পরিচালক হিসাবে আনকোরা হলেও তাঁর প্রথম ছবিতে নায়ক হয়েছিলেন সলমন খান। বিধুবিনোদ চোপড়ার এককালের সহকারী পরিচালকের উপর সে সময় নাকি অগাধ আস্থা ছিল সুপারস্টারের। এর পর দু’জনে একসঙ্গে আরও দু’টি ছবিতে কাজ করেছেন বটে। তবে সলমন খান এবং সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর সেই জুটি এখনও পর্যন্ত বলিউডি পর্দায় ফিরে আসেনি।
ভবিষ্যতে আপনার ছবিতে কি সলমনকে দেখা যাবে? ভন্সালীকে অনেকেই নাকি এ প্রশ্ন করেন। তবে তেমন কোনও প্রশ্নেরই সরাসরি জবাব দেননি ভন্সালী। সাম্প্রতিক একটি সাক্ষাৎকারেও এ নিয়ে সলমনের কোর্টেই বল ঠেলেছেন ‘গঙ্গুবাঈ কাঠিয়াওয়াড়ি’র পরিচালক।
বলিউডে নাকি সোজাসাপ্টা কথা বলার লোকের অভাব। অনেকে আবার বলেন, ইন্ডাস্ট্রিতে বেঁচে থাকতে হলে মিষ্টিভাষণ জরুরি, তাই বোধ হয় সে রাস্তায় ভন্সালীও হেঁটেছেন। বিনয়ী ভাবেই বলেছেন, ‘‘সলমন আর আমি এখনও খুব ভাল বন্ধু।’’
সলমনকে নিয়ে এত বিনয়ী হওয়ার প্রয়োজন নেই ভন্সালীর। কানাঘুষোয় এমনও শোনা যাচ্ছে। হবে না-ই বা কেন! মুক্তির দু’সপ্তাহেই ১০০ কোটির দিকে এগোচ্ছে তাঁর ‘গঙ্গুবাঈ... ’। তুমুল সাফল্যের পর তিনি সোজা ব্যাটে খেলবেন, এটাই প্রত্যাশিত। তবে সে পথে হাঁটেননি ভন্সালী।
‘গঙ্গুবাঈ... ’-এর সাফল্যের পর ভন্সালীর দিকে নানা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে সংবাদমাধ্যম। সলমন এবং ভন্সালী জুটি নিয়েও কথা উঠেছিল। এক সময় ‘গঙ্গুবাঈ’ আলিয়া ভট্টকে নিয়েই তো সলমন খানের সঙ্গে ‘ইনশাল্লাহ’ করার কথা ভেবেছিলেন ভন্সালী। সে প্রায় দু’বছর আগের কথা।
সলমনকে নিয়ে বার বার মিটিং করলেও ‘ইনশাল্লাহ’ আর তৈরি করেননি ভন্সালী। শোনা যায়, শ্যুটিং শুরুর দিন কয়েক আগেই ছবির কাজ গুটিয়ে নেন পরিচালক। তাতে সলমনের ভূমিকাও নাকি কম ছিল না।
বলিউডের অন্দরের অনেকের দাবি, ‘ইনশাল্লাহ’-তে বন্ধু সুস্মিতা সেনকে একটি নাচের দৃশ্যে সুযোগ করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন সলমন। তাতে নাকি রাজি হননি ভন্সালী। ছবির মুক্তির দিন স্থির করা নিয়েও দু’জনের মতের মিল হয়নি। সব মিলিয়ে আজও বিশ বাঁও জলে ‘ইনশাল্লাহ’!
অথচ সলমন এবং ভন্সালীর জুটির ইনিংসটা ভালই শুরু হয়েছিল। এককালে তো ভন্সালীর টানা দু’টি ছবিতেই মুখ্য চরিত্রে ছিলেন সলমন। ১৯৯৬ সালে ‘খামোশি’ এবং তিন বছর পর ‘হম দিল দে চুকে সনম’। ২০০৭ সাল রণবীর এবং সোনম কপূরের অভিষেক ছবি ‘সাওয়ারিয়া’-তেও খানিকক্ষণের জন্য মুখ দেখিয়েছিলেন বলিউডের ভাইজান। তার পর থেকে কী যে হল! দু’জনকে একসঙ্গে দেখা গেল না।
কোনও দিন কি একসঙ্গে কাজ করবেন সলমন-ভন্সালী? নাছোড় প্রশ্ন তো পিছু ছাড়ে না ভন্সালীর। তবে সংবাদমাধ্যমে তাঁর বিনয়ী জবাব, ‘‘সলমন আমার খুব কাছের বন্ধু। ‘পদ্মাবত’-এর পর আবার ওঁর সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছিলাম। তবে যে কোনও কারণেই হোক, তা আর হয়ে ওঠেনি।’’
সলমনকে নিয়ে বেশ ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন ভন্সালী। বলেছেন, ‘‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা সকলেই বদলে যাই। সুতরাং সলমনও বদলে গিয়েছেন।’’
‘বন্ধু’ সলমনের বিরুদ্ধে অনুযোগের সুরেই ভন্সালী বলেছেন, ‘‘ওঁর (সলমন) মনে আমার স্থানও বদলে গিয়েছে।’’ স্বল্প কথায় অনেক কিছু বলে দিলেও এ বার বেশ রক্ষণাত্মক ভন্সালী। তিনি বলেন, ‘‘সলমনের প্রতি আমার অগাধ শ্রদ্ধা রয়েছে। তিনি আমার জন্য ‘খামোশি’-তে কাজ করেছেন। আমরা একসঙ্গে ‘হম দিল দে চুকে সনম’ করেছি। ‘সাওয়ারিয়া’-র সময়ও সলমন আমার পাশে ছিলেন।’’
সলমনের এত প্রশংসা তো করলেন। তবে একসঙ্গে কাজে বাধা কোথায়? এই বাউন্সারও সতর্ক ভাবে এড়িয়ে গিয়েছেন। উল্টে বলেছেন, ‘‘আমার জীবনে সলমন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ জুড়ে রয়েছেন। আজ আমি যে জায়গায় পৌঁছতে পেরেছি, তার জন্য সলমনের হাত রয়েছে। ওঁর জন্য সব সময় শ্রদ্ধা থাকবে। তবে বল এখন ওঁর কোর্টে। সলমনকেই স্থির করতে হবে, আমার সঙ্গে কাজ করবেন কি না!’’
‘ইনশাল্লাহ’-র কাজ শুরু হবে কি? ভন্সালীর নির্লিপ্ত জবাব, ‘‘ঈশ্বর চাইলে ‘ইনশাল্লাহ’ হওয়ার হলে, হবে!’’