আশির দশক থেকে শুরু করে দক্ষিণী ফিল্মজগতের পাশাপাশি হিন্দি ফিল্মজগতেও নিজের পরিচিতি গড়ে তুলেছিলেন অভিনেত্রী। ২০০৬ সালে বক্স অফিসে হিট হওয়া ছবিতে অভিনয় করার পরেও তাঁকে বলিউডের কোনও ছবিনির্মাতা কাজ দিতে চান না বলে দাবি করেছেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী এবং খ্যাতনামী নৃত্যশিল্পী সুধা চন্দ্রন।
১৯৬৫ সালে মুম্বইয়ে জন্ম সুধার। তাঁর বাবা অভিনয়জগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সুধার প্রথম ছবি তাঁর নিজের জীবনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়। ছোটবেলা থেকেই ভরতনাট্যম শিখেছেন তিনি। নাচ নিয়ে কেরিয়ার গড়বেন বলে সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
১৬ বছর বয়সে এক পথ দুর্ঘটনায় পায়ে গুরুতর চোট পান সুধা। তার পর অস্ত্রোপচার করে ‘প্রস্থেটিক লেগ’ বসানো হয়। দু’বছরের বিরতির পর দেশ-বিদেশের নানা জায়গায় পারফর্ম করেন সুধা। মুম্বইয়ের কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করার পর অর্থনীতি নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিও অর্জন করেন তিনি।
১৯৮৪ সালে ‘ময়ূরী’ নামে একটি তেলুগু ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন সুধা। তাঁর জীবনের উপর নির্ভর করেই এই ছবির চিত্রনাট্য নির্মাণ করা হয়।
আশির দশকে প্রথম অভিনয় শুরু সুধার। তার পর তেলুগু ভাষার ছবির পাশাপাশি মালয়ালম, কন্নড়, মরাঠি, তামিল এবং গুজরাতি ছবিতেও অভিনয় করতে দেখা যায় সুধাকে। ‘রাজনর্তকী’ নামে একটি বাংলা ছবিতেও অভিনয় করেন তিনি।
‘থানেদার’, ‘পতি পরমেশ্বর’, ‘শোলা অওর শবনম’, ‘অনজাম’, ‘হম আপকে দিল মে রেহতে হ্যায়’-এর মতো একাধিক ছবিতে অভিনয় করেন সুধা। ২০০৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মালামাল উইকলি’ ছবিতেও অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে। বক্স অফিসে সফল হয় এই ছবি।
সুধার দাবি, তিনি হিন্দি ছবিতে অভিনয়ের জন্য সম্পূর্ণ তৈরি। তবুও তাঁর কাছে বলিউডের কোনও ছবিনির্মাতা অভিনয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসেন না। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানান তিনি।
নব্বইয়ের দশক থেকে টেলিভিশনের জনপ্রিয় মুখ হয়ে ওঠেন সুধা। ‘রিস্তে’, ‘শাকা লাকা বুম বুম’, ‘কিউ কি সাস ভি কভি বহু থি’, ‘কিস দেশ মে হ্যায় মেরা দিল’, ‘অর্ধাঙ্গিনী’, ‘ইয়ে হ্যায় মহব্বতে’, ‘নাগিন’-এর মতো হিন্দি ধারাবাহিকে অভিনয় করে নজর কেড়েছেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে সুধা জানান, তিনি কখনও কোনও কাজে আপত্তি জানাননি। তবুও কী কারণে তাঁকে প্রস্তাব দেওয়া হয় না, সে বিষয় তিনি নিশ্চিত নন।
সুধা বলেন, ‘‘এমন বহু বার হয়েছে যে, কোনও হিন্দি ছবির চরিত্র দেখে আমি মনে করেছি এই চরিত্র আমায় দিলে কত ভাল অভিনয় করতে পারতাম।’’
সুধার দাবি, ১৭ বছর ধরে কোনও হিন্দি ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পাননি তিনি। অথচ তিনি কাজ করার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন।
সুধা যে দীর্ঘ দিন বড় পর্দা থেকে বিরতি নিয়েছিলেন তা-ও নয়। অভিনেত্রী জানান, দীর্ঘ কাল অভিনয় থেকে বিরতি নেওয়ার ফলে যে তাঁকে হিন্দি ছবিতে কাজ দেওয়া হয়নি তা হতে পারে না। কারণ তিনি সে সময় দক্ষিণের ফিল্মজগতে কাজ করছিলেন।
সুধা বলেন, ‘‘আমি আর কত বছর অপেক্ষা করব। ছোট পর্দায় অভিনয় করে আমি এত সম্মান পেয়েছি, এত ভালবাসা পেয়েছি এ সব ছেড়ে আমি কোথায় যেতাম? বড় পর্দায় অভিনয়ের সুযোগ পেতাম না তাই টেলিভিশনে কাজ করে গিয়েছি।’’
চলতি মাসে ছোট পর্দায় সুধার নতুন হিন্দি ধারাবাহিকের সম্প্রচার শুরু হয়েছে। সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেন, ‘‘বলিউডে অভিনয় করার মতো যোগ্যতা রয়েছে আমার। হিন্দি ছবিতে অভিনয় করা আমার প্রাপ্য।’’