Shraddha Walker murder case

মেলেনি শ্রদ্ধাকে খুনের ছুরি, বহু প্রমাণই এখনও অধরা, শাস্তি কি এড়িয়ে যাবেন আফতাব?

শ্রদ্ধা খুন হওয়ার পর, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৫৪ হাজার টাকা তুলেছিলেন আফতাব। সেই লেনদেনের নথিও রয়েছে পুলিশের কাছে। কিন্তু এখনও অনেক প্রমাণ হাতে আসেওনি।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২২ ১৫:৫৩
Share:
০১ ২৪

বান্ধবীকে ঠান্ডা মাথায় খুন করে কচুকাটা করার অভিযোগ রয়েছে আফতাব আমিন পুনাওয়ালার বিরুদ্ধে। অথচ যে অস্ত্র ব্যবহার করে এই কাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ, তার খোঁজই পায়নি পুলিশ। ফলে প্রশ্ন উঠছে, শ্রদ্ধা ওয়ালকর হত্যা মামলায় কি ছাড়াও পেয়ে যেতে পারেন ২৮ বছরের তরুণ আফতাব?

০২ ২৪

কথায় বলে আইন অন্ধ। প্রমাণের বাইরে আর কিচ্ছু দেখার ক্ষমতা নেই। ফলে প্রশ্ন উঠছে প্রমাণের অভাবে কি আইনের ফাঁক গলে ছাড়া পেয়ে যেতে পারেন শ্রদ্ধা হত্যার মূল অভিযুক্ত?

Advertisement
০৩ ২৪

পুলিশের হাতে এখনও পর্যন্ত বেশ কিছু প্রমাণ চলে এসেছে। যার মধ্যে অন্যতম আফতাবের নিজের জবানবন্দি, যেখানে আফতাব নিজেই স্বীকার করেছে শ্রদ্ধাকে হত্যা করার কথা। কিন্তু আদালতে যত ক্ষণ না সেই একই কথা বলছে, তত ক্ষণ ওই জবানবন্দির ভিত্তিতে তাঁকে অপরাধী বলে গণ্য করা যাবে না।

০৪ ২৪

আর কি প্রমাণ রয়েছে? পুলিশ সেই ফ্রিজেরও সন্ধান পেয়েছে। যেখানে শ্রদ্ধার দেহের টুকরো টুকরো অংশ কেটে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছিল। ৩০০ লিটারের ওই ফ্রিজটি ১৯ মে অর্থাৎ শ্রদ্ধা খুন হওয়ার পরের দিনই কিনেছিলেন আফতাব। পুলিশের কাছে সেই ফ্রিজ কেনার বিল রয়েছে। রয়েছে সেই ফ্রিজের দোকানের মালিকের বয়ানও।

০৫ ২৪

শ্রদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছিল ১৮ মে। হত্যার কিছু দিন আগেই দিল্লির একটি দোকান থেকে আফতাব একটি ছুরি কিনেছিলেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন এক বিক্রেতা। পুলিশের কাছে সেই বিক্রেতার বয়ানও রয়েছে।

০৬ ২৪

আছে অনিল সিংহ নামে এক চিকিৎসকের বয়ানও। ওই চিকিৎসকের দাবি, আফতাবের হাতে ছুরির আঘাতের গভীর ক্ষত ছিল। সেই ক্ষত সেলাই করার দরকারও পড়েছিল। পেশায় অস্ত্রোপচার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনিলের কাছেই এসেছিলেন আফতাব। সেই ক্ষতের চিকিৎসা করেন অনিল।

০৭ ২৪

শ্রদ্ধাকে হত্যার ঘটনায় হন্তকের মানসিক সমস্যা ছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের। চিকিৎসক অনিল পুলিশকে আফতাবের মানসিক অবস্থার বর্ণনাও দিয়েছিলেন। অনিল বলেছিলেন, চিকিৎসা চলাকালীন আফতাবের সঙ্গে যত বার তাঁর কথা হয়েছে প্রত্যেক বারই তাকে মানসিক ভাবে অস্থির এবং আক্রমণাত্মক মনে হয়েছে।

০৮ ২৪

শ্রদ্ধার শরীরের টুকরো টুকরো করা অংশও দিল্লির উপকণ্ঠে ছতরপুরের জঙ্গল খুঁজে বের করেছে পুলিশ। সেই সমস্ত দেহাবশেষ ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

০৯ ২৪

আফতাব এবং শ্রদ্ধার ফ্ল্যাটের রান্নাঘরে রক্তের দাগও পাওয়া গিয়েছে। সেই রক্তের নমুনাও পাঠানো হয়েছে ফরেনসিক গবেষণাগারে।

১০ ২৪

শ্রদ্ধা খুন হওয়ার পর, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৫৪ হাজার টাকা তুলেছিলেন আফতাব। সেই লেনদেনের নথিও রয়েছে পুলিশের কাছে।

১১ ২৪

পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জেনেছে, শ্রদ্ধার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে নিয়মিত তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন আফতাব। পুলিশকে যদিও আফতাব জানিয়েছিলেন শ্রদ্ধা তাঁর সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি ছেড়েছেন, কিন্তু তার পরও শ্রদ্ধার ফোন থেকেই দিল্লির ওই ফ্ল্যাটে বসে কথা বলতেন আফতাব। যাতে বন্ধুদের কোনও সন্দেহ না হয়। পুলিশ আফতাবের ফোন এবং শ্রদ্ধার ফোনের লোকেশন সংক্রান্ত তথ্য এবং কল রেকর্ড হাতে পেয়েছে।

১২ ২৪

এ ছাড়া রয়েছে শ্রদ্ধার বাবা বিকাশ ওয়ালকরের বয়ান। যেখানে তিনি জানিয়েছেন, আফতাবের জন্যই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন শ্রদ্ধা। পরে তিনি টানা দু’মাস মেয়ের ফোন সুইচ অফ পেয়েছিলেন। এ-ও জেনেছিলেন, শ্রদ্ধার উপর অত্যাচার করতেন আফতাব।

১৩ ২৪

শ্রদ্ধার বন্ধুরাও পুলিশকে জানিয়েছেন, শ্রদ্ধা তাঁদের কাছে আফতাবের অত্যাচারের কথা বলেছিলেন, এ নিয়ে পরামর্শও করেছিলেন।

১৪ ২৪

পুলিশ আফতাবের দিল্লির ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে শ্রদ্ধার একটি ব্যাগও খুঁজে পেয়েছে।

১৫ ২৪

কিন্তু এত রকম প্রমাণ এবং নথিপত্র থাকলেও পুলিশের হাতে বেশ কিছু জরুরি তথ্য এসে পৌঁছয়নি।

১৬ ২৪

পুলিশ জানিয়েছে, যে অস্ত্রে শ্রদ্ধাকে হত্যা করার পর ৩৫ টুকরো করে কাটা হয়েছে, সেই ধারালো অস্ত্র খুঁজে পায়নি তারা। এমনকি ওই অস্ত্র ছুরি না করাত, তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে পুলিশের।

১৭ ২৪

শ্রদ্ধার শরীরের বেশ কিছু টুকরো সংগ্রহ করতে পারলেও আরও অনেক দেহাংশই এখনও নিখোঁজ।

১৮ ২৪

মঙ্গলবার আফতাবকে নিয়ে ছতরপুরের জঙ্গলে গিয়েছিল পুলিশ। সেখানে ১০টি কালো ফয়েল খুঁজে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। অভিযোগ এই ফয়েলেই শ্রদ্ধার দেহের টুকরো জঙ্গলে ছুড়ে ফেলতে নিয়ে আসতেন আফতাব। কিন্তু তার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

১৯ ২৪

যে দিন শ্রদ্ধাকে খুন করা হয়েছিল, সে দিন শ্রদ্ধার পরনের যে পোশাক-আশাক ছিল, তা এখনও খুঁজে পায়নি পুলিশ।

২০ ২৪

খুঁজে পাওয়া যায়নি শ্রদ্ধার খুন হওয়ার দিন আফতাবের পরনের জামাকাপড়ও। পুলিশকে আফতাব জানিয়েছেন, তিনি ওই নিজের এবং শ্রদ্ধার পোশাক পুরসভার ময়লা ফেলার গাড়িতে ফেলে দিয়েছিলেন। যদিও সেই দাবিরও সত্যাসত্য জানা নেই পুলিশের।

২১ ২৪

শ্রদ্ধার মোবাইল ফোনটিও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ওই মোবাইল খুঁজে পাওয়া গেলে আরও অনেক তথ্য পুলিশের হাতে আসত বলে মনে করা হচ্ছে।

২২ ২৪

হাতে থাকা এবং না থাকা প্রমাণের তালিকা মিলিয়ে অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এখনও অনেক ফাঁক রয়ে গিয়েছে। এই অপরাধে মূল অভিযুক্ত আফতাবকে দোষী প্রমাণ করার জন্য আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ পুলিশের হাতে আসা জরুরি ছিল, যা এখনও আসেনি।

২৩ ২৪

পুলিশ অবশ্য ইতিমধ্যেই আফতাবের নার্কো পরীক্ষা করানোর অনুমতি চেয়েছে। শ্রদ্ধার শরীরের টুকরো বলে জঙ্গল থেকে তুলে আনা দেহাবশেষের ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট আসাও বাকি।

২৪ ২৪

তবে সেই সব প্রমাণ হাতে পেলেও ঠান্ডা মাথার পূর্বপরিকল্পনা মেনে কাজ করা তরুণ আফতাবকে শেষ পর্যন্ত গারদের পিছেন আটকে রাখা যাবে কি না সেই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে সবাইকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement