অভিষেককে ফেরাল শীর্ষ আদালতও। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেককে তলবের বিষয়ে কোনও রকম হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিম কোর্ট।
‘অস্বস্তি’তেই থাকতে হল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কী বলল শীর্ষ আদালত?
শুক্রবার শীর্ষ আদালত জানায়, বিচারপতি অমৃতা সিংহের একক বেঞ্চ এবং বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে কোনও হস্তক্ষেপ নয়। তবে ইডিকে আইন মেনে কাজ করতে হবে। আইনের বাইরে কিছু করা যাবে না।
শুক্রবার বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি এসভিএন ভাট্টির ডিভিশন বেঞ্চ অভিষেকের আবেদন খারিজ করে দেয়। মামলাটিরও নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়।
বিচারপতি সিংহের একাধিক নির্দেশের ফলে তাঁর অধিকার এবং স্বার্থে প্রভাব পড়ছে এই আবেদন জানিয়ে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যান অভিষেক। তৃণমূল নেতার বক্তব্য ছিল, সিঙ্গল বেঞ্চ তদন্তের প্রতিটি পদক্ষেপ নিয়ন্ত্রণ করছে।
অভিষেক, তাঁর পরিবার এবং লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস কোম্পানির বিরুদ্ধে ইডিকে নির্দিষ্ট করে নির্দেশ দিচ্ছেন বিচারপতি সিংহ। কম সময়ের ব্যবধানে প্রায় ১০ বছর আগের নথি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিতে বলা হয়েছে। আদালত তদন্তে ‘নজরদারি’র পরিবর্তে ‘তদারকি’ করছে।
বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ অভিষেকের আবেদনে সাড়া দেয়নি। তারা তাঁকে তদন্তে সাহায্য করতে বলেন।
ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ছিল, এত গুরুত্বপূর্ণ তদন্তে ইডি যে তথ্য এবং নথি চেয়েছে তা কোনও ভাবেই উপেক্ষা করা যায় না।
ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, তদন্তের স্বার্থে তথ্য এবং নথি না দিলে তার প্রভাব সাংঘাতিক হতে পারে। এমনকি, এ নিয়ে জনসাধারণের মনে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
দুই বিচারপতির বেঞ্চ আরও জানায়, সিঙ্গল বেঞ্চ নিজের এক্তিয়ার লঙ্ঘন করেনি। অভিষেক ওই কোম্পানিতে দু’বছর ডিরেক্টর ছিলেন। বর্তমানে অভিষেক কোম্পানির সিইও। তিনি এক জন সাংসদও।
ফলে তথ্য এবং নথি প্রকাশ করলে তাতে অসুবিধার কিছু হবে না বলে মনে করে আদালত। তাই সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ মতো অভিষেকের জমা দেওয়া সব নথি খতিয়ে দেখবে ইডি। তার পরে প্রয়োজন মনে করলে অভিষেককে দুর্গাপুজোর দিনগুলি ছাড়া ৪৮ ঘণ্টা আগে সমন পাঠাতে পারবে তদন্তকারী সংস্থা।
ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের এই অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান অভিষেক। তাঁর আইনজীবী শীর্ষ আদালতে জানান, আদালতের ‘নজরদারি’তে তদন্ত চলছে।
কিন্তু কোনও কোনও ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের একক বেঞ্চ তদন্তপ্রক্রিয়ায় ‘তদারকি’ করছে বলে দাবি করা হয় অভিষেকের তরফে।
সর্বোচ্চ আদালতে অভিষেকের তরফে বলা হয়, একক বেঞ্চ এক বার ইডি অফিসারকে বদল করছে, আবার তাঁকে ফিরিয়ে আনছে। তদন্তে বাবা-মাকেও ‘জড়িয়ে ফেলা হচ্ছে’ বলে সুপ্রিম কোর্টে জানান অভিষেক।
সব মিলিয়ে, শীর্ষ আদালত স্বস্তি দিল না অভিষেককে। সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহের একক বেঞ্চ এবং বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে কোনও হস্তক্ষেপ নয়। তবে ইডিকে আইন মেনে কাজ করতে হবে।