মেয়েদের উপর অতর্কিতে যৌন আক্রমণ এবং অপহরণের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে ব্রিটেনের পুলিশ। অভিযোগ, পরিকল্পনামাফিক তিনি মেয়েদের পিছু ধাওয়া করতেন। তার পর অতর্কিতে হামলে পড়তেন তাঁদের উপর।
অভিযুক্তের নাম ট্রয় মরিস। ২৯ বছর বয়সি এই যুবক বার্মিংহ্যামের বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মহিলা গুরুতর যৌন অপরাধের অভিযোগ এনেছেন।
কিংস্টন ক্রাউন আদালত গত ১১ নভেম্বর মরিসকে দোষী সাব্যস্ত করে। তাঁকে ৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ, চলতি বছরের মার্চ এবং এপ্রিল মাস নাগাদ মরিসের শিকার হন কলেজপড়ুয়া এক তরুণী। কলেজ ক্যাম্পাসের ধারে ঘুরঘুর করতেন তিনি। তার পর সেখান থেকে ছাত্রীদের পিছু নিতেন।
ছাত্রীদের অজান্তেই তাঁদের অনুসরণ করতেন মরিস। সুযোগ বুঝে তাঁদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তেন। কখনও জনমানবহীন কোনও ধোপাখানা (লন্ড্রি রুম), কখনও ফাঁকা কোনও ফ্ল্যাটে ছাত্রীদের টেনে নিয়ে যেতেন মরিস।
পুলিশের দাবি, মূলত শারীরিক চাহিদা মেটানোর জন্যেই মেয়েদের উপর এমন আক্রমণ করেছেন মরিস। দু’জন তরুণী তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
কলেজ ক্যাম্পাস থেকে তরুণীকে অনুসরণ করে মরিস ধোপাখানা পর্যন্ত গিয়েছিলেন। অভিযোগ, তার পর তিনি সেই ধোপাখানা ফাঁকা হয়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করেন। সকলে চলে গেলে প্রকাশ্যে আসে মরিসের আসল রূপ।
ফাঁকা ঘরে ওই তরুণীকে যৌন নিগ্রহ করেন মরিস, দাবি তেমনটাই। তিনি যে পিছু নিয়ে কলেজ থেকে ধোপাখানা পর্যন্ত এসেছিলেন, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি ওই তরুণী।
ধোপাখানায় যৌন নিগ্রহের পর মরিসের দ্বিতীয় কীর্তি আরও ভয়ানক। ফাঁকা ফ্ল্যাটে এক তরুণীকে দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা আটকে রেখেছিলেন তিনি।
এ ক্ষেত্রেও অতর্কিতে আক্রমণ করেন মরিস। তরুণীকে কলেজ থেকে অনুসরণ করতে করতে তাঁর বাড়ির দিকে এগোন। ফাঁকা ফ্ল্যাটে তাঁকে টেনে নিয়ে বন্ধ করে দেন বাইরের পথ।
১২ ঘণ্টা তরুণীকে যৌন হেনস্থা করেন মরিস। নিজের অতৃপ্ত শারীরিক চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করেন। ধস্তাধস্তির ১২ ঘণ্টা পর কোনও রকমে মরিসের কবল থেকে বেরোতে পেরেছিলেন তরুণী।
কী ভাবে মুক্তি পেলেন তরুণী? অভিযোগ, আগেই তাঁর মোবাইল ফোন থেকে সব রকমের যোগাযোগের অ্যাপ মুছে দিয়েছিলেন মরিস। কেবল পড়েছিল জিমেল। তার মাধ্যমেই নিজের অবস্থান সম্পর্কে খবর দিতে পেরেছিলেন তরুণী।
উভয় ক্ষেত্রেই মরিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তরুণীরা। একের পর এক হামলা পুলিশের টনক নাড়িয়ে দেয়। তারা অভিযুক্তকে ধরতে তৎপর হয়ে ওঠে।
মরিসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তকারী আধিকারিক বেন সলমন বলেছেন, ‘‘মরিসের শিকার হওয়া দু’জন তরুণীই যথেষ্ট সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে যা হয়েছে, তা ভয়াবহ। ভয়কে জয় করে তাঁরা যে এগিয়ে এসেছেন, তা প্রশংসার যোগ্য।’’
পুলিশের তরফে আরও জানানো হয়েছে, মরিসের আচরণ যথেষ্ট উদ্বেগজনক। গ্রেফতারির পরেও তিনি ঠান্ডা মাথায় রয়েছেন। সুপরিকল্পিত ভাবে তিনি নিজের ‘শিকার’ বেছে নিয়েছিলেন। ফলে তাঁর গ্রেফতারি জরুরি ছিল।