চলতি বছরের গোড়ায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘পাঠান’। শাহরুখ খানের বিপরীতে জুটি বেঁধে অভিনয় করা দীপিকা পাড়ুকোনের এই ছবি বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে এক হাজার কোটি টাকার ক্লাবে নাম লিখিয়েছে।
চলতি বছরে মুক্তিপ্রাপ্ত শাহরুখের দ্বিতীয় ছবি ‘জওয়ান’-এ মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন দক্ষিণী অভিনেত্রী নয়নতারা। এই ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় দীপিকাকে। বক্স অফিসে বিশ্ব জুড়ে ‘জওয়ান’ ছবিটি এক হাজার কোটি টাকার ক্লাবে নাম লিখিয়েছে।
তবে দীপিকা, নয়নতারা নন, বলিউডের অন্য এক অভিনেত্রীর ছবি বক্স অফিসে দু’হাজার কোটি টাকার সমতুল ব্যবসা করে নজির গড়ে তুলেছিল।
তিন দশক ধরে বলিউডে নিজের কেরিয়ার গড়ে তোলেন ফতিমা রশিদ। বলিপাড়ায় নার্গিস নামেই পরিচিত তিনি।
১৯৩৫ সালে মাত্র ছ’বছর বয়সে ‘তলাশ-এ-হক’ নামে হিন্দি ছবিতে একটি ছোট চরিত্রে অভিনয় করেন নার্গিস। তবে ১৯৪২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘তমান্না’ ছবির মাধ্যমে বলিপাড়ায় আত্মপ্রকাশ করেন তিনি।
১৯৪৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘তকদির’ ছবিতে প্রথম মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান নার্গিস। তার ছ’বছর পর কেরিয়ারে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছন অভিনেত্রী। একই বছরে ‘আন্দাজ’ এবং ‘বরসাত’ ছবিতে অভিনয় করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি।
কেরিয়ারের ঝুলিতে একের পর এক সফল ছবি ভরতে শুরু করেন নার্গিস। ১৯৫৮ সালে বলি অভিনেতা সুনীল দত্তের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন অভিনেত্রী। তবে তাঁর এক বছর আগে বক্স অফিস কাঁপিয়ে দিয়েছিল তাঁর একটি ছবি।
নার্গিস বলিপাড়ার প্রথম অভিনেত্রী যাঁর ছবি বক্স অফিসে দু’হাজার কোটি টাকার সমতুল ব্যবসা করতে সফল হয়েছিল।
১৯৫৭ সালে মেহবুব খানের পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘মাদার ইন্ডিয়া’ ছবিটি। নার্গিসের পাশাপাশি এই ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় সুনীল দত্ত, রাজেন্দ্র কুমার এবং রাজ কুমারের মতো বলিউডের সেই সময়ের প্রথম সারির তারকাদের।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ‘মাদার ইন্ডিয়া’ ছবিটি তৈরি করতে ৬০ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়। ছবিটি মুক্তির পর বক্স অফিস থেকে সাড়ে চার কোটি টাকার ব্যবসা করে।
ছবি বিশেষজ্ঞদের দাবি, ১৯৫৭ সালে ‘মাদার ইন্ডিয়া’ যে সাড়ে চার কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল সাম্প্রতিক কালে তাপ্রায় দু’হাজার কোটি টাকার সমতুল্য।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, মুক্তির প্রথম দিনে ‘মাদার ইন্ডিয়া’ ছবিটি বক্স অফিসে এক লক্ষ টাকা উপার্জন করে।
বলিপাড়ার একাংশের দাবি, ১৯৫৭ সালে যে ছবি মুক্তির প্রথম দিনে এক লক্ষ টাকার ব্যবসা করে তা সাম্প্রতিক কালে মুক্তি পেলে মুক্তির প্রথম দিনে বিশ্ব জুড়ে ৮ থেকে ৯ কোটি টাকার ব্যবসা করে ফেলত।
নার্গিসের কেরিয়ারে ‘মাদার ইন্ডিয়া’ ছবিটি সাফল্যের নয়া পালক যোগ করে। শুধুমাত্র ‘মাদার ইন্ডিয়া’ই নয়, ১৯৫১ সাল থেকে শুরু করে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত নার্গিস অভিনীত অধিকাংশ ছবিই বক্স অফিসে ভাল ব্যবসা করে।
বিয়ের পর অভিনয়জগৎ থেকে ধীরে ধীরে নিজেকে সরিয়ে ফেলতে শুরু করেন নার্গিস। স্বামী, তিন সন্তান এবং সংসার নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন তিনি।
১৯৮০ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হন নার্গিস। এক বছর চিকিৎসা চলার পর ৫১ বছর বয়সে মারা যান তিনি।
নার্গিস মারা যাওয়ার পরের দিন তাঁর পুত্র সঞ্জয় দত্তের প্রথম ছবি ‘রকি’র প্রিমিয়ার হয়। বলিপাড়া সূত্রে খবর, প্রিমিয়ার চলাকালীন দর্শকাসনে মায়ের জন্য একটি সিট ফাঁকা রেখেছিলেন সঞ্জয়।