বয়স লুকিয়ে তৃতীয় বার বিয়ে করার জন্য বিউটি পার্লারে গিয়ে মেকআপ করিয়ে ৩০ বছরের যুবতীর বেশে নিজেকে সাজিয়েছিলেন এক মহিলা।
পাত্রের বাড়ির লোক ঘুণাক্ষরেও টের পাননি পাত্রী আসলে তিরিশের যুবতী নন, চুয়ান্নর প্রৌঢ়া! কিন্তু বিয়ের পর আধার কার্ডই ধরিয়ে দিয়েছিল তাঁর আসল বয়স এবং পরিচয়। ঘটনাটি অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি জেলার।
তামিলনাড়ুর তিরুভাল্লুর জেলার বাসিন্দা ইন্দ্রাণী তাঁর বিবাহবিচ্ছিন্ন ছেলের জন্য পাত্রী খুঁজছিলেন। ছ’বছর ধরে পাত্রী খুঁজছিলেন তিনি। অবশেষে এক ঘটকের সহযোগিতায় অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি জেলায় এক পাত্রী শরণ্যার খোঁজ পান।
ফোনে কথা হলেও পাকা দেখার জন্য পাত্রীর বাড়িতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ইন্দ্রাণী। সেই মতো পাত্রীর বাড়িতে জানিয়েও দেওয়া হয় তাঁদের তরফ থেকে।
ঘটকের মাধ্যমে নিজেকে তিরিশের যুবতী বলে পরিচয় দিলেও তাঁকে সামনাসামনি দেখে যাতে পাত্রর বাড়ির লোকেরা বয়স ধরতে না পারেন, তাই পার্লারে গিয়ে মেকআপ করিয়ে নিজেকে তিরিশের যুবতী রূপে সাজিয়ে আনেন।
পাকা কথা হয়ে যাওয়ার পর ইন্দ্রাণীর ছেলের সঙ্গে শরণ্যার বিয়েও হয়। কিন্তু বিয়ের কয়েক দিন পর থেকেই সমস্যা শুরু হয়। তাঁর নামে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য শাশুড়ি এবং স্বামীর উপর চাপ দিতে শুরু করেন শরণ্যা।
এমনকি ইন্দ্রাণীকে বাড়ি থেকে বারও করে দেন তিনি। স্ত্রীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তাঁর স্বামী সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য শরণ্যার কাছে আধার কার্ড চান।
আধার কার্ড হাতে পাওয়ার পরই চমকে ওঠেন ইন্দ্রাণীর ছেলে। প্রযত্নের (কেয়ার অব) জায়গায় রবি বলে এক জনের নাম দেখতে পান তিনি। কিছু একটা গন্ডগোল আছে আঁচ করে ইন্দ্রাণীর ছেলে পুলিশের দ্বারস্থ হন।
শরণ্যার নামে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্তে নামে। তদন্তে চমকে দেওয়ার মতো তথ্য উঠে আসে। আধার কার্ডে প্রযত্নের জায়গায় যে রবির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি আসলে শরণ্যার স্বামী।
শরণ্যার দুই মেয়েও রয়েছে। তাঁদের বিয়েও হয়ে গিয়েছে। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর মায়ের কাছে ফিরে আসেন শরণ্যা। রবির নামে মামলা করে ১০ লক্ষ টাকা আদায় করেও আর্থিক টানাপড়েন কিছুতেই মিটছিল না।
কী ভাবে অর্থ এবং সম্পত্তি আয় করা যায় তা নিয়ে পরিকল্পনা শুরু করেন। তখনই মাথায় আসে দ্বিতীয় বিয়ের কথা। বিবাহবিচ্ছিন্ন পাত্রের খোঁজ করা শুরু করেন ঘটকের মাধ্যমে।
সুব্রহ্মণ্যম নামে এক ব্যক্তির খোঁজও পান। সুব্রহ্মণ্যমকে বিয়ে করার সময় নিজেকে সন্ধ্যা নামে পরিচয় দিয়েছিলেন শরণ্যা। তাঁকে বিয়ে করেন।
১১ বছর সংসার করার পর অতিমারির সময়ে স্বামীর ঘর ছেড়ে মায়ের কাছে ফিরে আসেন।
ঘটকের মাধ্যমেই ইন্দ্রাণীর ছেলের খোঁজ পান তিনি। নিজেকে শরণ্যা নামে পরিচয় দেন ইন্দ্রাণীদের কাছে। প্রতারণার অভিযোগে ইতিমধ্যেই শরণ্যাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।