Woman Scientists of ISRO

ইসরোর সাত বীরাঙ্গনা! বড় বড় অভিযানে মিশে রয়েছে তাঁদের বুদ্ধিমত্তা, তালিকায় এক বঙ্গতনয়াও

ইসরোতে কাজ করেন ভারতের কয়েক জন বীরাঙ্গনা বিজ্ঞানীও। এই বিজ্ঞানীরা সাধারণ হয়েও অসাধারণ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২৩ ০৯:০৭
Share:
০১ ২১

ঘড়ির কাঁটায় ৬টা বেজে ৪ মিনিট। এই মাহেন্দ্রক্ষণেই বুধবার সন্ধ্যায় চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নেমেছিল ইসরোর স্বপ্নযান চন্দ্রযান-৩। পেটে ছ’চাকার রোভার প্রজ্ঞানকে নিয়ে পাখির পালকের মতো ভাসতে ভাসতে চাঁদের মাটি ছুঁয়েছে ল্যান্ডার বিক্রম। চাঁদের দক্ষিণমেরুতে ঘাঁটি গেড়ে ইতিহাসের পাতায় নাম তুলেছে ভারত।

০২ ২১

তৃতীয় চন্দ্রযানের সাফল্যের পর থেকে সারা দেশে উৎসবের মেজাজ। বিভিন্ন সমাজমাধ্যমের পাতা চন্দ্রময়। আতশবাজি পুড়িয়ে ভারতের সাফল্য উদ্‌যাপনে মেতেছেন সাধারণ মানুষ। আবেগে ভেসেছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। ভারতের সাফল্যে শুভেচ্ছাবার্তা ভেসে আসছে অন্যান্য দেশ থেকেও।

Advertisement
০৩ ২১

চন্দ্রযান উৎক্ষেপণ থেকে শুরু করে অবতরণ পর্যন্ত, প্রতি মুহূর্ত উৎকণ্ঠায় কাটিয়েছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। কারণ, এর আগে ২০১৯ সালে দ্বিতীয় চন্দ্রযানের ব্যর্থতার পর এক ধাক্কায় চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায় ইসরোর চাঁদের মাটি ছোঁয়ার স্বপ্ন। কান্নায় ভেঙে পড়েন ইসরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান কে শিবন। কিন্তু দমে যাননি ইসরোর বিজ্ঞানীরা। মনখারাপ সরিয়ে তৃতীয় চন্দ্রযানের কাজে হাত লাগায় ইসরো।

০৪ ২১

অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ইসরো নতুন করে চাঁদের মাটি ছোঁয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। ইতিহাস তৈরির লক্ষ্যে নতুন করে পথচলা শুরু করেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীরা।

০৫ ২১

চন্দ্রযান-৩ একদিনে তৈরি হয়নি। চাঁদের মাটিতে ল্যান্ডার অনায়াসে অবতরণ করলেও তা করাতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে এবং দিনরাত এক করে কাজ করতে হয়েছে ইসরোর বিজ্ঞানীদের। ইসরোতে কাজ করেন ভারতের কয়েক জন মহিয়সী বিজ্ঞানীও। এই বিজ্ঞানীরা সাধারণ হয়েও অসাধারণ।

০৬ ২১

প্রথমেই যে মহিলা বিজ্ঞানীর নাম এই তালিকাতে রয়েছে, তিনি ভিআর ললিথম্বিকা। ইসরোর ‘অ্যাডভান্সড লঞ্চার টেকনোলজি’র একজন বিশেষজ্ঞ।

০৭ ২১

ললিথম্বিকার জন্ম কেরলের তিরুঅনন্তপুরমে। তিনি ইসরো পরিচালিত ১০০টিরও বেশি অভিযানের অংশ। ইসরোতে কাজ করার আগে তিনি বিক্রম সারাভাই স্পেস সেন্টারের ডেপুটি ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করেছেন।

০৮ ২১

বর্তমানে ইসরোর ‘গগনযান’ অভিযানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন ললিথম্বিকা। যে অভিযানের উদ্দেশ্য ২০২৪ সালে ভারতীয় মহাকাশচারীদের মহাকাশের গভীরে পাঠানো। লঞ্চ ভেহিক্যাল টেকনোলজিতে তুমুল প্রজ্ঞার কারণে ‘অ্যাস্ট্রোনটিক্যাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া অ্যাওয়ার্ড অফ এক্সিলেন্স’ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে তাঁকে।

০৯ ২১

এ ছাড়াও ইসরোর বিজ্ঞানীদের মধ্যে রয়েছেন নন্দিনী হরিনাথ। প্রায় দু’দশক ধরে তিনি ইসরোর সঙ্গে জড়িত। এমনকি, ইসরোতেই নিজের কর্মজীবন শুরু করেছেন নন্দিনী। ২০ বছরের কর্মজীবনে, তিনি ইসরোর ১৪টিরও বেশি অভিযানের অংশ ছিলেন।

