তাঁর জ্যাঠামশাই ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। তুতো ভাইও ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। ভাইপো বলিউডের নামী তারকা। অথচ তিনি নিজে ছিলেন পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের অন্যতম শীর্ষ পদে।
তিনি ইসফানদিয়ার আলি পটৌডি। পাকিস্তানের মেজর জেনারেল ইসফানদিয়ার সম্পর্কে প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক মনসুর আলি খান পটৌডির তুতো ভাই এবং বলিউড তারকা সইফ আলি খানের কাকু। মনসুরের বাবা তথা ইসফানদিয়ার জেঠু ইফতিকার আলি খান পটৌডিও ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়কত্ব করেন।
ইসফানদিয়ার জেঠু ইফতিকার ছিলেন একমাত্র ভারতীয় ক্রিকেটার, যিনি ভারত এবং ইংল্যান্ড, দুই দলের হয়েই টেস্ট ক্রিকেট খেলেছিলেন।
ইসফানদিয়ারের বাবা মেজর জেনারেল নবাবজাদা মহম্মদ আলি পটৌডি ছিলেন মনসুর আলি খানের বাবা ইফতিকার আলি খানের ছোট ভাই।
দেশভাগের সময় মেজর জেনারেল নবাবজাদা মহম্মদ পাকিস্তান চলে যান এবং পাক সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর দাদা ইফতিকার ভারতেই থেকে গিয়েছিলেন।
নবাবজাদা পাকিস্তান সেনার মেজর জেলারেল পদে কর্মরত ছিলেন। তাঁর ছেলে ইসফানদিয়ার পরে পাকিস্তানের বিশেষ সেনাবাহিনীর কমান্ডার হন।
পাকিস্তানের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর-জেনারেলও হয়েছিলেন ইসফানদিয়ার। শুধু তাই নয়, আইএসআইয়ের প্রধান হওয়ার দৌড়ে অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি তা হননি।
২০১১ সালে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার অ্যাবোটাবাদে জঙ্গিনেতা ওসামা বিন লাদেন খুঁজে মেরে ফেলার দাবি করে আমেরিকা। এর পরই বিশ্ব দরবারে মুখ পোড়ে পাকিস্তানের।
লাদেনকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগও উঠেছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। পাকিস্তান যদিও সেই সব অভিযোগ অস্বীকার করে।
একই সঙ্গে জঙ্গিদের মদত দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৎকালীন আইএসআই প্রধান আহমদ সুজা পাশার বিরুদ্ধেও। এ ছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।
সেই সময় আইএসআইয়ের দ্বিতীয় শীর্ষ পদে ছিলেন ইসফানদিয়ার। পাশা বিতর্কের মুখে পড়ার কয়েক সপ্তাহ আগেই আইএসআইএ-এর ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেলের পদে বসেন তিনি।
মনে করে হচ্ছিল পাশা ক্ষমতাচ্যুত হলে আইএসআইএ-এর প্রধানের গদিতে বসবেন ইসফানদিয়ার।
যদিও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। পাশা সরে যাওয়ার পরে ২০১২ সালে আইএসআইএ-এর ডিরেক্টর জেনারেল হন জাহির-উল-ইসলাম।
ভারতীয় পটৌডি পরিবারের সরাসরি আত্মীয় হওয়া ছাড়াও আরও একটি ভারতীয় যোগ ছিল ইসফানদিয়ার। আমেরিকার ‘আর্মি ওয়ার কলেজ’-এ পড়াশোনা করার সময় তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রাক্তন ‘চিফ অফ আর্মি স্টাফ’ জেনারেল ভি কে সিংহের সহপাঠী ছিলেন।
১৯৯৮ সালের পরমাণু পরীক্ষা এবং ১৯৯৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর পাকিস্তান এবং আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঠিক করতে পাকিস্তানের তরফে কয়েক জন সেনা আধিকারিককে আমেরিকায় পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ইনসাফদিয়ার।
১৯৯৮ সালের পরমাণু পরীক্ষা এবং ১৯৯৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর পাকিস্তান এবং আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঠিক করতে পাকিস্তানের তরফে কয়েক জন সেনা আধিকারিককে আমেরিকায় পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ইনসাফদিয়ার।