আশির দশকের শেষের দিকে হিন্দি ছবিতে গান করা শুরু করেন কুমার শানু। ১৯৮৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হিরো হীরালাল’ ছবিতে প্রথম গান করেন শানু। তার পর ধীরে ধীরে তাঁর কাছে বলিউডের নামকরা সঙ্গীত পরিচালকদের কাছ থেকে গানের প্রস্তাব আসতে থাকে। বাংলা ছবির পাশাপাশি হিন্দি ছবিতে গান করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি।
কিন্তু বলিউডে এসেই পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন শানু। ১৯৯০ সালে শানু তাঁর কেরিয়ারে মাইলফলক গড়ে তোলেন। ‘আশিকি’ ছবির সমস্ত গান গেয়েছিলেন তিনি। প্রতিটি গানই সুপারহিট হয়েছিল। তার পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।
১৯৯০ সালেই মুক্তি পায় মহেশ ভট্ট পরিচালিত ‘জ়ুর্ম’ ছবিটি। এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন বিনোদ খন্না, মীনাক্ষী শেশাদ্রি, সঙ্গীতা বিজলানির মতো তারকারা।
‘জুর্ম’ ছবিতে ‘যব কোয়ি বাত বিগড় যায়ে’ গানটি বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। এই গানটি গেয়েছিলেন কুমার শানু এবং সাধনা সরগম। ছবিটির প্রিমিয়ারের সময় বলি তারকাদের মনে ধরেছিল গানটি।
শানুর কণ্ঠ শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেনমীনাক্ষীও। ‘জ়ুর্ম’ ছবির প্রিমিয়ারের সময় তাই গায়কের সঙ্গে আলাপ জমিয়েছিলেন মীনাক্ষী। শানুকে নিজের অজান্তেই ভাল লেগে যায় অভিনেত্রীর।
সেই সময় কুমার শানু বিবাহিত ছিলেন। বলিউডে পা রাখার আগেই রীতা ভট্টাচার্যকে বিয়ে করেছিলেন শানু। কানাঘুষো শোনা যায় যে, বিয়ের পর অভিনেত্রী কুনিকা লালের সঙ্গেও সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন গায়ক। কিন্তু বেশি দিন সেই সম্পর্ক টেকেনি।
১৯৯০ সালে যখন ‘জ়ুর্ম’ ছবিটি মুক্তি পায়, সেই সময় শানু এবং রীতা এক ছাদের তলায় দশ বছরের বেশি সময় কাটিয়ে ফেলেছেন। মীনাক্ষী তাঁর মনের কথা জানান শানুকে। অভিনেত্রীকেও মনে ধরে শানুর।
শানু যে বিবাহিত ছিলেন তা জেনেই তাঁর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন মীনাক্ষী। তিন বছর লোকচক্ষুর আড়ালে শানু এবং মীনাক্ষী প্রেম করেন। শানুর এই বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের ব্যাপারে জানতে পেরে যান গায়কের সচিব।
কুমার শানু এবং মীনাক্ষীর সম্পর্কের কথা রীতাকে জানান সেই সচিব। তিনি বলেন, ‘‘কুমার শানুর প্রচুর বান্ধবী রয়েছে। উনি মীনাক্ষীর সঙ্গে প্রেমও করছেন।’’
স্বামীর অন্য সম্পর্কের কথা শুনে উত্তেজিত হয়ে পড়েন রীতা। মীনাক্ষীর সঙ্গে শানুর সম্পর্কের জন্য অভিনেত্রীকেই দায়ী করতে শুরু করেন তিনি।
জনসমক্ষে তিনি কুমার শানু এবং মীনাক্ষীর সম্পর্কের ব্যাপারে জানান। এক জন বিবাহিত পুরুষের সংসার ভাঙছেন বলে সকলে মীনাক্ষীকেই দোষ দিতে শুরু করেন।
সংসার ভাঙার অভিযোগে কাজের প্রস্তাবও কম পেতে শুরু করেন মীনাক্ষী। কিছু সময় পর বলিউডের ছবি নির্মাতারা মীনাক্ষীকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়াই বন্ধ করে দেন।
মীনাক্ষীর সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে কথা জানাজানির পর শানুর সংসারেও চিড় ধরে। ১৯৯৪ সালে রীতার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় শানুর।
ছবিতে আর কাজ পাচ্ছিলেন না বলে মীনাক্ষীও বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৯৫ সালে আমেরিকার এক জন ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কারের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন অভিনেত্রী।
অন্য দিকে প্রথম বিয়ে ভাঙার পর সালোনিকে বিয়ে করেন কুমার শানু। প্রথম পক্ষের তিন সন্তান এবং দ্বিতীয় পক্ষের দুই সন্তান রয়েছে শানুর। মীনাক্ষী বর্তমানে টেক্সাসের বাসিন্দা। ভরতনাট্যম, কত্থক এবং ওডিসি নাচের প্রশিক্ষণ দেন তিনি। অভিনয় জগতের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই।