বিয়ের পর বহু বছর কেটে গিয়েছে। স্বামী এবং ছ’বছরের কন্যাকে নিয়ে তিন জনের সংসার তরুণীর। কাজ এবং সংসার নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন তিনি। কিন্তু একটি ফোন আসার পর সম্পর্কের ভিত নড়ে যায় তাঁর।
জ্যাকের (স্বামীর নাম পরিবর্তিত) সঙ্গে অ্যানার (তরুণীর নাম পরিবর্তিত) বয়সের পার্থক্য দু’বছরের। জ্যাক এবং ছ’বছরের কন্যাসন্তানকে ঘিরেই জীবন ছিল অ্যানার। কিন্তু হঠাৎ তাঁর কাছে একটি ফোন আসে।
অ্যানা জানতে পারেন, জ্যাক তাঁর অফিসের সহকর্মী পলার (নাম পরিবর্তিত) সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে রয়েছেন। অ্যানাকে এই কথাটি ফোন করে জানান পলার স্বামী অ্যান্ড্রু (নাম পরিবর্তিত)।
অ্যানা যখন জ্যাকের অফিসে যেতেন তখন তাঁর সঙ্গে প্রায়ই দেখা হত ৩০ বছর বয়সি পলার। দেখা হলে অ্যানার সঙ্গে সৌজন্যমূলক আচরণ করতেন পলা। তবে অ্যানার কন্যার প্রতি বিশেষ ভালবাসা ছিল পলার।
জ্যাকের সঙ্গে দেখা করার জন্য অ্যানা যখন তাঁর কন্যাকে নিয়ে যেতেন, তখন জ্যাক এবং অ্যানার কন্যাকে আদরে ভরিয়ে দিতেন পলা। পলার আচরণ দেখে কখনই সন্দেহ হত না অ্যানার।
৩৫ বছর বয়সি অ্যান্ড্রু যখন ফোন করে জ্যাকের সঙ্গে পলার পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে অ্যানাকে জানান, তখন মাথার উপর যেন আকাশ ভেঙে পড়ে তাঁর।
জ্যাক এবং পলা কবে, কোন হোটেলে দেখা করতে গিয়েছেন তা-ও বিস্তারিত ভাবে অ্যানাকে জানান অ্যান্ড্রু। খোঁজ নিয়ে সেই সব তথ্যের সত্যতা যাচাই করেন অ্যানা। জ্যাক যে তাঁর সহকর্মী পলার সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছেন, তা নিয়ে আর কোনও সন্দেহ ছিল না অ্যানার।
এর পর অ্যান্ড্রুর সঙ্গে মাঝেমধ্যেই ফোনে কথা হতে শুরু করে অ্যানার। একে অপরের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেন তাঁরা। বিশ্বাসভঙ্গের মাঝেও একে অপরের ভরসার জায়গা হয়ে ওঠেন তাঁরা।
জ্যাকের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন অ্যানা। বিচ্ছেদের পর কন্যার সমস্ত দায়িত্ব নিজের কাছে রাখতে চেয়েছিলেন অ্যানা। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় অ্যানার চাকরি।
কোভিড অতিমারি চলাকালীন চাকরি যায় অ্যানার। বেকার অবস্থায় বিচ্ছেদ হলে কোনও ভাবেই কন্যার সম্পূর্ণ দায়িত্ব পেতেন না তিনি। তাই কোনও আইনি পদক্ষেপ করেননি অ্যানা।
সময়ের উপর ভরসা রাখা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না অ্যানার। চাকরি চলে যাওয়ার পর পড়াশোনা সংক্রান্ত একটি প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন তিনি। টানা দু’বছর এই প্রশিক্ষণ দিয়েই উপার্জন করেন অ্যানা।
ক্রমশ অ্যান্ড্রুর সঙ্গে বন্ধুত্ব গভীর হতে থাকে অ্যানার। ফোনের যোগাযোগ পেরিয়ে বাইরেও দেখা করতে শুরু করেন তাঁরা। কখনও একসঙ্গে সিনেমা দেখতে যেতেন, কখনও বা কফি খাওয়ার জন্য দেখা করতেন।
অ্যানা সমাজমাধ্যমে জানান, অ্যান্ড্রুর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে তাঁর মনে। অ্যানা জানান, অ্যান্ড্রুর সঙ্গে একদিন বনভোজন করতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে মনের কথা ব্যক্ত করেন অ্যান্ড্রু।
অ্যানার প্রতি অনুভূতি জন্মেছে— বনভোজনে গিয়ে অ্যানাকে এমনটাই জানান অ্যান্ড্রু। সমাজমাধ্যমে অ্যানা জানান, বেশ কয়েক মাস ধরেই নিজেদের নিয়ে আলোচনা করেছেন তাঁরা। তাঁদের ভেঙে যাওয়া সংসার নিয়েও দু’এক কথা চালাচালি হয়েছিল তাঁদের মধ্যে।
অ্যানাও ভালবেসে ফেলেন অ্যান্ড্রুকে। প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন, এক সম্পর্ক থেকে আঘাত পাওয়ার পর একে অপরের কাছে আশ্রয় খুঁজে পেয়েছেন। তাই হয়তো সাময়িক ভাল লাগার অনুভূতি তৈরি হয়ে গিয়েছে। একে অপরের কাছ থেকে কিছুটা সময়ও চেয়ে নেন দু’জনে।
অ্যানা এবং অ্যান্ড্রু দু’জনেই নিশ্চিত হন যে তাঁরা একে অপরকে ভালবাসেন। অ্যানার সঙ্গে আলাপ হওয়ার ঘটনাকে সৌভাগ্যের সঙ্গে তুলনা করেন অ্যান্ড্রু।
অনুভূতি থাকলেও অ্যান্ড্রুর সঙ্গে সম্পর্কে জড়াবেন কি না, তা নিয়ে ভেবে দিশাহারা হয়ে পড়েন অ্যানা। তিনি ভবিষ্যতে অ্যান্ড্রুর সঙ্গে থাকতে চান। কিন্তু জ্যাকের সঙ্গে বিচ্ছেদের পরেই অ্যানা নতুন সম্পর্কে জড়াবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
স্বামীর প্রেমিকার স্বামীর প্রেমে পড়ে কি কোনও অপরাধ করে ফেলেছেন অ্যানা? নেটব্যবহারকারীদের মতামত জানতে সমাজমাধ্যমে পুরো ঘটনা বিস্তারিত ভাবে জানান তিনি।
যদিও নেটব্যবহারকারীদের অধিকাংশের মতে, মানুষের জীবনে সত্যিকারের ভালবাসা ভাগ্য করে মেলে। অনেকেই মনের মতো জীবনসঙ্গী পান না। অ্যানা যেন অ্যান্ড্রুর সঙ্গে সম্পর্কে জড়াতে দ্বিধাবোধ না করেন, সেই পরামর্শই অ্যানাকে দিয়েছেন নেটব্যবহারকারীদের একাংশ।