ছোট থেকেই অভিনয়ের শখ ছিল তাঁর। স্বপ্নপূরণ করতে স্কুলজীবন থেকেই অভিনয়ের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তিনি। কেরিয়ারের প্রথম ছবি সলমন খানের সঙ্গে। কিন্তু ধীরে ধীরে বলিপাড়া থেকে হারিয়ে যান পূজা দাদওয়াল।
১৯৭৭ সালের ৫ জানুয়ারি মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে জন্ম পূজার। ছোটবেলা থেকে সিনেমা দেখতে ভালবাসতেন তিনি। নিজের কেরিয়ার গড়তে চেয়েছিলেন অভিনেত্রী হিসাবে।
স্কুলে পড়ার পাশাপাশি অভিনয়ের জন্য প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন পূজা। প্রশিক্ষণ চলাকালীন একটি হিন্দি ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পান তিনি।
১৯৯৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বীরগতি’ ছবিতে সলমন খানের বিপরীতে অভিনয়ের সুযোগ পান পূজা। মাত্র ১৭ বছর বয়সে বড় পর্দায় পা রাখেন তিনি। কিন্তু বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে ‘বীরগতি’ ছবিটি।
‘বীরগতি’ ছবিটি ব্যর্থ হলেও সলমনের নায়িকা হিসাবে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন বলে বলি ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের পরিচিতি গড়ে তোলেন পূজা। ‘হিন্দুস্তান’, ‘সিন্দুর সৌগন্ধ’, ‘ইন্তেকাম’, ‘দবদবা’র মতো একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেন তিনি।
হিন্দি ছবিতে অভিনয় করলেও পূজা অভিনীত কোনও ছবিই বক্স অফিসে সফল হয়নি। আশাহত হয়ে ছোট পর্দায় কাজের সন্ধান শুরু করেন পূজা।
‘আশিকি’ এবং ‘ঘরানা’র মতো দু’টি জনপ্রিয় ধারাবাহিক দর্শককে উপহার দেন পূজা। ছোট পর্দায় খ্যাতি পাওয়ার পর তিনি ভাবেন হিন্দি ছবিতে আবার অভিনয়ের সুযোগ পাবেন পূজা। পুনরায় আশা ভাঙে তাঁর। শেষ পর্যন্ত বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে মুম্বই ছেড়ে গোয়া চলে যান পূজা। গোয়ায় একটি ক্যাসিনো চালাতেন তাঁর স্বামী। বিয়ের পর ক্যাসিনোর ব্যবসাই সামলাতে শুরু করেন পূজা। কিন্তু তার স্থায়িত্বও খুব বেশি দিনের নয়।
২০১৮ সালে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন পূজা। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে জানা যায় যে যক্ষা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন অভিনেত্রী। কিন্তু পূজার পাশে তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির কোনও সদস্য এসে দাঁড়াননি। পূজাকে মৃত্যুশয্যায় একা ফেলে চলে যান তাঁরা।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, বলি পরিচালক রাজেন্দ্র সিংহ এক সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন পূজাকে। পরে ইউটিউবে একটি ভিডিয়ো আপলোড করে সলমন খানের কাছ থেকে সাহায্য প্রার্থনা করেন পূজা।
পূজার অসুখের খবর পেয়ে সহ-অভিনেত্রীর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সলমন। ছ’মাস চিকিৎসা চলার পর সুস্থ হয়ে ওঠেন পূজা। মুম্বইয়ে ফিরে গিয়ে নিজের জীবন নতুন করে শুরু করেন তিনি।
২০২০ সালে একটি পঞ্জাবি ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান পূজা। কিন্তু এই ছবিটিও বক্স অফিসে তেমন ব্যবসা করতে পারেনি। এক পুরনো সাক্ষাৎকারে পূজা জানিয়েছিলেন, তাঁর পুরনো বন্ধু রাজেন্দ্র ব্যবসা করার পরিকল্পনা দেন পূজাকে।
বন্ধুর পরামর্শ অনুযায়ী হোম ডেলিভারির ব্যবসা শুরু করেন পূজা। বর্তমানে মুম্বইয়ে একটি একচালার ঘরে থাকেন তিনি। ব্যবসা করেই এখন উপার্জন করেন সলমনের সহ-অভিনেত্রী।