Swati Maliwal Row

বৈভব গ্রেফতারের পরও স্বাতী বিতর্কে নীরব কেন কেজরী? ‘শ্লীলতাহানি’ বিতর্ক নিয়ে সরগরম রাজধানী

শুক্রবার ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৬৪ ধারার অধীনে স্বাতী নিজের কথা জানান। তার আগে স্বাতীর মেডিক্যাল পরীক্ষাও করানো হয়েছিল দিল্লির এমসে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২৪ ১৪:১৩
Share:
০১ ১৯

আম আদমি পার্টির (আপ) রাজ্যসভার সাংসদ স্বাতী মালিওয়ালকে নিয়ে উত্তাল জাতীয় রাজনীতি। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে সরগরম দিল্লি। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের ব্যক্তিগত সচিব বৈভব কুমারের বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছিলেন স্বাতী। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজধানীতে।

০২ ১৯

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনেই স্বাতীর সঙ্গে অভব্য আচরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। দিল্লি পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করেন স্বাতী।

Advertisement
০৩ ১৯

শুক্রবার ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৬৪ ধারার অধীনে স্বাতী নিজের কথা জানান। তার আগে স্বাতীর মেডিক্যাল পরীক্ষাও করানো হয়েছিল দিল্লির এমসে। বৃহস্পতিবার রাতেই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

০৪ ১৯

পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগপত্রে স্বাতী জানান, কেজরীর ব্যক্তিগত সচিব তাঁকে চড় মেরেছেন। এমনকি, তাঁর পেটে লাথি মারার অভিযোগ তুলেছেন আপ সাংসদ। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাতীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর বয়ান নথিবদ্ধ করে পুলিশ।

০৫ ১৯

বৈভবের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪, ৫০৬, ৫০৯ এবং ৩২৩ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। বৈভবের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এক জন নারীর সম্মান এবং সম্ভ্রম নষ্ট করতে অপরাধমূলক কাজ করেছেন। পুলিশ জোরকদমে তদন্ত চালাচ্ছে। তাঁকে খুঁজতে দিল্লি পুলিশের একাধিক দল চষে বেড়ায় বিভিন্ন এলাকায়। অবশেষে শনিবার দুপুরে বৈভবকে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশ।

০৬ ১৯

ঠিক কী ঘটেছিল? স্বাতীর দাবি, সোমবার কেজরীওয়ালের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাসভবনে গিয়েছিলেন তিনি। একটি ট্যাক্সি করে কেজরীওয়ালের বাসভবনে গিয়েছিলেন। সে সময়ই তাঁকে শারীরিক নিগ্রহ করেন বৈভব, এমনই অভিযোগ স্বাতীর।

০৭ ১৯

পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার সন্ধ্যায় তারা দু’টি ফোন পায়। প্রথম ফোনে এক মহিলা জানান তাঁকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। কেজরীওয়ালের বাসভবনেই ঘটনাটি ঘটেছে বলে দাবি করা হয়। যদিও তখন ওই মহিলা নিজের পরিচয় জানাননি। পরের ফোনে ওই মহিলা নিজেকে স্বাতী মালিওয়াল বলে পরিচয় দেন।

০৮ ১৯

এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে যায়। ঘটনাকে হাতিয়ার করে আসরে নামে বিজেপি। কেজরীওয়ালের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখায় তারা। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতেই স্বাতীকে নিগ্রহের ঘটনার পর দু’দিন কেটে যাওয়া সত্ত্বেও, কেজরীওয়াল কেন পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতৃত্ব।

০৯ ১৯

ঘটনার দিন আপ নেতৃত্ব মুখে কুলুপ দিলেও, ঘটনার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরে, ওই নিগ্রহের কথা স্বীকার করে বিবৃতি দেন দলের নেতা সঞ্জয় সিংহ। মঙ্গলবার স্বাতীর বাড়িতে যান তিনি। সঙ্গে ছিলেন দিল্লি মহিলা কমিশনের সদস্য বন্দনা সিংহ।

১০ ১৯

পরে সঞ্জয় সাংবাদিক সম্মেলন করে স্পষ্ট করেন, এই ঘটনায় পুরো দল স্বাতীর পাশে আছে। সেই বার্তা দিতেই স্বাতীর বাসভবনে গিয়েছিলেন সঞ্জয়। পাশাপাশি তিনি জানান, বৈভব অত্যন্ত ‘দুর্ব্যবহার’ করেছেন স্বাতীর সঙ্গে। কেজরীওয়াল এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ করবেন।

