ইউপিআই মারফত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নগদ টাকা লেনদেনের সুবিধার মতো এ বার ঋণের ক্ষেত্রেও একটি নতুন মঞ্চ তৈরির পথে হাঁটতে চলেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই)।
আরবিআইয়ের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস জানিয়েছেন, মূলত কৃষিক্ষেত্র ও ক্ষুদ্র এবং মাঝারি আকারের ব্যবসায় ঋণদানের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে এই পদক্ষেপ।
লেনদেন সহজতর করার উদ্দেশ্যে ইউনিফাইড পেমেন্টস ইন্টারফেস (ইউপিআই)-এর ধাঁচেই ইউনিফাইড লেন্ডিং ইন্টারফেস (ইউএলআই) নামের এই নতুন প্রযুক্তি আনতে চলেছে আরবিআই।
এই প্রকল্পটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং দেশব্যাপী চালু হওয়ার জন্য এখনও কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন শক্তিকান্ত।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার লক্ষ্য ঋণদানের মূল্যায়ন ও অনুমোদনের জন্য যে পরিমাণ সময় নেওয়া হয় তা কমাতে ইউপিআইয়ের মতো প্রযুক্তির ব্যবহার।
বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় ছোট ঋণগ্রহীতাদের জন্য ঋণ নেওয়ার রাস্তা সহজ করতেই এই নতুন পথ বেছে নিয়েছে আরবিআই।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের নথি বলছে, গত কয়েক বছরে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি আকারের উদ্যোগগুলি (এমএসএমই) ভারতের দ্রুত অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতে প্রচুর অবদান রেখেছে। দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
ইউপিআইয়ের মাধ্যমে টাকা লেনদেন বা নগদ টাকা জমা মানুষের সুবিধা বাড়িয়েছে। ঝক্কি কমিয়েছে ব্যাঙ্কের। এখন ডেবিট কার্ডে মেশিন মারফত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করেন বহু গ্রাহক।কমেছে এনইএফটি এবং ব্যাঙ্কের শাখায় গিয়ে নগদ টাকা পাঠানোর পরিমাণ।
ব্যাঙ্কিং পরিষেবাগুলির ডিজিটালাইজেশনের অংশ হিসাবে ইউনিফাইড লেন্ডিং ইন্টারফেসে থাকবে একটি সুগঠিত ডিজিটাল তথ্যভান্ডার। সেখানে জমি সংক্রান্ত নানা তথ্যও থাকবে। এই তথ্য দেখতে পাবেন ঋণদাতা ও গ্রহীতা উভয়ই।
গ্রামীণ এবং ছোট ঋণগ্রহীতাদের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি করা হয়েছে এই ইউএলআই অ্যাপটি যাতে এক বোতামের চাপেই ঋণ সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য হাতের মুঠোয় চলে আসে।
সম্ভাব্য ঋণগ্রহীতার সম্মতির উপর ভিত্তি করেই সমস্ত তথ্য এই প্ল্যাটফর্মে দেওয়া হবে এবং নতুন প্ল্যাটফর্মটিতে তথ্যের গোপনীয়তা সম্পূর্ণরূপে সুরক্ষিত বলে জানিয়েছেন শক্তিকান্ত।
নতুন এই প্রযুক্তি ব্যবহারে বিভিন্ন আর্থিক ক্ষেত্র, বিশেষ করে কৃষি এবং এমএসএমই ঋণগ্রহীতাদের জন্য অপ্রতুল ঋণের চাহিদা পূরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ইউপিআই যেমন আর্থিক লেনদেনের খোলনলচে পাল্টে দিয়েছে, সে ভাবেই ইউএলআই ভারতে ঋণদানের ব্যবস্থার সরলীকরণ করে পরিবর্তন আনতে একই ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছেন আরবিআই গভর্নর।
ইউনিফাইড পেমেন্টস ইন্টারফেস এবং ইউনিফাইড লেন্ডিং ইন্টারফেস, সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক ডিজিটাল কারেন্সি ধীরে ধীরে একসঙ্গে চালু করা হলে, ভারতের জনসাধারণের জন্য তা ডিজিটাল পরিকাঠামো তৈরির ক্ষেত্রে একটি বৈপ্লবিক পদক্ষেপ হতে পারে বলে মনে করছে আরবিআই।