North Korea-South Korea Conflict

চিরশত্রুকে জব্দ করতে নয়া কৌশল কিমের! আমেরিকার বন্ধু দেশে পাঠানো হল শতাধিক ‘নোংরা’ বেলুন

দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার রাত থেকে উত্তর কোরিয়ার দিক থেকে আবর্জনাভর্তি বেলুনগুলি ভেসে এসেছে। বুধবার সকাল পর্যন্ত এই ধরনের ১৫০টি বেলুন তারা চিহ্নিত করেছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২৪ ১৬:০২
Share:
০১ ২০

আধুনিক বিশ্বে সচরাচর কোনও দেশ অপর দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলে ক্ষেপণাস্ত্র, রকেট, পরমাণু বোমার মতো অস্ত্র ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু পড়শি দেশের বিরুদ্ধে ময়লাভর্তি প্যাকেটকে অস্ত্র বানানো এক অভিনব ঘটনা।

০২ ২০

আর এই অভিনব ঘটনার সাক্ষী রইল দক্ষিণ কোরিয়া। গত বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার উত্তর সীমান্তবর্তী অঞ্চলে হঠাৎ কিছু সাদা বেলুন উড়তে দেখা যায়। বেলুনগুলি ধীর গতিতে নেমে আসে মাটিতে।

Advertisement
০৩ ২০

দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলি সেই বেলুনগুলির কিছু ছবি প্রকাশ করেছে। দেখা যাচ্ছে, বেলুনের নীচে বাঁধা কালো পলিথিন। তার ভিতরে রয়েছে আবর্জনা, পশুপাখির মলও!

০৪ ২০

এই ছবিগুলির সত্যতা যাচাই না করা গেলেও উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থাকে সে দেশের সর্বোচ্চ নেতা কিম জং জনের বোন কিম ইয়ো জং জানিয়েছেন, এর মধ্যে কোনও ‘অন্যায়’ নেই।

০৫ ২০

‘লেডি কিম’ সংবাদ সংস্থাটিকে জানিয়েছেন, তাঁরা বেলুনের সঙ্গে টয়লেট পেপার এবং আরও নানা বর্জ্য পদার্থ দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে পাঠিয়ে দিয়েছেন। কী কারণে তাঁদের এই পদক্ষেপ, তা-ও জানিয়েছেন কিম জং জনের বোন।

০৬ ২০

দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার রাত থেকে উত্তর কোরিয়ার দিক থেকে বেলুনগুলি ভেসে এসেছে। বুধবার সকাল পর্যন্ত এই ধরনের ১৫০টি বেলুন তারা চিহ্নিত করেছে।

০৭ ২০

দক্ষিণ কোরিয়ার তরফে কিমের দেশকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, এই ধরনের কাজ আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী। উত্তর কোরিয়াকে অবিলম্বে এই ‘নিচু মানের কাজ’ বন্ধ করার কথাও বলেছে দক্ষিণ কোরিয়া।

০৮ ২০

কিন্তু কিসের জন্য এই আবর্জনা-যুদ্ধ? উত্তর কোরিয়া প্রশাসন সূত্রে খবর, দক্ষিণ কোরিয়ার বেলুন-প্রচারের পাল্টা তাদের এই কৌশল। প্রসঙ্গত, অতীতে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে একঝাঁক বেলুন উত্তর কোরিয়ায় ঢুকেছে।

০৯ ২০

সেই সব বেলুনে ছিল উত্তর কোরিয়া বিরোধী মন্তব্য। এমনকি উত্তর কোরিয়ার শাসকদের সমালোচনা করে ইউএসবি স্টিকসের মাধ্যমে পপ মিউজ়িকের ভিডিয়ো পাঠানোরও অভিযোগ রয়েছে সিওলের বিরুদ্ধে।

১০ ২০

উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার সংঘাতের শুরু সেই ১৯৫০ সালে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আগে প্রায় সাড়ে তিন দশক ধরে জাপানের উপনিবেশ ছিল অবিভক্ত কোরিয়া।

১১ ২০

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের পর কোরিয়ার দুই প্রান্তে প্রভাব বিস্তার করে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং আমেরিকা। ৩৮ ডিগ্রি অক্ষরেখার উত্তরে কিম উল সুঙের নেতৃত্বে আর দক্ষিণ কোরিয়ায় সিংম্যান রি-র নেতৃত্বে সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়।

১২ ২০

দুই পক্ষই দাবি করে যে, তাদের প্রতিষ্ঠিত সরকারই বৈধ। ১৯৫৩ সালে একটি চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধে ইতি টানা হলেও দুই দেশের বিবাদ এখনও বর্তমান।

১৩ ২০

ঠান্ডা যুদ্ধের সময় থেকেই মূলত সোভিয়েত প্রভাবে উত্তর কোরিয়া সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে আর দক্ষিণ কোরিয়া আমেরিকার প্রভাবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

১৪ ২০

পরে অবশ্য কিম জং উনের পরিবারের বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্র চালানোর অভিযোগ ওঠে। এমনকি বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করারও অভিযোগ ওঠে।

১৫ ২০

উত্তর কোরিয়া অবশ্য যাবতীয় অভিযোগকে আমেরিকার সমর্থনপুষ্ট গণমাধ্যমের অপপ্রচার বলে উড়িয়ে দেয়। অন্য দিকে, পরিকাঠামো উন্নয়ন কিংবা বিদেশ নীতি প্রণয়ন— দক্ষিণ কোরিয়ায় ক্রমশ আমেরিকার ছায়া দীর্ঘতর হয়ে ওঠে।

১৬ ২০

ইদানীং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিমের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নানা জল্পনা চলছে। সম্প্রতি দুই নেতা তাঁদের যৌথ বিবৃতিতে আমেরিকার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

১৭ ২০

একাধিক বার পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা করে দক্ষিণ কোরিয়াকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন কিম। পাল্টা হুমকি দিয়েছে উত্তর কোরিয়াও।

১৮ ২০

তবে উত্তর কোরিয়ার আগের সরকার এই বেলুনের মাধ্যমে কিম-বিরোধী প্রচারে রাশ টেনে সুসম্পর্ক রক্ষার একটা চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সে দেশের একটি আদালত ‘মতপ্রকাশে হস্তক্ষেপ’ বলে সেই সিদ্ধান্তকে খারিজ করে দেয়।

১৯ ২০

তার পর থেকে একাধিক বার উত্তর কোরিয়ায় পাড়ি দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার ‘বার্তাবাহী’ বেলুন। মনে করা হচ্ছে আবর্জনা পাঠিয়ে এ বার তারই মধুর প্রতিশোধ নিল কিমের দেশ।

২০ ২০

তবে যুদ্ধ বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, এই ধরনের কৌশলে সরাসরি যুদ্ধের ঝুঁকি নেই। বিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করলেও এ ক্ষেত্রে কেউই কামান উঁচিয়ে যুদ্ধের ঝুঁকি নেবে না। বরং প্রতিপক্ষকে জব্দ করার পাল্টা কৌশল খুঁজতে হবে দক্ষিণ কোরিয়াকে।

সব ছবি: সংগৃহীত

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement