নতুন বছরের প্রথম রাতে ইউক্রেনের প্রত্যাঘাত। সারে সারে রকেট গিয়ে পড়ল রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটিতে।
আচমকা এই হামলায় অনেক মৃত্যু হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করে জানা যায়নি।
রুশ অধিকৃত ইউক্রেনের ডোনেৎস্ক প্রদেশে নববর্ষের রাতে হামলা চালিয়েছে কিভ। পর পর অন্তত ২৫টি রকেট ছোড়া হয়েছে।
ডোনেৎস্ক প্রদেশে রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ছোড়া এই রকেটগুলির আঘাতে রুশ সামরিক বাহিনীর অনেকে নিহত হয়েছেন। আহতও হয়েছেন বহু রুশ সেনা আধিকারিক।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ইউক্রেনের এই প্রত্যাঘাত নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি। তবে দৈনিক রিপোর্টে তারা জানিয়েছে, ইউক্রেন থেকে ছোড়া ৭টি রকেট তারা ধ্বংস করেছে।
ডোনেৎস্ক প্রদেশে কর্মরত রাশিয়ার উচ্চপদস্থ সামরিক কর্তা ডানিল বেজ়সোনভ জানিয়েছেন, ঘড়ির কাঁটা অনুযায়ী, নতুন বছর শুরুর ২ মিনিটের মধ্যে রকেট বর্ষণ শুরু করে ইউক্রেন।
রাতে আতসবাজির মতো সারে সারে রকেট এসে পড়েছে রুশ সামরিক ঘাঁটিতে। যে ভবনটিতে ইউক্রেনের রকেট এসে পড়েছে, তা কার্যত ধ্বংস হয়ে গিয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
কিছু দিন আগে রাজধানী কিভ-সহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে বৃহত্তম ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া।
গত বুধবার রাত থেকে শতাধিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে রুশ ফৌজ। প্রবল শীত আর তুষারপাতের মধ্যে ঝাঁকে ঝাঁকে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের হামলায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে কিভ-সহ বিভিন্ন শহরের বিদ্যুৎ ও জল সরবরাহ ব্যবস্থা।
রাজধানী কিভের পাশাপাশি ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শহর জ়াপোরিজিয়া এবং দক্ষিণের খেরসন অঞ্চলে রুশ বাহিনী ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে বলে পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমের দাবি। ইউক্রেনের দাবি, রাজধানী লক্ষ্য করে ছোড়া ১৬টি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আকাশপথে ধ্বংস করে দিয়েছে তারা।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বয়স ৩০০ দিন পেরিয়েছে। তবে পশ্চিম ইউরোপে যুদ্ধের মেজাজে বিরতি নেই। বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির তরফে যুদ্ধ থামানোর জন্য যে ১০ দফার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, রাশিয়ার বিদেশ সচিব সের্গেই লাভরভ তা নাকচ করেছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কি কয়েক মাস আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, শীতের মরসুমে নতুন করে বিধ্বংসী হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। দেশবাসীর উদ্দেশে এক বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, ‘‘বিদ্যুতের সরবরাহ কম থাকায় আমাদের সকলকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’’ পাশাপাশি, রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় গৃহহীন ইউক্রেনীয় নাগরিকদের জন্য আশ্রয় শিবির খোলার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি।
চলতি মাসে ইউক্রেনের তরফে দাবি করা হয়, শীতের মধ্যেই কিভ দখলের লক্ষ্যে নতুন প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রায় ২ লক্ষ রুশ ফৌজ। সেই বাহিনীতে রয়েছে বাছাই করা বেশ কিছু গোলন্দাজ, ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া ব্যাটেলিয়ন।
ইউক্রেনের দাবি, আমেরিকা ও ইউরোপের অস্ত্র সরবরাহ আটকাতেই শীতে ইউক্রেনে হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে মস্কো।
কিভের প্রত্যাশা মতোই হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। তার কিছু দিনের মধ্যে নতুন বছরের শুরুতে প্রত্যাঘাতও করল ইউক্রেন।