয়েক বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল ভেনেজুয়েলার তৃতীয় বৃহত্তম বহুতল। দেশের প্রেসিডেন্ট তখন উগো চাভেজ়। ১৯৯৮ সালে তিনি দেশের গরিব মানুষদের এই বহুতলে এসে থাকার ডাক দেন।

০৭ ১৮

এর পর ধীরে ধীরে ভেনেজুয়েলার আশ্রয়হীন গরিব মানুষেরা ‘টাওয়ার অফ ডেভিড’-এ বসবাস শুরু করেন। ২০০৮ সালের মধ্যে এই বহুতলে হাজার হাজার গরিব মানুষ আশ্রয় নেন।

০৮ ১৮

এর পর বাসিন্দারাই বহুতলের দেওয়ালে উগো চাভেজ়ের ছবি এঁকে দেন। তাঁরা নিজেরাই প্রতি তলার ৫০টি ফ্ল্যাটে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করেন।

০৯ ১৮

এই বহুতলের মাথায় ছিল হেলিপ্যাড। তারও দখল নেন গরিব মানুষেরা। ক্রমে এই বহুতল নিজেদের চেষ্টায় জল সরবরাহ চালু করেন আবাসিকেরা। বহুতলের ভিতরে তৈরি হয় দোকান, দন্ত্য চিকিৎসাকেন্দ্র, বিউটি পার্লার।

১০ ১৮

ক্রমে বহুতলে নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হয়। মোতায়েন হয় নিরাপত্তারক্ষী। বাইরে বসে বৈদ্যুতিন গেট। আবাসিকেরা এই সব ব্যবস্থা নিজেরাই করেছিলেন।

১১ ১৮

প্রথম দিকে এই আবাসনে ছড়ি ঘোরাতেন এক গ্যাংস্টার। নাম এল নিনো। তাঁর ভয়ে কাঁপতেন আবাসিকেরা। বহুতলের বাচ্চাদের তিনি নিয়োগ করতেন তোলা আদায়ের কাজে। কোনও সাংবাদিক বহুতলে এলে তাঁর থেকেও ঘুষ নিত এই বাচ্চারা।

১২ ১৮

এই বহুতলের প্রতি তলে এক জন ম্যানেজারও নিয়োগ করেছিলেন নিনো। কেউ তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখালে বা তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীদের ছাদ থেকে ফেলে দিতেন তিনি।

১৩ ১৮

২০১৪ সালে এই বহুতল থেকে বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করতে শুরু করে সরকার। ২০ কিলোমিটার দূরে সরকারেরই তৈরি একটি বাড়িতে তাঁদের পুনর্বাসন দেওয়া হয়।

১৪ ১৮

মন্ত্রী আর্নেস্টো ভিলেগাস জানিয়েছিলেন, ওই বহুতল থাকার জন্য নিরাপদ নয়। তা ছাড়া সেখানে পরিচ্ছন্নতা বা সুরক্ষা কোনওটাই নেই। সে কারণে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

১৫ ১৮

মন্ত্রী এ-ও জানিয়েছিলেন, ওই বহুতলের পরিবেশের কারণে বহু শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বহু শিশু রোগে আক্রান্ত। বারান্দায় দেওয়াল না থাকায় অনেক শিশুর পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে।

১৬ ১৮

যদিও বাসিন্দারা সেই দাবি মানতে চাননি। তাঁরা জানিয়েছিলেন, বহুতলের অন্দর তাঁরা যথেষ্ট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেই রেখেছিলেন। অনেকেই সেই বহুতল ছাড়তে চাননি।

১৭ ১৮

শেষ পর্যন্ত সকলকে উৎখাত করে সরকার। তাঁদের পুনর্বাসন দেওয়া হয়। যদিও তার পরেও ভেনেজুয়েলায় গৃহহীনের সংখ্যা কমেনি। সে দেশে আর্থিক অনটন, পরিকাঠামোর অভাবের কারণে ক্রমেই বেড়েছে বস্তি। বেড়েছে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা।

১৮ ১৮

২০১৮ সালের অগস্টে ভূমিকম্পে দারুণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ‘টাওয়ার অফ ডেভিড’। উপরের পাঁচটি তলা ভেঙে পড়ে। তার পর থেকে এই বহুতল আর বাসযোগ্য নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement