দক্ষিণ সিনেমাজগৎ জন্ম দিয়েছে বহু নামকরা অভিনেত্রীর। অভিনয় দক্ষতা এবং উপার্জনের দিক দিয়ে তাঁরা অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন। শ্রীদেবী, জয়াপ্রদা, ভানুপ্রিয়া, রেবতী থেকে সামান্থা, সাই পল্লবী, রশ্মিকা মন্দনা থেকে নিত্য মেনন, শ্রুতি হাসন— দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রির সফলতার চূড়ায় থাকা তারকাদের মধ্যে এঁদের নাম উল্লেখযোগ্য। এই দক্ষিণী সিনেমার ‘নুর’ ছিলেন আরও একজন। নিশা নুর।
তবে এই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অন্ধকার দিকও রয়েছে যা এই সফল অভিনেত্রীর কর্মজীবন থেকে ব্যক্তিগত জীবন সব কিছুই শেষ করে দিয়েছে। আশির দশকে দক্ষিণ ভারতে বড়পর্দার জনপ্রিয় মুখ ছিলেন নিশা।
তামিল, মালয়লম ছবি ছাড়াও তেলুগু ও কন্নড় ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে নিশাকে। ১৯৬২ সালে তামিলনাড়ুর নাগাপট্টিনমে জন্ম অভিনেত্রীর।
‘টিক টিক টিক’, ‘কল্যাণ আগাথিগল’, ‘আইয়ার দ্য গ্রেট’-এর মতো সুপারহিট ছবি উপহার দিয়েছেন দর্শককে।
কমল হাসনের সঙ্গে কাজ করার সুযোগও পেয়েছিলেন তিনি। অভিনেত্রীর অনুরাগীর সংখ্যাও ছিল প্রচুর।
কিন্তু এই যশ-খ্যাতিই অন্ধকারের দিকে টেনে নিয়ে যায় নিশাকে। কানাঘুষো শোনা যায়, দক্ষিণের এক প্রযোজক নিশাকে জানান, যৌনকর্মীর পেশায় নামলে প্রচুর অর্থ উপার্জন করা যায়।
অর্থলাভের ফাঁদে পা দিয়ে অভিনেত্রী তাঁর নির্দেশ মেনে এই পেশায় নামেন। বহু অভিনেতার সঙ্গেও শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন তিনি।
কিন্তু সুখের দিনও শেষ হয়। ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর জনপ্রিয়তা কমে আসায় তাঁর কাজও কমে যেতে থাকে। দক্ষিণের ফিল্মজগৎ থেকে ধীরে ধীরে তিনি যৌনপেশার দিকে ঝুঁকে পড়েন।
ইন্ডাস্ট্রি থেকে নিরুদ্দেশ এই অভিনেত্রীর খোঁজ মেলে বহু বছর পর। দরগার সামনে ভিক্ষা করছিলেন তিনি। এক সময় ডাকসাইটে সুন্দরী ছিলেন যিনি, তাঁর যেন কঙ্কালসার অবস্থা।
শরীরে জোর নেই। ঠিক মতো বসেও থাকতে পারছেন না নিশা। শরীরের উপর ঘুরে বেড়াচ্ছে পোকামাকড়।
পরিচয় দেওয়ার পর স্থানীয়েরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরীক্ষানিরীক্ষা চলার পর চিকিৎসকেরা জানান, নিশার শরীরে এডস রোগ দানা বেঁধেছে।
যৌন অসুখের বীজ অভিনেত্রীর শরীরে এমন ভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল যে, তাঁকে বাঁচানোর সম্ভাবনাও ছিল ক্ষীণ।
২০০৭ সালে চেন্নাইয়ের তাম্বরমে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন নিশা নুর। মৃত্যুপথে সঙ্গী করে নিয়ে যান যশোলাভের অন্ধকার দিক। দক্ষিণের ইন্ডাস্ট্রিও এক দক্ষ অভিনেত্রীকে হারিয়ে ফেলে।