Russian Population

হিটলারের পথে হাঁটতে চাইছে রাশিয়া, চিন, জাপান! মহিলাদের উদ্দেশে পুতিনের ঘোষণায় কিসের ইঙ্গিত?

রাশিয়ায় দীর্ঘ দিন ধরেই জন্মহার তলানিতে। জনসংখ্যার উপর তার প্রভাব পড়ছে। গত কয়েক বছরে রাশিয়ার জনসংখ্যা চোখে পড়ার মতো কমেছে। এই পরিস্থিতিতে হাল ধরতে আসরে নেমেছেন পুতিন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:০৩
Share:
০১ ২২

‘হাম দো হামারে দো’। ভারতে পরিবার পরিকল্পনায় এই ধারণা প্রচলিত বহু বছর ধরে। সরকারের তরফেও দেশের মানুষকে দুইয়ের বেশি সন্তান ধারণ না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে বার বার।

০২ ২২

ভারত জনবহুল একটি দেশ। জনসংখ্যায় ভারত এখন বিশ্বের বাকি সমস্ত দেশকে ছাপিয়ে গিয়েছে। ২০২১ সালের জনগণনায় ভারতের জনসংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে ১৪০ কোটিতে।

Advertisement
০৩ ২২

এত বড় জনসংখ্যাকে কেউ বলেন আশীর্বাদ তো কেউ বলেন অভিশাপ। অনেকেই মনে করেন, বিপুল জনসংখ্যার চাপ কাটিয়ে দেশের অগ্রগতি কঠিন।

০৪ ২২

কিন্তু রাশিয়ায় অঙ্ক অন্যরকম। সেখানে জনসংখ্যা কমাতে নয়, বৃদ্ধি করতে চায় সরকার। তার ফতোয়াও জারি হয়ে গিয়েছে। রাশিয়ান মহিলাদের জন্য বিশেষ অনুরোধও করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

০৫ ২২

দেশের মহিলাদের উদ্দেশে সম্প্রতি একটি অদ্ভুত আর্জি জানিয়েছেন পুতিন। প্রত্যেককে কমপক্ষে আটটি সন্তানের জন্ম দিতে বলেছেন তিনি। বেশি সংখ্যক সন্তান জন্ম দেওয়াই দেশের স্বাভাবিক রীতি করে তুলতে চান বলেও জানিয়েছেন পুতিন।

০৬ ২২

গত মঙ্গলবার মস্কোয় রাশিয়ান পিপ্‌লস কাউন্সিলে ভাষণ দেওয়ার সময়ে মহিলাদের কাছে এই আর্জি জানান পুতিন। দেশের পরিবারগুলিকে তিনি বড় করে তুলতে চান। ছোট পরিবার চান না।

০৭ ২২

এ প্রসঙ্গে পুতিন দেশের মহিলাদের অতীতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। রাশিয়ায় কয়েক প্রজন্ম আগেও মহিলারা সাত থেকে আটটি করে সন্তানের জন্ম দিতেন। পরিবারে ছিল একসঙ্গে অনেক প্রজন্মের বাস।

০৮ ২২

অতীতে এক পরিবারে সাত-আটটি করে সন্তানের যে রীতি প্রচলিত ছিল, তার অন্যতম কারণ চিকিৎসা পরিষেবার ঘাটতি। চিকিৎসা বিজ্ঞান আগে এত উন্নত ছিল না। ফলে সদ্যোজাত সন্তানের মৃত্যুর আশঙ্কা ছিল অনেক বেশি। সে কথা মাথায় রেখেই দুইয়ের অধিক সন্তান ধারণ করতেন মহিলারা।

০৯ ২২

পরবর্তীকালে চিকিৎসা বিজ্ঞানে উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে শিশুমৃত্যুর হার কমেছে। তাই সন্তানধারণের বিষয়ে ‘কৃপণ’ হয়েছেন মানুষ। পৃথিবীর প্রায় সব দেশের ক্ষেত্রেই এ কথা প্রযোজ্য।

১০ ২২

কম সংখ্যক সন্তানের জন্ম দিয়ে বাবা-মা সেই সন্তানের পড়াশোনায় অধিক খরচ করে থাকেন। ফলে সন্তান অধিক উপার্জন করেন এবং দেশে ধনী শিক্ষিত জনসমাজ গড়ে ওঠে।

