SIP 20-20-20 Formula

দৈনিক ২০ টাকা লগ্নিতে মিলবে ৩৪ লাখ! চমকে দেবে এসআইপির ২০-২০-২০ ফর্মুলার অঙ্ক

এসআইপির ২০-২০-২০ ফর্মুলায় দিনে মাত্র ২০ টাকা লগ্নি করে গ্রাহক পেতে পারেন ৩৪ লক্ষ টাকা। এতে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদের সুবিধা রয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৩২
Share:
০১ ১৮

মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে প্রথাগত সঞ্চয়ের থেকে কিছুটা সরে এসেছে আমজনতা। মধ্যবিত্তের একটা বড় অংশই লগ্নি করছেন মিউচুয়াল ফান্ডে। আর্থিক দিক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ হলেও এতে লাভের সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি। দু’ভাবে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা যায়। একটিকে বলা হয় লাম্পসাম লগ্নি, অপরটির নাম সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান বা এসআইপি।

০২ ১৮

মিউচুয়াল ফান্ডের লাম্পসাম লগ্নিতে ঝুঁকির মাত্রা অনেকটাই বেশি। এটি পুরোপুরি শেয়ার বাজারের উত্থান-পতনের উপর নির্ভরশীল। অন্য দিকে এসআইপিতে আর্থিক দিক থেকে লোকসানের আশঙ্কা তুলনামূলক ভাবে কম। আর তাই সরকারি তথ্য বলছে, দ্বিতীয় শ্রেণির মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নির পরিমাণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। আগামী দিনে এসআইপিতে বিনিয়োগ আরও বাড়বে বলে মনে করছেন আর্থিক বিশ্লেষকদের একাংশ।

Advertisement
০৩ ১৮

গত বছরের (পড়ুন ২০২৪) অক্টোবরে এসআইপির মোট গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১০.১২ কোটি। নভেম্বরে তা আরও বেড়ে ১০.২২ কোটিতে গিয়ে পৌঁছয়, যা এখনও পর্যন্ত রেকর্ড। পাশাপাশি এসআইপির অ্যাসেট আন্ডার ম্যানেজমেন্ট (এইউএম) ১৩.৫৪ লক্ষ কোটি টাকা স্পর্শ করেছে বলে জানা গিয়েছে। স্টক মার্কেটের দিকে ছোট লগ্নিকারীদের আগ্রহ যে দিন দিন বাড়ছে এই তথ্যই তার প্রমাণ, বলছেন বিশেষজ্ঞেরা।

০৪ ১৮

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, প্রতি মাসে এসআইপিতে জমা পড়া অর্থের পরিমাণ ২৫ হাজার কোটি ছাপিয়ে গিয়েছে। গত বছরের (পড়ুন ২০২৪) নভেম্বরে এই তহবিলে গ্রাহক মোট লগ্নি করেছেন ২৫ হাজার ৩২০ কোটি টাকা। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই অঙ্ক ৩০ হাজার কোটি ছোঁবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

০৫ ১৮

মিউচুয়াল ফান্ডের এসআইপির সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, এতে লগ্নি করতে বিরাট অঙ্কের টাকা লাগে, এমনটা নয়। মাত্র ২০ টাকা দিয়েও এতে বিনিয়োগ শুরু করা যেতে পারে। এসআইপিতে প্রাপ্ত সুদ চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তে থাকে। ফলে অল্প লগ্নিতে মোটা টাকা লাভের সুযোগ রয়েছে।

০৬ ১৮

মজার বিষয় হল, দৈনিক ২০ টাকার এসআইপিতে গ্রাহক বছরে ১৪ শতাংশ হারে সুদ পেতে পারেন। এই সুদ চক্রবৃদ্ধি হারে তাঁর জমা করা অর্থের সঙ্গে যুক্ত হতে থাকবে। সে ক্ষেত্রে ২০ বছরে ৩৪ লক্ষ টাকার মালিক হতে পারেন তিনি। এসআইপির অত্যন্ত লাভজনক এই ফর্মুলাকে বলা হয় ২০-২০-২০। বর্তমানে মধ্যবিত্তের একটা বড় অংশ এই হিসাব মাথায় রেখে লগ্নি করছেন।

০৭ ১৮

এসআইপির ২০-২০-২০ ফর্মুলায় প্রথম বছরে গ্রাহককে বিনিয়োগ করতে হবে ৭,৩০০ টাকা। প্রতি বছর ২০ শতাংশ করে লগ্নির পরিমাণ বৃদ্ধি করবেন তিনি। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, সংশ্লিষ্ট এসআইপিতে বছরে প্রায় ১৪ শতাংশ সুদ পাবেন ওই গ্রাহক। লার্জ ক্যাপের মিউচুয়াল ফান্ডগুলি গত এক দশকে ১৩ থেকে ১৪ শতাংশ সুদ প্রদান করেছে।

০৮ ১৮

এই হিসাবে ওই গ্রাহকের ২০ বছরে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৩.৪৪ লক্ষ টাকা। মেয়াদ শেষে সংশ্লিষ্ট এসআইপির সুদের মাত্রা ২০.৪৪ লক্ষ টাকায় গিয়ে পৌঁছবে। অর্থাৎ সুদেমূলে মোট ৩৩.৯৮ লক্ষ টাকা পাবেন লগ্নিকারী।

০৯ ১৮

আর্থিক বিশ্লেষকদের কথায়, শেষ তিন মাস বাদে দু’বছর ধরে যথেষ্ট চাঙ্গা রয়েছে ভারতের শেয়ার বাজার। এর সুফল পাচ্ছেন মিউচুয়াল ফান্ডের লগ্নিকারীরা। এসআইপিতে কম করে হলেও ১২ শতাংশ সুদ মিলছে। বাজার আরও চড়লে এই অঙ্ক ১৫ থেকে ১৬ শতাংশে পৌঁছনোর সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে সুদেমূলে প্রাপ্তির পরিমাণ যে আরও বাড়বে, তা বলাই বাহুল্য।

১০ ১৮

দিনে মাত্র ২০ টাকা দিয়ে এসআইপি শুরু করার যেমন সুযোগ রয়েছে, তেমনই ধারাবাহিক ভাবে এতে লগ্নি চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা। তাঁদের কথায়, এসআইপি থেকে ভাল লাভ পেতে হলে চাই ধৈর্য। সময়ের আগে মূলধন তুলে নিলে কখনওই সেটা পাবেন না গ্রাহক।

১১ ১৮

এসআইপি থেকে আবার অবসরের পর মোটা টাকা পেনশন পাওয়ার সুবিধা রয়েছে। এর নিয়ন্ত্রক কেন্দ্রীয় সংস্থা হল পেনশন ফান্ড রেগুলেটরি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি বা পিএফআরডিএ। এই প্রকল্পে যে কেউ লগ্নি করতে পারেন। মূলত নাগরিকদের সামাজিক সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে এই প্রকল্প চালু করেছে সরকার।

১২ ১৮

অবসরের পর এনপিএসের অ্যাকাউন্ট থেকে গ্রাহকের টাকা তুলে নেওয়ার অনুমতি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে শর্তসাপেক্ষে আয়কর ছাড় পাবেন তিনি। অবসরের পর যদি দেখা যায় এনপিএস অ্যাকাউন্টে গ্রাহক পাঁচ লক্ষ টাকার বেশি জমিয়েছেন, তা হলে সম্পূর্ণ অর্থ কর ছাড়া তুলে নিতে পারবেন তিনি।

১৩ ১৮

কিন্তু, টাকার অঙ্ক আরও বেশি হলে এনপিএস অ্যাকাউন্টের ৬০ শতাংশ অর্থ প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে আয়করে ছাড় পাবেন সংশ্লিষ্ট গ্রাহক। বাকি টাকায় অবশ্যই তাঁকে অ্যানুইটি প্ল্যান কিনতে হবে। এনপিএসের এই অংশটি আয়করের আওতাধীন।

১৪ ১৮

অ্যানুইটি থেকে গ্রাহকের কত টাকা আয় হচ্ছে, তার উপর নির্ভর করবে এনপিএসে করের পরিমাণ। অ্যানুইটি সার্ভিস প্রোভাইডারের (এএসপি) থেকে এই প্রকল্পের লাভের অর্থ সরাসরি অ্যাকাউন্টে পাবেন লগ্নিকারী। এনপিএস অ্যাকাউন্টে সঞ্চিত অর্থের একাংশ ব্যবহার করে এই অ্যানুইটি কিনতে হবে তাঁকে।

১৫ ১৮

এই ধরনের এনপিএসে লগ্নি সাধারণত ১৫ বছরের জন্য করতে হয়। এতে বছরে ৯ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত সুদ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে গ্রাহকের। তবে লগ্নিকারী তাঁর বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত অর্থে খুশি না হলে অন্য ফান্ড ম্যানেজারের কাছে অর্থ সরিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।

১৬ ১৮

আর্থিক বিশ্লেষকেরা জানাচ্ছেন, ৪০ বছরে বিনিয়োগ শুরু করা গ্রাহক এনপিএসের মাধ্যমে মাসে এক লক্ষ টাকা করে পেনশন পেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ৬০ বছরে এই তহবিলে তাঁর মোট সঞ্চয়ের অঙ্ক দাঁড়াতে হবে পাঁচ কোটি টাকা।

১৭ ১৮

আর এনপিএসের মোট সঞ্চয়ের পরিমাণ পাঁচ কোটিতে নিয়ে যেতে হলে বছর ৪০-এর যুবক বা যুবতীকে প্রতি মাসে জমা করতে হবে ৫০ হাজার টাকা। আর মনে রাখতে হবে বছরে সুদের হার ১২ শতাংশ থাকলে তবেই অবসরের পর মাসে এক লক্ষ টাকা করে পেনশন পাবেন তিনি। সুদের হার কম হলে পেনশনের অঙ্ক কমবে।

১৮ ১৮

উল্লেখ্য, কোনও গ্রাহকের এনপিএস তহবিলে মোট সঞ্চয়ের পরিমাণ পাঁচ কোটি হলে অবসরের পর তিন কোটি টাকা তিনি তুলে নিতে পারবেন। বাকি দু’কোটি টাকা অ্যানুইটি প্ল্যানে তাঁকে বিনিয়োগ করতেই হবে।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement