বলিউডের খ্যাতনামী পরিচালকের কনিষ্ঠ কন্যা। মা-ও বড় পর্দার প্রযোজনার সঙ্গে যুক্ত। শৈশব থেকেই অভিনয়ের প্রতি মন ঝুঁকে পড়েছিল তাঁর। কিন্তু ৩৬ বছরের বড় অভিনেতার সঙ্গে প্রেম করে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন সাই মঞ্জরেকর।
২০০১ সালের ডিসেম্বর মাসে মহারাষ্ট্রে জন্ম সাইয়ের। তাঁর পিতা বলিপাড়ার অন্যতম জনপ্রিয় পরিচালক মহেশ মঞ্জরেকর। তাঁর মা মেধা মঞ্জরেকর বলিউডের প্রযোজক হিসাবে খ্যাত।
মুম্বইয়ের স্কুল এবং কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করেন সাই। তবে স্কুলের গণ্ডি পার করার আগেই অভিনয়জগতে পা রেখেছিলেন তিনি।
২০০৫ সালে মহেশের পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘বিরুদ্ধ’ নামের একটি ছবি। এই ছবিতে অমিতাভ বচ্চন, সঞ্জয় দত্ত এবং শর্মিলা ঠাকুরের মতো তারকারা অভিনয় করেন। বলিপাড়া সূত্রে খবর, এই ছবিতে মহেশকে পরিচালনার কাজে সাহায্য করেছিলেন সাই।
২০১২ সালে ‘কাকস্পর্শ’ নামের মরাঠি ভাষার একটি ছবি পরিচালনা করেন মহেশ। সেই ছবির হাত ধরে বড় পর্দায় প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান সাই।
বাবার পরিচালিত ছবিতে স্বল্পদৈর্ঘ্যের চরিত্রে অভিনয়ের পর সাত বছর আর অভিনয় করেননি সাই। তার পর ২০১৯ সালে একটি হিন্দি ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পান তিনি। কিন্তু বয়সে ৩৬ বছরের বড় অভিনেতার সঙ্গে ‘প্রেম’ করার জন্য বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন সাই।
২০১৯ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় সলমন খান অভিনীত ‘দবং ৩’। ছবিতে সলমনের মূল নায়িকা ছিলেন সোনাক্ষী সিন্হা। তবে চিত্রনাট্য অনুযায়ী সলমনের কিশোরবেলার প্রেম ছিলেন সাই।
‘দবং ৩’ ছবিতে অভিনয়ের সময় সলমন এবং সাইয়ের বয়সের পার্থক্য ছিল ৩৬ বছরের। কেরিয়ারের প্রথম হিন্দি ছবিতে ৩৬ বছরের বড় অভিনেতার সঙ্গে ‘প্রেম’ করার জন্য সাইকে ঘিরে সমালোচনা শুরু হয়।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, সলমনের ভাল বন্ধু হিসাবে বলিউডে পরিচিত মহেশ। মহেশের পরিবারের সঙ্গেও সলমনের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। প্রথমে শোনা গিয়েছিল ‘দবং ৩’-এ সলমনের বিপরীতে অভিনয় করবেন মহেশের জ্যেষ্ঠ কন্যা অশ্বামী মঞ্জরেকর। কিন্তু পরে জানা যায় অশ্বামী নয়, মহেশের কনিষ্ঠ কন্যা সাইকেই এই চরিত্রে দেখা যাবে।
বক্স অফিসে ভাল ব্যবসা করতে পারেনি ‘দবং ৩’। কোভিড অতিমারির সময়ে ছবিটি মুক্তি পায়। তার পর থেকেই কী ধরনের ছবিতে অভিনয় করতে চান, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেন সাই। অভিনেত্রীকে শেষ দেখা গিয়েছে অজয় দেবগণ ও তব্বু অভিনীত ছবি ‘অওরো মে কাঁহা দম থা’ ছবিতে।
সাই সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “বয়সের পার্থক্য নিয়ে যে এত আলোচনা হতে পারে, তা আমি বুঝিনি। ‘দবং ৩’-এর শুটিং শুরু হওয়ার সময় আমার কোনও আপ্তসহায়কও ছিলেন না। আমার বাবাও শিল্পী। কিন্তু তাঁর সময়ের সঙ্গে আমাদের সময়ের পার্থক্য অনেক। তাই এ সব বিষয়ে আমার কোনও ধারণাই ছিল না। পর্দায় নিজেকে দেখতে পেয়ে আমি খুশি হয়েছিলাম।”
সাই ক্রমশ বুঝতে পেরেছিলেন যে, বয়সে বড় অভিনেতার সঙ্গে প্রেমের দৃশ্যে অভিনয় করে রোষের মুখে পড়েছেন তিনি। তবে সমাজমাধ্যমে বেশি সক্রিয় না থাকার কারণে এই সমালোচনার প্রভাব সাইয়ের মনে তেমন ভাবে পড়েনি।
সাই বলেছিলেন, “আমার গায়ের চামড়া খুব মোটা। আমার উপর কোনও কিছুই দ্রুত প্রভাব ফেলতে পারে না। ছোটবেলা থেকে আমি এমনই। আজও যদি কেউ প্রশংসা করেন তা হলে আমি খুশি হই। আবার কেউ খারাপ বললেও আমি সেটা বোঝার চেষ্টা করি। তবে আমি খুশিই থাকি।”
‘দবং ৩’-এর পর ‘মেজর’, ‘ঘানি’ এবং ‘স্কন্দ’ নামের তেলুগু ভাষার ছবিতে অভিনয় করেন সাই। বড় পর্দার পাশাপাশি বিশাল মিশ্র এবং বি প্রাকের মতো সঙ্গীতশিল্পীর মিউজ়িক ভিডিয়োয় অভিনয় করতে দেখা যায় সাইকে।
সমাজমাধ্যমেও কম সময়ের মধ্যে নিজস্ব অনুরাগীমহল তৈরি করে ফেলেছেন সাই। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামের পাতায় সাইয়ের অনুগামীর সংখ্যা ২১ লক্ষের গণ্ডি পার করে ফেলেছে।