১০ ২১

ইসরোর ‘মম’ (মার্স অরবিটার মিশন) অভিযান বা মঙ্গলযান অভিযানের ‘ডেপুটি অপারেশন ডিরেক্টর’ ছিলেন নন্দিনী। বর্তমানে তিনি ইসরোর প্রজেক্ট ম্যানেজার এবং মিশন ডিজ়াইনার।

১১ ২১

ইসরোতে তিন দশকের বেশি সময় ধরে কাজ করে চলছেন ভানিতা মুথাইয়া। ভারতীয় গবেষণা সংস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ তিনি। ইসরোর বিভিন্ন কৃত্রিম উপগ্রহগুলির অভিযানের নেতৃত্বে রয়েছেন তিনি।

১২ ২১

চন্দ্রযান-২ অভিযানের প্রজেক্ট ডিরেক্টর ছিলেন ভানিতা। ইসরোর মঙ্গলযানের সঙ্গেও ওতপ্রোত ভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি।

১৩ ২১

ভানিতা ইসরোতে যোগ দিয়েছিলেন এক জন জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার পদে। অনেক দিনের কঠোর পরিশ্রমের পর তিনি প্রজেক্ট ডিরেক্টর হন। ভানিতাই ইসরোর প্রথম মহিলা প্রজেক্ট ডিরেক্টর। ২০০৬ সালে তাঁকে ‘অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া’র তরফে ‘সেরা মহিলা বিজ্ঞানী’র পুরস্কার দেওয়া হয়।

১৪ ২১

অনুরাধা টি কে ইসরোর এক জন অবসরপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী। যোগাযোগ সহায়ক উপগ্রহের বিশেষজ্ঞ হিসাবে তিনি দীর্ঘ দিন ইসরোর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। অবসর নেওয়ার আগে পর্যন্ত প্রায় ৩৪ বছর ইসরোতে কাজ করেন অনুরাধা।

১৫ ২১

অনুরাধার মতে, ইসরোতে মহিলা বিজ্ঞানীদের লিঙ্গবৈষম্যের মুখোমুখি হতে হয় না। অনুরাধাও এক জন প্রজেক্ট ডিরেক্টর হিসাবে কাজ করেছেন। তিনটি যোগাযোগ সহায়ক উপগ্রহ— জিস্যাট-৯, জিস্যাট -১৭ এবং জিস্যাট-১৮-এর উৎক্ষেপণে নেতৃত্ব দিয়েছেন অনুরাধা।

১৬ ২১

ইসরোর মহিলা বিজ্ঞানীদের মধ্যে রয়েছেন এক বঙ্গতনয়া। মৌমিতা দত্ত। কলকাতার কন্যা মৌমিতা এক জন পদার্থবিদ, যিনি ‘মম’ অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ২০০৬ সালে আমদাবাদের ‘স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারে’ যোগদান করেন মৌমিতা। হাইস্যাট, চন্দ্রযান-১ অভিযানের সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন। ‘মঙ্গলযান’ অভিযানে মৌমিতার অবদানের জন্য তাঁকে ইসরোর ‘টিম অফ এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়েছিল।

১৭ ২১

১৯৯৭ সাল থেকে ইসরোতে কাজ করছেন বিজ্ঞানী ঋতু করিধাল। মঙ্গলযানের সাফল্যের নেপথ্যে অন্যতম মাথা ছিল তাঁর।

১৮ ২১

২০২১ সালে ঋতুকে ‘জেন্ডার ইকুয়ালিটি অ্যাডভাইসরি কাউন্সিল’-এ নিয়োগ করা হয়েছিল। ২০০৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের কাছ থেকে ‘ইসরো ইয়ং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড’ পান তিনি।

১৯ ২১

মিনাল রোহিত ইসরোর বিজ্ঞানী এবং সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার। মঙ্গলযানের সাফল্যে তাঁরও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।

২০ ২১

‘নিরমা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি’ থেকে পড়াশোনা শেষ করেন মিনাল। গবেষণা শেষ করে ইসরোতে যোগ দেন তিনি। মঙ্গলযানের সিস্টেম মনিটরিং এবং মিথেন সেন্সরের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলির তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে ছিলেন মিনাল।

২১ ২১

উল্লেখযোগ্য ভাবে, দ্বিতীয় চন্দ্রযানের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন মিনাল। বর্তমানে, তিনি ইসরোতে ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টরের পদে রয়েছেন।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement