দু’মাস আগেই নিজের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া নিয়ে ভিডিয়ো বানিয়ে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন তিনি। দু’মাস পর যে তাঁর সত্যি সত্যিই শেষকৃত্য করা হবে, এটা কেউই ভাবতে পারেননি। এমন কাকতালীয় ঘটনাই ঘটেছে ভেনেজুয়েলায়। মাত্র ২৬ বছর বয়সে অকালমৃত্যু হয়েছে সে দেশের এক সুন্দরীর।
তাঁর নাম আরিয়ানা ভিয়েরা। তিনি ‘মিস ভেনেজুয়েলা’ নামেই পরিচিত। পথ দুর্ঘটনায় আহত হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
গত ১৩ জুলাই অরল্যান্ডোতে ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় আরিয়ানার গাড়ির। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শেষমেশ জীবনযুদ্ধে হেরে গেলেন ওই সুন্দরী।
কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল? কার গাফিলতি? এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে ভেনেজুয়েলার এক টিভি চ্যানেলে আরিয়ানার মা ভিভিয়ান ওচোয়া জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে খুব ক্লান্ত ছিলেন। গাড়ি চালাতে চালাতে তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তার জেরেই দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা গিয়েছে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। আরিয়ানার মা জানিয়েছেন, চিকিৎসকরা অনেক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।
দেশের ‘সেরা সুন্দরী’র তকমা পেয়েছিলেন আরিয়ানা। মডেল হিসাবেও খ্যাতি ছিল তাঁর। দুর্ঘটনার আরিয়ানার এই আকস্মিক প্রয়াণে অনেকেই শোকস্তব্ধ।
আরিয়ানার মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর সেই ভিডিয়োটি ঘিরে আলোচনা শুরু হয়েছে সমাজমাধ্যমে। নিজের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া নিয়ে ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন আরিয়ানা। সেই ভিডিয়োই এখন শোরগোল ফেলেছে।
গত ২ মে সমাজমাধ্যমে নিজের একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন। তাতে লিখেছিলেন, ‘‘ভবিষ্যতে আমার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য রেকর্ড করছি। শুধু আমাকে নিয়ে এই ভিডিয়ো।’’
ভিডিয়ো পোস্ট করে আরও লেখেন, ‘‘এই ভিডিয়োগুলি সব সময় আমিই তুলি। অন্য কেউ রেকর্ড করে না।’’ ভিডিয়োতে নিজের নিত্যদিনের কাজকর্ম তুলে ধরেছিলেন আরিয়ানা। গত মে মাসে পোস্ট করেছিলেন সেই ভিডিয়ো। কে-ই বা জানত তাঁর জীবনে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে চলেছে।
সেই ভিডিয়ো বার্তার তিন মাসের মধ্যে আরিয়ানার মৃত্যুর ঘটনা জেনে অনেকেই হতবাক। কেউ কেউ বলছেন, ‘‘তা হলে কি নিজের মৃত্যুর ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন আরিয়ানা?’’
আরও কয়েকটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল আরিয়ানার। তার মধ্যে ছিল ‘মিস লাতিন আমেরিকা অফ দ্য ওয়ার্ল্ড ২০২৩’। আগামী অক্টোবর মাসে দেশের হয়ে ওই সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল তাঁর।
মডেলিংয়ের পাশাপাশি রিয়েল এস্টেট সেক্টরে কর্মরত ছিলেন আরিয়ানা। পাশাপাশি তাঁর সংস্থা বাড়ি পরিষ্কার,পরিচ্ছন্ন করার কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল।
মেয়েকে হারিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই ভেঙে পড়েছেন আরিয়ানার মা। তিনি বলেছেন, ‘‘ও সকলের পাশে দাঁড়াত। সব সময় বন্ধুবান্ধব, পরিবারের পাশে থেকেছে।’’
কন্যার শেষকৃত্যে যোগ দিতে পারেননি আরিয়ানার বাবা। তিনি পেরুতে থাকেন। সময়মতো ভিসা না পাওয়ায় দেশে ফিরতে পারেননি তিনি।
ইনস্টাগ্রামে নানা ধরনের ভিডিয়ো এবং ছবি পোস্ট করতেন আরিয়ানা। তাঁর অনুরাগীর সংখ্যা ২০ হাজারেরও বেশি।