কথায় আছে, ‘কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না’। জীবনযুদ্ধে সাফল্যের জন্য অনেক কৃচ্ছ্রসাধনই করতে হয়। কিন্তু অনেকে সেই কঠোর সংগ্রামের সঙ্গে যুঝতে পারেন না। যাঁরা পারেন, তাঁরাই বাজিমাত করেন। সাফল্যের আলোয় বদলে যায় তাঁদের জীবনের গতিপথ। তেমনই এক সাফল্যের কাহিনি রয়েছে আইএএস অঞ্জলির।
এ দেশে অন্যতম কঠিন এবং জীবনে মোড় ঘোরানোর পরীক্ষা হল ইউপিএসসি। এই পরীক্ষায় বসে সফল হওয়া— একটা চ্যালেঞ্জ বটে। এই পরীক্ষায় বসে সফল হওয়া চাট্টিখানি কথা নয়! একাগ্রতা, অধ্যবসায় আর পরিশ্রম— এই তিন মন্ত্রেই নিজের লক্ষ্যপূরণ করেছেন অঞ্জলি।
হাই স্কুল বা কলেজের পঠনপাঠন শেষের পর কেরিয়ার গড়তে অনেকেই ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসেন। কিন্তু ক’জনই আর সফল হন! ইউপিএসসি পরীক্ষায় কী ভাবে সাফল্য মিলবে, এই ‘টিপস’ জানার জন্য মুখিয়ে থাকেন সকলে। সেই পরামর্শই দিয়েছেন ওই আইএএস।
দিল্লির বাসিন্দা অঞ্জলি। স্কুলজীবনের চৌহদ্দি পেরোনোর পর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
তবে ইঞ্জিনিয়ারিংকে পেশা হিসাবে বেছে নেননি। বরং ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সেই মতো শুরু করেন প্রস্তুতি।
ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসার সিদ্ধান্তের নেপথ্যে অঞ্জলির বাবার ভূমিকাও রয়েছে। তাঁর বাবা আইপিএস অফিসার। ৩৭ বছর ধরে কাজ করেছেন তিনি।
প্রথম বার ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসেই কেল্লাফতে হয়নি অঞ্জলির। প্রথম বার পরীক্ষায় ব্যর্থ হন তিনি। কিন্তু ব্যর্থতা তাঁকে দমাতে পারেনি। বরও লক্ষ্যপূরণে আরও শক্তি দিয়েছিল তাঁকে।
সাল ২০১৭। সে বার দ্বিতীয় চেষ্টায় ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হন অঞ্জলি। এর পরই আইএএস অফিসার হিসাবে নিজেকে মেলে ধরেন তিনি।
ইউপিএসসি পরীক্ষায় সাফল্যের চাবিকাঠি কী? এই প্রসঙ্গে নিজেই সেই কথা জানিয়েছিলেন অঞ্জলি। পড়াশোনায় জোর দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
একই সঙ্গে আরও কিছু ‘টিপস’ দিয়েছেন অঞ্জলি। ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতির সময় অনেক কিছু ত্যাগ করতে হবে। যেমন— অনুষ্ঠানবাড়িতে না-যাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে হুল্লোড় না-করা। এমনকি, পারিবারিক অনুষ্ঠানও এড়ানো। অর্থাৎ, মন দিয়ে শুধু পড়াশোনা করার কথা বলেছেন অঞ্জলি। এক কথায়, অধ্যবসায়। আর এই ভাবেই তিনি সফল হয়েছেন।
ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হওয়ার পর অন্ধ্রপ্রদেশ ক্যাডারে নিয়োগ করা হয়েছিল অঞ্জলিকে। প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।
প্রথমে অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুরে জয়েন্ট কালেক্টর পদে নিযুক্ত করা হয়েছিল অঞ্জলিকে। বিয়ের পর অবশ্য ক্যাডার বদলান এই আইএএস।
চলতি বছরের শুরুতে বিয়ে করেন অঞ্জলি। তাঁর জীবনসঙ্গীও আইএএস অফিসার।
২০২০ ব্যাচের আইএএস অফিসার হর্ষিত কুমারের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন অঞ্জলি। উত্তর ভারত এবং দক্ষিণ ভারতের রীতি মেনেই তাঁদের বিয়ে হয়।
অঞ্জলির স্বামী হরিয়ানা ক্যাডারের আইএএস অফিসার। তাই বিয়ের পর তিনিও হরিয়ানা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত হন। বর্তমানে ভিওয়ানির এডিসি পদে কর্মরত অঞ্জলি।