ভারতীয় রেলের ১৬৬ বছরের ইতিহাসে এই ঘটনা এর আগে কখনও ঘটেনি। ঘটল গত বৃহস্পতিবার (৩১ অগস্ট)।
শুক্রবার কেন্দ্রের তরফে ভারতীয় রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং মুখ্য প্রশাসনিক আধিকারিক (সিইও) হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছে জয়া বর্মা সিন্হাকে। এই প্রথম ভারতীয় রেলওয়ে বোর্ডের শীর্ষ পদে এলেন কোনও মহিলা।
রেলওয়ে বোর্ড গঠিত হয় ১১৮ বছর আগে, ১৯০৫ সালে। ভারতীয় রেলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলি নেওয়ার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করে এই বোর্ড।
ভারতের মতো জনবহুল দেশে জালের মতো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে রেলপথ। তাই রেলকে ‘দেশের লাইফলাইন’ও বলা হয়ে থাকে। সেই রেলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক সংস্থার প্রধান হিসাবে এক মহিলার স্থান পাওয়াকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
অবশ্য নিজের যোগ্যতাতেই এই স্থানে বসেছেন জয়া। তবে রেল প্রশাসনের একাধিক উচ্চ পদে নারীদের নিয়ে এসে লিঙ্গ সচেতনতামূলক বার্তাও রেল মন্ত্রক দিতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে
জয়া এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। ১৯৮৮ সালে তিনি ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ট্র্যাফিক সার্ভিস (আইআরটিএস)-এ যোগ দেন।
এত দিন তিনি রেলওয়ে বোর্ডের অপারেশনাল এবং বাণিজ্যিক উন্নয়নের দিকটি দেখভাল করার দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। বৃহস্পতিবার তিনি রেলওয়ে বোর্ডের প্রধান হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন।
রেলওয়ে বোর্ডের প্রধান হিসাবে এখন থেকে সারা দেশে পণ্যবাহী এবং যাত্রিবাহী ট্রেনের চলাচল সংক্রান্ত যাবতীয় দিক খতিয়ে দেখবেন জয়া।
এত দিন রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন অনিলকুমার লাহোটি। ৩১ অগস্ট তিনি অবসরগ্রহণ করেন।
আপাতত এক বছরের জন্য এই পদে বসছেন জয়া। আগামী ৩১ অগস্ট, ২০২৪ এই পদ থেকে অবসরগ্রহণ করতে পারেন তিনি। সামনের বছর ১ অক্টোবর ভারতীয় রেলে তাঁর কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।
তবে রেল সূত্রে খবর, যোগ্য এই অফিসারকে পুনর্নিয়োগ করা হতে পারে। এর আগে রেলের তিনটি জ়োনে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে এসেছেন জয়া।
জয়া কাজ করেছেন উত্তর রেল, দক্ষিণ-পূর্ব রেল এবং পূর্ব রেলে। পরে ঢাকার ভারতীয় দূতাবাসে রেলের পরামর্শদাতা হিসাবেও কাজ করেছেন তিনি।
কাজের সূত্রে জয়ার একটি বঙ্গযোগও রয়েছে। কলকাতা থেকে ঢাকা পর্যন্ত মৈত্রী এক্সপ্রেস চালু করার নেপথ্যে অনেকেই তাঁর ভূমিকার কথা স্বীকার করেন।
তা ছাড়া দীর্ঘ দিন পূর্ব রেলের ডিভিশনাল ম্যানেজার হিসাবে শিয়ালদহতেও কর্মরত ছিলেন জয়া। বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনার পরেও জয়াকে ঘিরে সংবাদমাধ্যমে চর্চা শুরু হয়েছিল।
করমণ্ডলকাণ্ডের নেপথ্যে কোন কারণ ছিল, রেলের তরফে তার ব্যাখ্যা দিয়ে জয়া জানিয়েছিলেন, সিগন্যালিং ব্যবস্থায় গোলমালের কারণেই বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনা হয়। এই দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছিল ৩০০ জনের।