১১ ২২

তবে এই ব্যবস্থার নেতিবাচক দিকটিও বর্তমানে নজরে আসছে। অধিক উপার্জন করলেও সম্পত্তি, অর্থ ভোগ করার মতো মানুষের সংখ্যা কমে আসছে। যা পুতিনের টনক নড়িয়ে দিয়েছে।

১২ ২২

নব্বইয়ের দশক থেকে রাশিয়ায় জন্মহার কমছে। ২০২২ সাল থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে রত রাশিয়া। এখনও পর্যন্ত সেই যুদ্ধে তিন লক্ষের বেশি রাশিয়ান নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। অনেকে পালিয়ে গিয়েছেন দেশ ছেড়ে।

১৩ ২২

জনসংখ্যা কমে আসায় রাশিয়ায় কর্মক্ষম শ্রমিকের পরিমাণও কমে গিয়েছে। উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। অর্থনীতি হয়ে পড়ছে শ্লথ, গতিহীন। যুদ্ধের কারণে পশ্চিমি বিধিনিষেধ পুতিনের দেশের সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

১৪ ২২

অধিক সন্তানের জন্য দেশে পুরস্কার ঘোষণা করেছেন পুতিন। তিনি জানিয়েছেন, যে সব রাশিয়ান মহিলা ১০ বা তার বেশি সন্তানের জন্ম দিয়ে তাদের বাঁচিয়ে রাখতে পারবেন, সরকারের তরফে তাঁরা পাবেন ১৬ হাজার ডলার।

১৫ ২২

পুতিন কিন্তু প্রথম নন। এর আগে একই আর্জি দেশবাসীর কাছে জানিয়েছিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-সহ একাধিক রাষ্ট্রপ্রধান। দেশকে শক্তিশালী করে তোলার জন্য জন্মহার বৃদ্ধির বিষয়টি তাঁদের কাছে প্রাধান্য পেয়ে এসেছে।

১৬ ২২

চিন সরকার কয়েক বছর আগে জনগণের জন্য তিন সন্তান নীতি চালু করেছিল। সরকার থেকে সাধারণ মানুষকে অন্তত তিনটি সন্তানের জন্ম দেওয়ার অনুরোধ করা হয়।

১৭ ২২

দক্ষিণ কোরিয়াও একই পথে হেঁটেছে। অধিক সন্তানের জন্মে সে দেশের সরকার পুরস্কার ঘোষণা করেছে। সাধারণ মানুষকে সন্তানধারণে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।

১৮ ২২

জন্মহার বৃদ্ধিতেও সচেষ্ট জাপানের সরকারও। তারা নাগরিকদের জন্য বাড়তি ছুটি মঞ্জুর করেছে। তবে শর্ত একটাই, অধিক সংখ্যক সন্তান জন্ম দিতে হবে। গর্ভপাতের মতো পদক্ষেপ এই সমস্ত দেশে একেবারেই সহজ নয়।

১৯ ২২

জার্মানির শাসক হিটলারও একসময় দেশের মহিলাদের কাছে বেশি করে সন্তানের জন্ম দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন। নানা ভাবে সন্তানধারণে মহিলাদের উৎসাহ দিতেন তিনি।

২০ ২২

অধিক সন্তানের জন্য হিটলারও পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন। তিনি শ্বেতবর্ণের নীল চোখের শিশুর জন্মের জন্য বেশি উৎসাহ দিতেন। তাঁর ধারণা ছিল, এই ধরনের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন যুবকেরাই যুদ্ধে পারদর্শী হন।

২১ ২২

লক্ষণীয়, অধিক সন্তানের জন্ম দিয়ে দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি করতে চাইছে উন্নত দেশগুলির সরকার। ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে এই অঙ্ক প্রযোজ্যই নয়।

২২ ২২

সন্তানসংখ্যা কমিয়ে এনে তাঁদের পর্যাপ্ত শিক্ষা দিয়ে অধিক উপার্জন করিয়ে উন্নত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে চিন, রাশিয়া, জাপান, জার্মানির মতো দেশ। ভারত এখনও সেই পর্যায়ে পৌঁছতেই পারেনি।

সব ছবি: রয়টার্স।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement