N. Chandrababu Naidu Arrest

৩৭১ কোটির দুর্নীতি, ‘নাটের গুরু’ চন্দ্রবাবু? কেন গ্রেফতার অন্ধ্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী?

স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন চন্দ্রবাবু। অভিযোগ, তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন অন্ধ্রপ্রদেশের সরকারি সংস্থার ৩৭১ কোটি টাকার তহবিল নয়ছয় হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:০০
Share:
০১ ২০

শনিবার ভোরবেলা অন্ধ্রপ্রদেশের সিআইডি গ্রেফতার করেছে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নায়ডুকে। তাঁর পুত্র নারা লোকেশকে প্রাথমিক ভাবে আটক করা হয়েছিল। পরে তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়।

০২ ২০

স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন চন্দ্রবাবু। অভিযোগ, তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন অন্ধ্রপ্রদেশের সরকারি সংস্থা ‘স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন’-এর প্রায় ৩৭১ কোটি টাকার তহবিল নয়ছয় হয়েছে।

Advertisement
০৩ ২০

অন্ধ্রের সিআইডি প্রধান এন সঞ্জয় জানিয়েছেন, তেলুগু দেশম পার্টির নেতা চন্দ্রবাবু দুর্নীতি মামলার অন্যতম মূল অভিযুক্ত। তিনি হাজতের বাইরে থাকলে তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারেন।

০৪ ২০

প্রথম দফায় ১৯৯৫ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন চন্দ্রবাবু। পরে ২০১৪ সালে আবার ক্ষমতায় আসেন। এই দফায় ২০১৯ সাল পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি।

০৫ ২০

কেন চন্দ্রবাবুকে গ্রেফতার করা হল? স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনে ঠিক কী ভাবে টাকা নয়ছয় করা হয়েছিল? আর কারা কারা এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ?

০৬ ২০

২০১৪ সালে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার বিবৃতি জারি করে সিমেন্স অ্যান্ড ডিজাইন টেকের সঙ্গে যৌথ অংশীদারিত্বে একটি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিল। ৩,৩০০ কোটির সেই প্রকল্প থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত।

০৭ ২০

প্রকল্পটির কাজে ৯০ শতাংশ অনুদান হিসাবে দেওয়ার কথা ছিল সিমেন্স অ্যান্ড ডিজাইন টেক নামের সংস্থাটির। সরকার বাকি ১০ শতাংশ খরচ করবে বলেছিল। এ বিষয়ে একটি মউ স্বাক্ষর করা হয়। চন্দ্রবাবু ছাড়াও তাতে সই করেছিলেন টিডিপির রাজ্য সভাপতি কে অৎচন্নায়ডু।

০৮ ২০

অভিযোগ, ওই মউ স্বাক্ষরে সিমেন্স অ্যান্ড ডিজাইন টেকের ৯০ শতাংশ অবদানের উল্লেখমাত্র ছিল না। এমনকি, অন্ধ্রপ্রদেশের স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন গঠিতই হয়েছিল নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে।

০৯ ২০

প্রকল্পের খাতে সরকার তাদের তহবিল থেকে ৩৭১ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। তার অধিকাংশই ঘুরপথে চুরি গিয়েছে বলে অভিযোগ সিআইডির। ওই টাকার সামান্য অংশ আসলে উন্নয়নের কাজে লাগানো গিয়েছিল।

১০ ২০

সিআইডির দাবি, তদন্তের সময় এই বিপুল পরিমাণ অর্থের কোনও যোগ্য রসিদ মেলেনি। টাকা নয়ছয় করা হয়েছিল শেল কোম্পানি বা ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে। চন্দ্রবাবু নিজে দুর্নীতির টাকা পেয়েছিলেন।

১১ ২০

অ্যাডিশনাল ডিজিপি বলেছেন, ‘‘স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন এবং বিভিন্ন সংস্থাগুলির প্রধানদের দিয়ে এই দুর্নীতির তদন্ত শুরু হয়েছিল। কিন্তু পরে জানা গিয়েছে, গোটা দুর্নীতিকাণ্ডের ‘নাটের গুরু’ অন্য।’’

১২ ২০

চন্দ্রবাবুর বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, তিনিই সরকারি তহবিল থেকে টাকা নিয়ে ভুয়ো সংস্থাগুলির অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত করেছিলেন। নিজেও গুনে গুনে টাকা নিয়েছিলেন।

১৩ ২০

সিআইডি-র আরও দাবি, সে সময়ের সিনিয়র আইএএস অফিসারেরা অনেকেই সরকারের এই তহবিল স্থানান্তরের বিরোধিতা করেছিলেন। এমনকি, তৎকালীন মুখ্যসচিব আইওয়াইআর কৃষ্ণ রাও-ও বিষয়টিকে ভাল চোখে দেখেননি। কিন্তু অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেই সব হয়েছে।

১৪ ২০

দুর্নীতির ওই ৩৭১ কোটি টাকা কার কার অ্যাকাউন্টে গিয়েছে, তার খোঁজ করছে সিআইডি। ডিজাইন টেকের তৎকালীন ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিকাশ বিনায়ক খানবিলকরের কাছ থেকে অনেক নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এই দুর্নীতির অন্যতম অভিযুক্ত তিনি।

১৫ ২০

সিআইডি জানিয়েছে, দুর্নীতির শিকড় বহু দূর বিস্তৃত। এই তদন্তের জন্য তাই অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান হওয়ায় চন্দ্রবাবুকে ‘প্রভাবশালী’ বলেও উল্লেখ করেছে রাজ্যের গোয়েন্দা বিভাগ।

১৬ ২০

সিআইডি ছাড়াও এই দুর্নীতির তদন্তে নেমেছে ইডি, আয়কর বিভাগ এবং জিএসটি ইন্টেলিজেন্স উইং। তবে সিমেন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল সফ্‌টওয়্যার ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড গোটা বিষয়টি থেকে নিজেদের দূরত্ব তৈরি করছে।

১৭ ২০

সংস্থার তরফে অভ্যন্তরীণ কমিটি তৈরি করে স্বতন্ত্র ভাবে তদন্ত করা হয়েছে। প্রাক্তন ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুমন বোসের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেছে সংস্থা। তাদের দাবি, সুমন নিজের দায়িত্বে যা করার করেছেন। এর সঙ্গে সংস্থা যুক্ত নয়।

১৮ ২০

সিআইডি সূত্রে দাবি, ৩৭১ কোটির মধ্যে মাত্র ৫৮.৮ কোটি টাকা সিমেন্সকে দেওয়া হয়েছিল। বাকি ২৪১ কোটি টাকা ঘুরপথে নয়ছয়ের অভিযোগ রয়েছে সুমন এবং বিকাশের বিরুদ্ধে।

১৯ ২০

চলতি বছরের শুরুর দিকে ইডি সুমন, বিকাশ-সহ সিমেন্সের একাধিক আধিকারিককে গ্রেফতার করেছে। এ ছাড়া, প্রায় ৩১ কোটি ২০ লক্ষ টাকার সম্পত্তিও দুর্নীতির অভিযোগে বাজেয়াপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।

২০ ২০

শনিবার গ্রেফতারির পর চন্দ্রবাবু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কোনও দোষ করিনি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ তাঁকে যে গ্রেফতার করা হতে পারে, তা আগেই আন্দাজ করেছিলেন চন্দ্রবাবু। কিছু দিন আগে সেই আশঙ্কা তিনি প্রকাশও করেছিলেন।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement