US Economy

বাজেট ঘাটতি প্রায় ২ লক্ষ কোটি, ডলারের অভাব প্রকট, আর্থিক সঙ্কট মেটাতে লড়াই আমেরিকার

আমেরিকায় আর্থিক ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ২ লক্ষ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। ফেডারেল ব্যাঙ্কের ঋণে সুদের অঙ্ক ১ লক্ষ কোটি ডলার স্পর্শ করেছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:০১
Share:
০১ ১৪

আমেরিকার অর্থনীতিতে শনির দশা! দিন দিন বেড়েই চলেছে আর্থিক ঘাটতি। চলতি আর্থিক বছরে (২০২৪-’২৪) যা ১ লক্ষ ৮৮ হাজার কোটি ডলারে গিয়ে পৌঁছেছে। কোভিডের পর বাজেট ঘাটতি সর্বোচ্চ স্তরে চলে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্বের তাবড় অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা। এর পরোক্ষ প্রভাব অন্যান্য দেশ-সহ ভারতের উপরেও পড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা।

০২ ১৪

আর্থিক ঘাটতির পাশাপাশি আমেরিকায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সুদের হার। ওয়াশিংটনের কেন্দ্রীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান হল ‘ফেডারেল ব্যাঙ্ক’। যার ঋণের উপর সুদের পরিমাণ প্রথম বারের জন্য ১ লক্ষ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি, বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষামূলক প্রকল্প, অবসরকালীন প্রকল্প, স্বাস্থ্য ও সেনাবাহিনীর খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। জানিয়েছে আমেরিকার ট্রেজারি বিভাগ।

Advertisement
০৩ ১৪

আমেরিকার ট্রেজারি বিভাগ সূত্রে খবর, চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাজেট ঘাটতির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে ৮ শতাংশ। যা প্রায় ১৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। গত আর্থিক বছরে (২০২৩-’২৪) বাজেট ঘাটতির অঙ্ক পৌঁছেছিল ১ লক্ষ ৬৯ হাজার কোটি ডলারে। এ বার যে সেই সীমা ছাড়িয়ে যাবে, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।

০৪ ১৪

কোভিড অতিমারি শুরু হওয়ার পর থেকে এত দিন পর্যন্ত ২০২৩ আর্থিক বছরে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ছিল তৃতীয় সর্বোচ্চ। ২০২০ আর্থিক বছরে ঘাটতির অঙ্ক ছিল সর্বাধিক। যা ৩ লক্ষ ১৩ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছেছিল। ২০২১ আর্থিক বছরে এই ঘাটতি নেমে আসে ২ লক্ষ ৭৭ হাজার কোটি ডলারে। যা ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

০৫ ১৪

২০২৩ আর্থিক বছরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চালু করা ‘পড়ুয়া ঋণ’-এর কর্মসূচি বাতিল করে আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট। যার জেরে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ৩৩ হাজার কোটি ডলার কমে যায়। ওই অঙ্কের টাকা খরচ করা হলে ঘাটতির অঙ্ক ফের একবার ২ লক্ষ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেত বলে মনে করা হচ্ছে।

০৬ ১৪

২০২৪ আর্থিক বছরের বাজেটে আমেরিকার দেশজ উৎপাদনের ঘাটতি ৬.৪ শতাংশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২৩ আর্থিক বছরে যা ছিল ৬.২ শতাংশ। আগামী ৫ নভেম্বর থেকে আটলান্টিকের পারের দেশটিতে শুরু হবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সেই ভোটের প্রচারে বাজেট ঘাটতি একটা বড় ইস্যু হিসাবে উঠে আসছে।

০৭ ১৪

এ বারের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। অন্য দিকে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফের প্রার্থী করেছে রিপাবলিকান পার্টি। আর্থিক বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, বাজেটের ঘাটতি ট্রাম্পের চেয়ে হ্যারিস বেশি ভাল সামলাতে পারবেন।

০৮ ১৪

আর্থিক বিশেষজ্ঞদের সংস্থা ‘কমিটি ফর অ্যা রেসপন্সেবল ফেডারেল বাজেট’-এর দাবি, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে বাজেট ঘাটতি মেটাতে নতুন করে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি ডলার ঋণ নেবেন। অন্য দিকে কুর্সিতে বসলে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি ডলার ঋণ নিতে পারেন হ্যারিস। অর্থাৎ রিপাবলিকান প্রার্থীর নেওয়া ঋণের অঙ্ক তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীর তুলনায় দ্বিগুণের বেশি হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

০৯ ১৪

২০২৪ আর্থিক বছরে কর বাবদ রেকর্ড অর্থ এসেছে আমেরিকার কোষাগারে। ট্রেজারি বিভাগের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী যা প্রায় ৪ লক্ষ ৯১ হাজার কোটি ডলার। এক বছর আগের নিরিখে এই পরিমাণ ১১ শতাংশ বেড়েছে। ২০২৩ অর্থবর্ষের তুলনায় অতিরিক্ত ৪৭ হাজার ৯০০ কোটি ডলার এসেছে সরকারের ঘরে।

১০ ১৪

গত এক বছরে আমেরিকায় ব্যক্তিগত ও কর্পোরেট কর সংগ্রহের পরিমাণ বেড়েছে। যার ফলে কোষাগারে অতিরিক্ত টাকা এসেছে। অন্য দিকে ২০২৪ আর্থিক বছরে আমেরিকার সরকারের খরচ বেড়েছে ১০ শতাংশ। অর্থাৎ সরকারি ব্যয় ৬১ হাজার ৭০০ কোটি ডলার বেড়ে ৬ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছেছে।

১১ ১৪

এই পরিস্থিতিতে সামান্য খুশির খবর শুনিয়েছেন ট্রেজারি বিভাগের এক পদস্থ আধিকারিক। তিনি জানিয়েছেন, ফেডারেল ঋণের সুদের খরচ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। ২০২২ সালের জানুয়ারির পর এ বছরের সেপ্টেম্বরে প্রথম বার সেই প্রবণতা দেখা গিয়েছে। এটি আরও কমবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি।

১২ ১৪

ঘাটতি ও উদ্বৃত্তের পরিসংখ্যান দিতে গিয়ে আমেরিকার সরকার সেপ্টেম্বর মাসের উদাহরণ দিয়েছে। এ বছরের সেপ্টেম্বরে উদ্বৃত্তর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ঘাটতির অঙ্ক ছিল ১৭ হাজার ১০০ কোটি ডলার।

১৩ ১৪

বিশেষজ্ঞদের দাবি, মূলত ক্যালেন্ডার সমন্বয়ের ফলে এই উন্নতি দেখা গিয়েছে। যা না থাকলে ২০২৪ আর্থিক বছরে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াত ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার।

১৪ ১৪

সেপ্টেম্বরে কর বাবদ আমেরিকার কোষাগারে এসেছে ৫২ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের তুলনায় যা ১৩ শতাংশ বেশি। অন্য দিকে এই মাসে খরচের অঙ্ক ৪৬ হাজার ৩০০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। ক্যালেন্ডার সমন্বয়ের জেরে এতে ২৭ শতাংশ পতন দেখা গিয়েছে।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement