তীব্র দাবদাহে জ্বলছে ইউরোপ এবং আফ্রিকার একাংশ। আক্ষরিক অর্থেই! দাবানলের গ্রাসে একরের পর একর জঙ্গল।
এখনও পর্যন্ত পতুর্গাল, স্পেন, ফ্রান্স, গ্রিসের মতো ইউরোপীয় দেশে দাবানলে ভস্মীভূত হাজার হাজার একর। উত্তর আফ্রিকার মরক্কোর একাংশেও জ্বলছে আগুন।
দাবানল নেভাতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজে নেমে পড়েছেন দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপের ওই চার দেশের পাশাপাশি মরক্কোর দমকলকর্মীরা। তবে পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের দাবি, আগুনে গ্রাসে চলে গিয়েছে ১০ হাজার হাজার হেক্টর জঙ্গলের গাছপালা। মৃত্যু হয়েছে শত শত পশুপ্রাণীর।
চলতি গ্রীষ্মে পর্তুগাল এবং স্পেনে এটি দ্বিতীয় দাবদাহ চলছে। পর্তুগালে তাপমাত্রার পারদ ছুঁয়েছে ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। স্পেনে তা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দাবদাহ এড়াতে পর্তুগাল এবং স্পেনের জঙ্গল সংলগ্ন হাজার হাজার স্থানীয় বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানোর কাজও চলছে।
পর্তুগালে আপাতত এই ‘জ্বলন্ত’ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার আশা নেই। সে দেশের আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস, আগামী সপ্তাহের আগে পর্যন্ত পর্তুগালের তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নামবে না।
চলতি বছরের গোড়া থেকে জুন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত পর্তুগালের ৯৮,০০০ একর জঙ্গল দাবানলে ভস্মীভূত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর দ্য কনজারভেশন অব নেচার অ্যান্ড ফরেস্টস। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় তিন গুণ।
পর্তুগালের মতোই বেহাল দশা স্পেনেরও। দাবানলের জেরে সে দেশ জুড়ে সতর্কতা জারি করেছে আবহওয়া দফতর। স্পেনের কয়েকটি অঞ্চলে তাপমাত্রার পারদ ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত চড়তে পারে বলে জানানো হয়েছে।
স্পেনে দাবানলের কারণে ক্ষয়ক্ষতি সামলাতে দমকলের পাশাপাশি দেশের সেনাবাহিনীর ৬০০টির বেশি আপৎকালীন ইউনিটকে কাজে নামানো হয়েছে। শুধুমাত্র উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলেই ৩,৬০০ হেক্টর জমি দাবানলের গ্রাসে চলে গিয়েছে। স্পেনের বহু এলাকায় হেলিকপ্টারের সাহায্যে জল ঢেলে দাবানল নেভানোর কাজে নেমেছে দমকলবাহিনী।
ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ২৭,০০০ একর এলাকায় দাবানল ছড়িয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়র্টাস। রবিবার দুপুরে ওই অঞ্চলের ১৪ হাজারেও বেশি বাসিন্দাকে অন্যত্র সরানো হয়েছে।
স্পেন, ফ্রান্সের পর এ বার ব্রিটেনেরও দাবানল ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা। গ্রিস, মরক্কো ছাড়াও চলতি সপ্তাহে ক্রোয়েশিয়া এবং হাঙ্গেরিতেও দাবানল ছড়িয়েছে।
দাবানলের জেরে ক্ষয়ক্ষতির ছাড়াও তীব্র দাবদাহে শুধুমাত্র স্পেনেই পাঁচ দিনে (১০-১৫ জুলাই) ৩৬০ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে স্পেনের একটি চিকিৎসাকেন্দ্র।