ক্লাসের মধ্যে ছাত্রীদের পর্নোগ্রাফির ভিডিয়ো দেখানোর অভিযোগ উঠেছে খোদ শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ওই শিক্ষক ক্লাসে ছাত্রীদের শ্লীলতাহানিও করেছেন বলে দাবি অভিভাবকদের।
ঝাড়খণ্ডের পশ্চিম সিংভূম জেলায় একটি গ্রামের স্কুলে পড়ান ওই শিক্ষক। নির্যাতিত ছাত্রীরা বাড়িতে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায়। তার পর অভিভাবকরা একজোট হয়ে শিক্ষককে ‘উপযুক্ত শাস্তি’ দিয়েছেন বলে খবর।
জানা গিয়েছে, মোট ছ’জন ছাত্রী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে। স্কুল থেকে বাড়ি গিয়ে মা-বাবার কাছে তারা জানিয়েছে ‘স্যর’ তাদের সঙ্গে কী করেছেন। অভিভাবকরা অন্য গ্রামবাসীদের সঙ্গে তা আলোচনা করেন।
ছাত্রীরা জানায়, ক্লাসে পড়ানোর ফাঁকে ওই শিক্ষক তাদের আলাদা করে ডেকে নেন। তার পর মোবাইলে তাদের পর্নোগ্রাফির ভিডিয়ো দেখান তিনি।
শুধু তাই নয়, ওই শিক্ষক ক্লাসে ছাত্রীদের শরীর স্পর্শও করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে তিনি নিজে এখনও কোনও মন্তব্য করেননি।
গ্রামে এই ঘটনা জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন সকলে। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে সরব হন গ্রামবাসীরা।
পুলিশ কী পদক্ষেপ করছে, তার জন্য বেশি ক্ষণ অপেক্ষা করেননি গ্রামবাসীরা। তাঁরা এক জায়গায় জড়ো হয়ে সিদ্ধান্ত নেন অভিযুক্ত শিক্ষককে কী ভাবে শাস্তি দেওয়া হবে।
অভিযুক্ত শিক্ষককে খুঁজে বার করেন গ্রামবাসীরাই। তার পর তাঁর মুখে কালি লেপে দেওয়া হয়। গোটা ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার।
গ্রামবাসীদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন মহিলা। মূলত গ্রামের মেয়েরাই দল বেঁধে ‘শাস্তি’ দেন শিক্ষককে।
শিক্ষকের মুখে কালি লেপে দেওয়ার পর তাঁর গলায় পরানো হয় জুতোর মালা। গ্রামের মহিলারা জুতো দিয়ে মালাটি তৈরি করেছিলেন।
কালি মুখে জুতোর মালা পরিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রামজুড়ে ঘোরানো হয়। তাঁকে হাঁটিয়ে নিকটবর্তী রেলস্টেশনের সামনে নিয়ে যান স্থানীয়রা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। তারা অভিযুক্তকে উদ্ধার করে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। কিন্তু তাতে জনতা আরও ক্ষুব্ধ হয়।
থানার বাইরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। তাঁরা অবিলম্বে অভিযুক্তের হাজতবাসের দাবি জানিয়েছেন। নির্যাতিত ছাত্রীদের অভিভাবকরা ধর্নায় বসেছেন থানার সামনে। সেখানেও অধিকাংশই ছিলেন মহিলা।
থানার বাইরে বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে এই বিক্ষোভ চলে। বড়া জামদা থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক বাসুদেব টোপ্পো জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কেউ দোষ করলে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, বুধবারই ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তাঁরা সম্মিলিত ভাবে এফআইআর দায়ের করেছিলেন। কিন্তু লিখিত অভিযোগ পেয়েও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ। তাই গ্রামবাসীরা নিজে থেকে তাঁকে শাস্তি দিয়েছেন।