২০২০ সালের ভয়াবহতা আবার ভেসে উঠল বর্ধমানবাসীর চোখের সামনে। এ বার বর্ধমান রেলস্টেশন চত্বরের জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ল। প্রত্যক্ষদর্শী ও অন্যান্য সূত্রের দাবি ইতিমধ্যেই তিন জনের প্রাণ হারানোর খবর ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়।
আহতের সংখ্যাও অন্তত ২৭ জন। যদিও রেল কর্তৃপক্ষের তরফে কেবল বেশ অনেক জনের আহত হওয়ার খবর জানানো হয়েছে।
বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ রীতিমতো জনজোয়ারের মধ্যেই হঠাৎ এই দুর্ঘটনা। এখনও এই ঘটনার কারণ পরিষ্কার নয় কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আরপিএফ এবং দমকল পৌঁছে যায় স্টেশন চত্বরে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চালিয়েছে উদ্ধারকাজ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বর্ধমান স্টেশনের ২ এবং ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝে যে জলের ট্যাঙ্কটি ছিল, আচমকাই তা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। কী করে ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ল, তা এখনও পরিষ্কার নয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, তিন জনের মৃত্যুর পাশাপাশি আহত হয়েছেন অন্তত ২৭ জন।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার খবর পেয়েছি। আমরা ওখানেই যাচ্ছি। কী করে ঘটল, তা এখনও পরিষ্কার নয়। আহতদের দ্রুত বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করানো হয়েছে। দুর্ঘটনার জেরে ট্রেন চলাচল কিছুটা ব্যাহত হয়েছে।’’
কৌশিক অবশ্য যাত্রীর মৃত্যুর খবর স্বীকার করেননি। এ ব্যাপারে তাঁর কাছে এখনও কোনও সরকারি ভাবে নিশ্চিত খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ দুই এবং তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝখানে একটি ওভারহেড জলের ট্যাঙ্ক হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। সেই সময় দু’টি প্ল্যাটফর্মেই গাদাগাদি ভিড়।
আচমকা ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ায় মুহূর্তে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। জানা যাচ্ছে, ওই প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের বসার একটি শেড ছিল। ট্যাঙ্কটি সেই শেডের উপর পড়ে যায়। তাতেই বিপত্তি।
প্রচণ্ড হুড়োহুড়ির মধ্যে কয়েক জনকে মাটিতে পড়ে যেতেও দেখেন তিনি। তাঁর দাবি, হুড়োহুড়িতে বহু লোক আহত হয়েছেন। এর আগে ২০২০ সালে এই বর্ধমান রেলস্টেশনেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছিল একটি পুরনো বারান্দা। এতে দু’জন আহত হয়েছিলেন।
সেই ঘটনার পর স্টেশনের সামগ্রিক রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। কিন্তু এ বার জলের ট্যাঙ্ক আচমকা ভেঙে পড়ার ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে গেল, বর্ধমান রয়েছে বর্ধমানেই।