২৮ অগস্ট, রবিবার নয়ডার সেক্টর ৯৩এ চত্বরে মাটির সঙ্গে মিশে গেল যমজ অট্টালিকা (টুইন টাওয়ার)। দশ বছরের এই নির্মাণকে মাত্র ন’সেকেন্ডেই গুঁড়িয়ে দেওয়া হল। কিন্তু এই প্রথম নয়, পৃথিবীর বুকে এমন অনেক বহুতল ছিল, যেগুলিকে নিমেষের মধ্যেই ধূলিসাৎ করা হয়েছে।
‘ওশান টাওয়ার’: ২০০৬ সালে আমেরিকার টেক্সাসে ‘ওশান টাওয়ার’ নামে একটি বিলাসবহুল আবাসন তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। ঠিক দু’বছর পর নির্মাণের কাজ চলাকালীন ৩১ তলার এই বহুতলে ফাটল দেখা দেয়।
মাটির নীচে প্রায় ১৪ ইঞ্চির মতো অংশ ধসেও পড়ে। এর ফলে বহুতলটি এক দিকে হেলে যায়। এই কারণে ওশান টাওয়ার ‘লিনিং টাওয়ার অব সাউথ পাদ্রে’ নামেও পরিচিত।
পুনর্নিমাণ করতে হলে তার খরচ প্রচুর। সব ভেবেই ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে বহুতলটি বিস্ফোরণের মাধ্যমে ধ্বংস করে দেওয়া হয়।
‘দ্য ট্রাম্প প্লাজা’: ১৯৮৪ সালে আমেরিকার নিউ জার্সির আটলান্টিক সিটিতে তৈরি করা হয় ‘দ্য ট্রাম্প প্লাজা’। হোটেল ও ক্যাসিনো হিসাবে ৩৪ তলার এই বহুতলটি বিশেষ পরিচিত ছিল।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই হোটেল এবং ক্যাসিনোর ব্যবসার ক্ষতি হতে থাকে। প্রায় চার দশক পর ২০২১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি এই বহুতলটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মোট তিন হাজার ডাইনামাইট স্টিক ব্যবহার করে ২০ সেকেন্ড সময়ের মধ্যে এই বহুতলটি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়।
‘দ্য এএফই টাওয়ার’: জার্মানের ফ্র্যাঙ্কফার্ট এলাকায় ‘দ্য এএফই টাওয়ার’ নামের বহুতলটি অবস্থিত ছিল। ১৯৭০ সালে তৈরি হওয়া এই বহুতলটি জোহান ভল্ফগ্যাঙ্গ গ্যেঠে ইউনিভার্সিটির অংশ ছিল।
৩৮ তলার এই বহুতলটি ১১৬ মিটার উঁচু ছিল। ২০১৪ সালে মোট ৯৫০ কেজি বিস্ফোরক ব্যবহার করে এই বহুতলটি ভেঙে ফেলা হয়। ১০ সেকেন্ডের মধ্যে ৩৮ তলার এই বহুতলটি ভেঙে পড়ে।
‘দ্য মিনি প্লাজা’: ১৬৫ মিটার উঁচু দুবাইয়ের ‘দ্য মিনি প্লাজা’ বহুতল নির্মাণের কাজ ২০০৭ সালে শুরু হয়। ১৪৪টি তলা এবং চারটি টাওয়ার তৈরি করার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এই জায়গায় অন্য কিছু তৈরি করা হবে।
নির্মাণের কাজ অসম্পূর্ণ থাকাকালীনই ২০২০ সালের নভেম্বরে ছ’হাজার কেজি বিস্ফোরক ব্যবহার করে প্রায় ১০ সেকেন্ডের মধ্যে এই বহুতলটি ভেঙে ফেলা হয়।
‘দ্য গোল্ডেন ফ্লাওয়ার বিল্ডিং’: ৩৮৭ মিটার উঁচু ‘দ্য গোল্ডেন ফ্লাওয়ার বিল্ডিং’টি চিনের উচ্চতম বহুতলগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল। শি’য়ান সিটিতে অবস্থিত এই বহুতল নির্মাণের কাজ শেষ হয় ১৯৯৯ সালে।
২৬ তলার এই নির্মাণটি বহু বছর কোনও কাজেই ব্যবহার করা হয়নি। ১৬ বছর ফাঁকা অবস্থায় পড়ে থাকায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এই গগনচুম্বীকে ভেঙে ফেলা হবে।
২০১৭ সালে ১২৭০ কেজি ওজনের ডাইনামাইট এবং ১২,০০০ ডিটোনেটর ব্যবহার করে ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে এই বহুতলকে ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়া হয়।