Nashik

Savita Labhade: স্বামীর মৃত্যুর পর ঋণ শোধ করতে শুরু চাষবাস, এখন মাসে লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করেন সবিতা

২০০৮ সালের ঘটনা। নাসিকের সবিতা লাভাড়ে ঋণ শোধ করতে মশলার ব্যবসা শুরু করেন। সঙ্গে সব্জি চাষও। এখন তিনি প্রতি মাসে আয় করেন লক্ষাধিক টাকা।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২২ ০৮:৫২
Share:
০১ ১৭

সবিতা লাভাড়ে। নাসিকের বাসিন্দা তিনি। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন সবিতা। বিয়ের পর স্বামী-সন্তান নিয়ে সংসার ছিল তাঁর। কিন্তু সবিতার কপালে বেশি দিন এই সুখ টেকেনি।

০২ ১৭

২০০৮ সালে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তাঁর স্বামী আত্মারাম। আত্মারামের মৃত্যুর পর সংসারে যেন অন্ধকার নেমে আসে। তাঁর দুই সন্তান ছোট। তা ছাড়া, সংসার চালানোর খরচ রয়েছে। এত খরচ কী ভাবে সামলাবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না সবিতা।

Advertisement
০৩ ১৭

স্বামীর মৃত্যুর পর ‘নুন আনতে পান্তা ফুরোয়’ অবস্থা হয় সবিতার। টানা এক বছর এ ভাবেই দিন কাটাচ্ছিলেন তিনি। তাঁর বাড়িতে নোটিস নিয়ে হাজির হন সমবায় ব্যাঙ্কের কর্মীরা। আত্মারাম নাকি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে রেখেছিলেন।

০৪ ১৭

ঋণ শোধ করার সময় নাকি পেরিয়ে যাচ্ছে। ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়, মোট সাত লক্ষ টাকা ফেরত দিতে হবে সবিতাকে। সব শুনে যেন বাজ পড়ে সবিতার মাথায়। এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না।

০৫ ১৭

সাত লক্ষ টাকা কী ভাবে জোগাড় করবেন সবিতা? তাঁর কাছে সম্পত্তি বলতে আড়াই একরের একটি আঙুরক্ষেত এবং একটি মাত্র সোনার চেন। সেগুলি বিক্রি করেও এত টাকা জোগাড় করতে পারবেন না তিনি।

০৬ ১৭

শিক্ষাগত যোগ্যতা বেশি নয় যে, ভাল বেতনের কোনও চাকরি পাবেন। আঙুর চাষ সম্পর্কেও কোনও ধারণা নেই সবিতার। তাই তিনি ভাবলেন, সব্জি চাষ করে নিজেই বিক্রি করবেন। পরিকল্পনা মতো চাষবাসও শুরু করলেন তিনি।

০৭ ১৭

কিন্তু তাতে তেমন লাভ হল না। সব বিক্রি করেও মাসের শেষে ১০ হাজার টাকাও হাতে এল না সবিতার। তাই তিনি রোজগারের জন্য বিকল্প পথ খুঁজতে থাকেন।

০৮ ১৭

সবিতার জীবনে তখন মাত্র দু’টি লক্ষ্য। স্বামীর নেওয়া ঋণ শোধ করা এবং সংসারের খরচ সামলে ছেলেমেয়েদের প্রতিষ্ঠিত করা। সেই মুহূর্তে তাঁর জীবন অন্য দিকে মোড় নিল।

০৯ ১৭

মশলা তৈরি করার জন্য একটি বিশেষ যন্ত্রের সন্ধান পান সবিতা। তাঁর এক বন্ধুর কাছে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, এই যন্ত্রের দাম ৬৫ হাজার টাকা।

১০ ১৭

যন্ত্রটি কিনতে শেষ সম্বল সোনার হারটি বিক্রি করেন তিনি। তার সঙ্গে নিজের জমানো পুঁজি থেকে কিছু টাকা নিয়ে যন্ত্রটি কেনেন সবিতা। সব্জি চাষ করে লোকসানের মুখ দেখলেও মশলা তৈরি করে তিনি মাসে ৫০ হাজার টাকা রোজগার করেন।

১১ ১৭

অতিরিক্ত উপার্জনের জন্য তিনি সোয়াবিন ও গমের চাষও শুরু করেন। এই ব্যবসা করেই তিনি ছ’বছরের মাথায় সাত লক্ষ টাকা শোধ করে দেন। এক সাক্ষাৎকারে সবিতা জানিয়েছেন, ২০১৫ সাল পর্যন্ত প্রতি মাসে ৬০ হাজার টাকা উপার্জন করতেন তিনি।

১২ ১৭

কিন্তু তাঁর যাত্রা এখানেই শেষ হয়নি। সবিতা জানান, ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত বাজারে উন্নত মানের মশলা পাওয়া যায়। সেই সময় তাঁর বিক্রিও হয় বেশি। বছরের বাকি সময়ে তিনি নানা ধরনের সব্জি বিক্রি করে থাকেন।

১৩ ১৭

২০১৮ সালে আখের চাষ শুরু করেন তিনি। সবিতা বলেন, ‘‘শুধু আখ চাষ করেই আমি মাসে ৫৪ হাজার টাকা রোজগার করেছি।’’ বর্তমানে তাঁর মাসিক উপার্জন এক লক্ষ টাকারও বেশি।

১৪ ১৭

মেয়ের নামে একটি মুদির দোকানও খোলেন তিনি। মশলার বাজারে যখন মরা মরসুম, তখন এই দোকান থেকেই আয় করেন সবিতা।

১৫ ১৭

বর্তমানে তাঁর ছেলে সুপ্রতিষ্ঠিত। ছেলে ধীরজ ইলেকট্রনিক্স নিয়ে পড়াশোনা করে চাকরি করছেন। মেয়ে সাধনা রাজ্য পুলিশের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

১৬ ১৭

তিনি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানান, খারাপ সময়ে আত্মীয়-পরিজন কেউ পাশে থাকেন না। তিনি একা পরিশ্রম করেই আজ এই জায়গায় নিজেকে দাঁড় করিয়েছেন। ভোর ৫টা থেকে কাজ শুরু করে মাঝরাতে বিশ্রাম নিতে যেতেন সবিতা।

১৭ ১৭

মহিলাদের উদ্দেশে বার্তাও দেন তিনি। তাঁর মতে, মহিলাদের অর্থনৈতিক দিক দিয়ে স্বাবলম্বী হওয়া উচিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement