প্রায় দু’দশকের অপেক্ষার অবসান। বড় পর্দায় ফিরছেন ‘হেরা ফেরি’র বিখ্যাত রাজু-শ্যাম-বাবু ভাইয়ারা। হিন্দি সিনেমাজগতে কমেডি ঘরানার ছবির ক্ষেত্রে মাইলফলক গড়ে তুলেছিল ‘হেরা ফেরি’। খুব শীঘ্রই তৃতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হচ্ছেন অক্ষয় কুমার, সুনীল শেট্টি এবং পরেশ রাওয়াল। খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করবেন সঞ্জয় দত্ত।
প্রায় ২৩ বছর আগেকার ঘটনা। দেবীপ্রসাদের নাতনি রিঙ্কুকে অপহরণ করা হয়। এই কাহিনিকে ঘিরে তৈরি হয় ‘হেরা ফেরি’ ছবির প্রথম পর্ব। রিঙ্কুর চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল অ্যালেক্সিয়া আনরাকে। কিন্তু এখন কী করছেন সেই অভিনেত্রী? বলিপাড়ার সঙ্গে এখনও যুক্ত রয়েছেন না কি ভিড়ের মধ্যে তিনিও বলিউড থেকে হারিয়ে গিয়েছেন?
তিন বছর বয়স থেকেই মডেলিংয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল অ্যালেক্সিয়ার। মাঝে মধ্যেই খুদেদের মডেলিং শোয়ে অংশগ্রহণ করতেন তিনি। বিভিন্ন বিজ্ঞাপনেও কাজ করতেন তিনি।
অ্যালেক্সিয়ার বাবা-মা চাইতেন না যে তাঁদের মেয়ে বড় পর্দায় অভিনয় করুন। অভিনয় নিয়ে কেরিয়ারে এগোনোর ইচ্ছাও ছিল না অ্যালেক্সিয়ার। ১২ বছর বয়স পর্যন্ত ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। তার পর পড়াশোনায় মন দেন ‘হেরা ফেরি’র রিঙ্কু।
অবশ্য অ্যালেক্সিয়ার প্রথম অভিনয় ‘হেরা ফেরি’ ছবিতে নয়। ১৯৯৬ সালে প্রথম বড় পর্দায় কাজ করেন তিনি। ‘আভভাই শানমুগি’ নামের তামিল ছবিতে কমল হাসনের সঙ্গে কাজ করেছিলেন তিনি।
এ ছাড়া তব্বুর সঙ্গে একটি তামিল ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় অ্যালেক্সিয়াকে। ১৯৯৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘থায়িন মানিকোড়ি’ ছবিতে কাজ করেছিলেন অ্যালেক্সিয়া।
শুধু দক্ষিণী সিনেমাজগতেই নয়, হিন্দি ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন অ্যালেক্সিয়া। ১৯৯৮ সালে ‘হত্যারা’ নামের একটি হিন্দি ছবিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। মিঠুন চক্রবর্তী অভিনীত এই ছবিতে ক্যামিয়ো চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অ্যালেক্সিয়া।
‘হেরা ফেরি’ ছবির শুটিং নিয়ে এক সাক্ষাত্কারে মুখ খুলেছিলেন অ্যালেক্সিয়া। তিনি বলেন, ‘‘তখন আমি পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। গরমের ছুটি পড়েছিল বলেই আমি শুটিংয়ের জন্য সময় বার করতে পেরেছিলাম। স্কুল খোলা থাকলে আমি এই ছবিতে অভিনয় করতে পারতাম না।’’
স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে অ্যালেক্সিয়া স্কলারশিপ নিয়ে ফ্রান্সে পড়তে চলে যান। বিবিএ পড়ে আবার ভারতে ফিরে আসেন তিনি।
ভারতে ফিরে আসার পর বিজ্ঞাপন সংস্থার সঙ্গে কিছু দিন কাজ করেন অ্যালেক্সিয়া। তার পর সেই চাকরি ছেড়ে একটি বেসরকারি সংস্থায় পাঁচ বছর কাজ করেন তিনি।
পত্রিকার জন্যও লেখালিখি শুরু করেছিলেন অ্যালেক্সিয়া। ২০০৭ সালে একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। তাঁর মা-ই তাঁকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে জোর করেছিলেন।
চাকরি ছাড়ার দু-তিন বছরের মধ্যে অ্যালেক্সিয়া ছোটখাট ব্যবসা করতে শুরু করেছিলেন।
তামিলনাড়ু পুলিশ কী ভাবে কাজ করে, তাদের প্রতিটি দফতরের দায়িত্ব নিয়ে খুঁটিনাটি ভিডিয়ো করে তুলে ধরতেন অ্যালেক্সিয়া।
বর্তমানে চেন্নাইয়ের বাসিন্দা অ্যালেক্সিয়া। পরিবেশ নিয়ে কাজ করতে ভাল লাগে বলে বর্জ্য পদার্থকে কী ভাবে কাজে লাগানো যায় তা নিয়েই কাজকর্ম শুরু করেছেন তিনি। নিজস্ব সংস্থাও প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি।
অভিনয় জগতে ফেরার কোনও পরিকল্পনা নেই অ্যালেক্সিয়ার। এখন মাঝেমধ্যে বিজ্ঞাপনের জন্য কাজ করলেও সংস্থার কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকেন তিনি।
ইনস্টাগ্রামে বেশ সক্রিয় অ্যালেক্সিয়া। তাঁর অনুরাগী সংখ্যাও নজরে আসার মতো। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুরাগী সংখ্যা ২৩ হাজারের গণ্ডি পেরিয়ে গিয়েছে।