আরও ছ’টি অগভীর মহীসোপান অঞ্চল দখল নিল আমেরিকা। অর্থাৎ আরও একটি এক্সটেনডেড কন্টিনেন্টাল শেলফ বা ইসিএস-এ বাড়ল তাদের দখলে।
এর আগে আমেরিকার কাছে মোট ছ’টি ইসিএস ছিল। ছ’টি এলাকা নিজের দখলে নেওয়ায় এখন আমেরিকায় মোট সাতটি ইসিএস রইল।
অগভীর মহীসোপান অঞ্চলের (এক্সটেনডেড কন্টিনেন্টাল শেলফ বা ইসিএস) ছ’টি এলাকা নিজেদের অন্তর্ভূক্ত করে নিল আমেরিকা।
এ দেশের একটি সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এলাকাগুলি অন্তর্ভুক্ত করার পরে দেশটির আয়তন বেড়েছে ৬.২১ লক্ষ বর্গকিলোমিটার, যা স্পেনের আয়তনের প্রায় দ্বিগুণ।
ইসিএস বা মহীসোপান অঞ্চল হল সমুদ্রের ২০০ নটিক্যাল মাইল (৩৭০.৪ কিলোমিটার) গভীরে অবস্থিত ভূমিভাগ।
আমেরিকার জলবায়ু দফতরের মতে, এই অঞ্চলগুলি তেল, খনিজ ও প্রাণিজ সম্পদে পরিপূর্ণ। সব মিলিয়ে এখন দেশটির সাতটি ইসিএস রয়েছে।
এই ইসিএসগুলি উত্তর মেরু সংলগ্ন অঞ্চলে, অতলান্তিকের পূর্ব উপকূলে, বেরিং সাগরে, প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম উপকূলে, মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জে ও মেক্সিকো উপসাগরের দু’টি এলাকায় অবস্থিত।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, সমুদ্রের তলার সম্পদের দিকে দীর্ঘ দিন ধরে নজর আমেরিকার। এই দখলদারি সেই উদ্দেশ্যের দিকেই ইঙ্গিত করে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ইসিএস ভূখণ্ডটি উত্তর মেরু সংলগ্ন সমুদ্রে অবস্থিত। সমগ্র ইসিএস ভূখণ্ডটি আকারে ক্যালিফোর্নিয়ার প্রায় দ্বিগুণ। উত্তর মেরু সংলগ্ন এই ইসিএসটি মূল ভূখণ্ড থেকে ৩৫০ মাইল উত্তরে এবং ৬৮০ মাইল পশ্চিমে অবস্থিত।
প্রধানত ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত এক চর্চা-সংস্থা জানিয়েছে, সমুদ্রগর্ভের সম্পদ অর্থাৎ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, খনিজ নিয়ে অনেকদিন ধরেই আগ্রহ রয়েছে আমেরিকার।
উত্তর মেরু সংলগ্ন এই ইসিএসটি মূল ভূখণ্ড থেকে ৩৫০ মাইল উত্তরে এবং ৬৮০ মাইল পশ্চিমে অবস্থিত।
প্রধানত ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত এক চর্চা-সংস্থা জানিয়েছে, সমুদ্রগর্ভের সম্পদ অর্থাৎ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, খনিজ নিয়ে অনেকদিন ধরেই আগ্রহ রয়েছে আমেরিকার।
সেই চর্চাকেন্দ্রের নাম উইলসন সেন্টার। যাদের কাজ হল সরকারি এবং বেসরকারি নানা সংস্থার সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক কোনও ঘটনা নিয়ে গবেষণা করা।
উইলসন সেন্টার আরও জানিয়েছে যে, আমেরিকার এই ঘোষাণা উত্তর মেরু সংলগ্ন অঞ্চলে তাদের সীমারেখা বিস্তৃতির ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবং সামুদ্রিক আইন অনুযায়ী, সমুদ্রের তলদেশের এই সব সম্পদের উপর সার্বভৌম অধিকার রয়েছে আমেরিকার।
বাইডেনের এই পদক্ষেপ সরাসরি ১৯৯০ সালে রাশিয়া এবং আমেরিকার মধ্যে হওয়া বেরিং সাগরের সামুদ্রিক সীমানা সম্পর্কিত চুক্তির সঙ্গে মিলে যায়।
তবে আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের এক আধিকারিক ব্রায়ান ভ্যান পে আশঙ্কা করেছেন, এই সীমানার উপর পরবর্তী কালে কানাডাও দাবি জানাতে পারে। কিন্তু ১৯৮২ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের সম্মেলনে হওয়া সমুদ্র সীমানা সংক্রান্ত চুক্তির সঙ্গে আমেরিকার ইসিএস সংক্রান্ত আজকের এই দাবি মিলে যায়।
আমেরিকান সেনেট সেই সময়ে এই চুক্তিকে সমর্থন না জানালেও সম্মেলনের প্রায় চার দশক পরে এসে তারা তাদের মহীসোপানের সীমানার ঘোষণা করল।
আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের এই পদক্ষেপ আমেরিকান ইসিএস কার্যনির্বাহী দলের তত্তাবধানে হয়েছে যে দলে ১৪টি সরকারি সংস্থা যুক্ত ছিল। এই সংস্থা জানিয়েছে, “মহীসোপান একটি রাষ্ট্রের সমুদ্র তলদেশের বাড়তি সীমানা। অনান্য রাষ্ট্রের মতো আমেরিকার অধিকার রয়েছে মহীসোপানকে দেশের সীমানার মধ্যে এনে তার সম্পদকে রক্ষা এবং পালন করা।“
প্রসঙ্গত, মহীসোপানের বাইরের সীমানা ঠিক করার জন্য প্রয়োজন সমুদ্রতট এবং অন্তর্মৃত্তিকার আকার, গভীরতা এবং ভূপদার্থের ধর্মকে যাচাই করে নেওয়া। ভ্যান পে-র কথায়, “আমরা সমুদ্রগর্ভে এমন চল্লিশটি জায়গায় অভিযান চালিয়েছি, যার অস্তিত্ব সম্পর্কে এত দিন কোনও ধারণা ছিল না।।“