জন্মের পর থেকেই মাকে চোখে দেখেননি সুইৎজ়ারল্যান্ডের তরুণী। তাঁর মা নাকি অনাথ আশ্রমের দরজার সামনে তাঁকে রেখে দিয়ে চলে গিয়েছিলেন। এখনও নিরুদ্দেশ তিনি। মায়ের সন্ধানে সুইৎজ়ারল্যান্ড থেকে ভারতে ফেরেন বিদ্যা।
১৯৯৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মুম্বইয়ে জন্ম বিদ্যা ফিলিপনের। জন্মের পর ‘মিশনারিজ় অফ চ্যারিটি’র একটি শাখায় বিদ্যাকে রেখে চলে যান তাঁর মা। তার পর সুইৎজ়ারল্যান্ডের এক দম্পতি দত্তক নেয় বিদ্যাকে।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, জন্মের পর প্রায় এক বছর মুম্বইয়ের ‘মিশনারিজ় অফ চ্যারিটি’র ভিলে পার্লে এলাকার শাখায় থেকেছিলেন বিদ্যা।
১৯৯৭ সালে সুইৎজ়ারল্যান্ডের এক দম্পতি বিদ্যাকে দত্তক নিয়ে মুম্বই থেকে সুইৎজ়ারল্যান্ডে চলে যান। সেখানেই স্কুল-কলেজের পড়াশোনা শেষ করেছেন বিদ্যা।
পড়াশোনার পর বিয়েও করেন বিদ্যা। স্বামীকে নিয়েই মায়ের সন্ধানে সুইৎজ়ারল্যান্ড থেকে মুম্বই ফেরেন।
ভিলে পার্লে এলাকার ‘মিশনারিজ় অফ চ্যারিটি’র যে শাখায় বিদ্যাকে তাঁর মা রেখে গিয়েছিলেন সেখানে গিয়ে প্রথমে খোঁজ নিয়েছিলেন তরুণী।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, ছোট্ট বিদ্যাকে যখন ‘মিশনারিজ় অফ চ্যারিটি’র শাখার সামনে রেখে যাওয়া হয়েছিল, তখন তাঁর মায়ের বয়স ছিল ২০। মুম্বই গিয়ে মায়ের ব্যাপারে খোঁজ নিতে ওই শাখাতেই প্রথম গিয়েছিলেন বিদ্যা।
‘মিশনারিজ় অফ চ্যারিটি’র তরফে বিদ্যাকে একটি ঠিকানা দেওয়া হয়। বিদ্যার মা সেখানে থাকতে পারেন বলে অনুমান করেন শাখার কর্মীরা।
মুম্বইয়ের দাহিসার এলাকার সেই ঠিকানায় যান বিদ্যা। কিন্তু সেখানে মাকে খুঁজে পাননি।
মাকে খুঁজে পেতে মুম্বইয়ের এক আইনজীবীর সাহায্য নেন বিদ্যা। তবে ১০ বছর ধরে সন্ধান চালানোর পরেও মায়ের খোঁজ পাননি তিনি।
বিদ্যার মায়ের প্রসঙ্গে ওই আইনজীবী জানান, মুম্বই এত বড় জায়গা, লোকজন সবসময় এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় আস্তানা বদল করছেন। ফলে বিদ্যার মায়ের খোঁজ পাওয়া দুষ্কর হয়ে উঠছে।
আইনজীবীর বক্তব্য, ‘‘বিদ্যার মায়ের ব্যাপারে আমরা অনেক খবর পেয়েছি। আশা করছি সেই সূত্রগুলি ধরে এগোলে খুব তাড়াতাড়ি তাঁর খোঁজ পাওয়া যাবে।’’
১০ বছর ধরে খোঁজ চালানোর পরেও আশাহত হননি বিদ্যা। তিনি বলেন, ‘‘মাকে এখনও খুঁজে পাইনি। কিন্তু এতটুকু জানতে পেরেছি যে তাঁর পদবি ছিল কাম্বলি। মুম্বইয়ের অধিবাসীদের কাছে আমার অনুরোধ সকলেই যেন মাকে খুঁজে বার করতে সাহায্য করেন।’’
ওই আইনজীবী জানান, মুম্বইয়ের এক সমাজকর্মী বিদ্যার মায়ের বিষয়ে বহু তথ্য দিয়েছেন। এমনকি এক জনের খোঁজও পাওয়া গিয়েছে, যাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করলে বিদ্যার মায়ের ব্যাপারে কোনও খবর পাওয়া যেতে পারে বলে জানা গিয়েছে।