বুধবার সপ্তম দিনে পা দিল রাশিয়া-ইউক্রেন সঙ্ঘাত। মস্কোর পুরোদস্তুর আঘাতে ইতিমধ্যেই বিপর্যস্ত কিভ। রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইউক্রেনের সেনা নিহত হওয়ার পাশাপাশি সাধারণ জনগণেরও মৃত্যু হচ্ছে। এরই মধ্যে চলমান সঙ্ঘাতে পুড়ে ছাই ইউক্রেনের ‘স্বপ্ন’, বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিমান এএন-২২৫।
ইউক্রেনের হাসপাতালগুলি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অক্সিজেন শূন্য হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। এমতাবস্থায় ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে অনেক দেশ।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি সংঘাতে না জড়ালেও সামরিক সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে আমেরিকা-সহ একাধিক রাষ্ট্র। আমেরিকা ইতিমধ্যেই ইউক্রেনে মোট প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা)-এর অস্ত্র পাঠানোর কথা ঘোষণা করেছে। এ ছাড়াও আমেরিকার কাছে কিছু ট্যাঙ্ক এবং বিমান ধ্বংসকারী ক্ষেপণাস্ত্রও চেয়ে পাঠিয়েছে ইউক্রেন। এই অস্ত্রগুলিও শীঘ্রই পাঠানো হবে বলেও পেন্টাগন জানিয়েছে।
এ ছাড়া ইউক্রেনের সামনের সারির যোদ্ধাদের জন্য বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটও পাঠিয়েছে বাইডেন সরকার।
ব্রিটেনও ইউক্রেনকে সাঁজোয়া গাড়ি বিধ্বংসী কিছু অস্ত্র সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়াও ইউক্রেনকে কিছু প্রাণঘাতী অস্ত্র দিয়েও সাহায্য করবে ব্রিটেন। বুধবার এই সরবরাহ ইউক্রেনে পৌঁছতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
ফ্রান্সের মাকরঁ সরকার ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সেনা সরঞ্জাম এবং জ্বালানি দিয়ে কিভকে সাহায্য করেছে। এছাড়াও ইউক্রেন কিছু যুদ্ধবিমান ধ্বংসকারী ক্ষেপণাস্ত্র চেয়ে পাঠিয়েছে। তবে সে সব তারা পাবে কি না, তা এখনও বিবেচনাধীন বলেও প্যারিস জানিয়েছে।
নেদারল্যান্ডও যুদ্ধবিমান এবং ভারী ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী রকেটের জোগান দেবে বলে শনিবার ঘোষণা করেছে। ইউক্রেনকে ২০০টি যুদ্ধবিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, ৫০টি প্যানজারফাস্ট ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী অস্ত্র এবং আরও ৪০০টি রকেট সরবরাহ করবে বলে ডাচ সরকার আশ্বাস দিয়েছে।
ইউক্রেনের উপর রুশ আগ্রাসন রুখতে জার্মান সরকার এক হাজার ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী অস্ত্র এবং ৫০০টি ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপকারী মিসাইল সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
ইউক্রেন সরকারকে প্রাণঘাতী কিছু ভারী অস্ত্র এবং এবং প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার ঋণ দিয়ে অর্থ সাহায্য পাঠাচ্ছে কানাডিয়ান সরকার।
স্টকহোম সরকারও ইউক্রেনকে পাঁচ হাজার ট্যাঙ্ক- বিধ্বংসী মিসাইল, খাদ্যসামগ্রী এবং বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট দিয়ে ইউক্রেনকে সাহায্য করছে বলে জানিয়েছে।
রুশ হামলার জবাব দিতে ইউক্রেনকে তিন হাজার স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, ২০০টি ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী অস্ত্র এবং তিন হাজার ৮০০ টন জ্বালানি সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছে বেলজিয়াম।
পর্তুগালও জেলেনস্কি সরকারকে অন্ধকারে দেখতে পাওয়া চশমা, স্বয়ংক্রিয় জি৩ রাইফেল, হেলমেট, গোলাবারুদ, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট এবং গ্রেনেড দিচ্ছে।
কিভের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে গ্রিস। তড়িঘড়ি কিভে খাবার এবং সেনা সর়ঞ্জাম পাঠানোর তাগিদে রয়েছে গ্রিস।
ইউক্রেনের সীমান্তে থাকা রোমনিয়াও রয়েছে এই তালিকায়। রোমানিয়া, ইউক্রেনকে ১১টি সেনা হাসপাতাল, জ্বালানি, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হেলমেট দিয়ে সাহায্য করছে।
স্পেন সরকারও সেনা সর়ঞ্জাম, খাবার, ওষুধ মিলে মোট ২০ টনের সাহায্য পাঠাবে বলে ঘোষণা করেছে।
চেক প্রজাতন্ত্র চার হাজার মর্টার, ৩০ হাজার পিস্তল, সাত হাজার স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, তিন হাজার মেশিনগান এবং দশ লক্ষ বুলেট দিয়ে সাহায্য করবে বলে জানিয়েছে।