১১ ১৯

শুক্রবার দিল্লি পুলিশ এবং ফরেন্সিক দল কেজরীর বাসভবনে স্বাতী ‘নিগ্রহকাণ্ডের’ তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহে গিয়েছিলেন। অভিযোগকারিণীকেও নিয়ে যাওয়া হয় কেজরীর বাসভবনে। সোমবারের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয় সেখানে।

১২ ১৯

তার পরেই আপ নেত্রী তথা দিল্লির মন্ত্রী অতিশী একটি ভিডিয়ো ফুটেজ (আনন্দবাজার অনলাইন যার সত্যতা যাচাই করেনি) প্রকাশ করে স্বাতীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলেছিলেন। এই ঘটনায় দলের পুরনো অবস্থান থেকে সরে গিয়ে দিল্লি আপ মন্ত্রী অতিশী দাবি করেন, স্বাতী বিজেপির এজেন্ট হয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরীওয়ালকে ফাঁসাতে গিয়েছিলেন। কেজরী সে দিন বাসভবনে না থাকায় তিনি মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বৈভবকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছেন বলে দাবি করেন অতিশী। তার পরেই স্বাতী ‘ফুটেজ জালিয়াতি’র অভিযোগ তোলেন।

১৩ ১৯

১৯৮৪ সালের ১৫ অক্টোবর স্বাতী উত্তরপ্রদেশের গাজ়িয়াবাদে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর এক জন অফিসার। তাঁর বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছিলেন স্বাতীর মা সঙ্গীতা মালিওয়াল। বিচ্ছেদের পরে মায়ের সঙ্গেই থাকতেন স্বাতী।

১৪ ১৯

তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন স্বাতী। এই বিষয়ে স্নাতকও হন তিনি। ২০১২ সালের ২৩ জানুয়ারি নবীন জয়হিন্দ নামে এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেন স্বাতী। ২০১১ সালে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে অন্না হাজারের মঞ্চে দেখা গিয়েছিল নবীনকে। স্বাতীও যোগ দিয়েছিলেন ওই আন্দোলনে। সেই আন্দোলনের সময়েই কেজরীওয়ালের সঙ্গে আলাপ নবীন-স্বাতীর।

১৫ ১৯

‘পরিবর্তন’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থায় যোগ দিয়েছিলেন স্বাতী। সেই সংস্থার সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন কেজরীওয়াল এবং দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। ২০১৫ সালের জুলাই মাসে দিল্লির মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন করা হয় স্বাতীকে। তাঁর মেয়াদকালে নানা ইস্যুতে দিল্লি পুলিশের বিরোধিতা করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। সংঘাতেও জড়ান তিনি।

১৬ ১৯

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে আপ স্বাতীকে রাজ্যসভায় পাঠায়। তার আগে পর্যন্ত মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি।

১৭ ১৯

আবগারি মামলায় কেজরীওয়ালের গ্রেফতারির প্রতিবাদে সরব হতে দেখা গিয়েছিল স্বাতীকে। সামনে থেকে আন্দোলনে নেতৃত্বও দিয়েছেন তিনি। লোকসভা নির্বাচনের কারণে সুপ্রিম কোর্ট কেজরীওয়ালের অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছে। বর্তমানে আপের হয়ে জোরকদমে প্রচার করছেন তিনি।

১৮ ১৯

তার মধ্যেই স্বাতীর ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তিতে পড়েছেন কেজরীওয়াল। যদিও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী এখনও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে দলের তরফে ঘটনার কথা স্বীকার করে নেওয়া হয়।

১৯ ১৯

এই ঘটনা প্রসঙ্গে স্বাতী নিজেই এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করেছিলেন। সেই পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘আমার সঙ্গে যা হয়েছে, তা খুবই খারাপ। আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিষয়ে আমি পুলিশের কাছে আমার বক্তব্য জানিয়েছি। আশা করি যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ একই সঙ্গে বিজেপিকে এই বিষয় নিয়ে রাজনীতি না করার অনুরোধও করেছেন স্বাতী।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement