অ্যাপল সংস্থার নিজস্ব বিপণি খুলতে ভারতের দুই শহরকে বেছে নিয়েছেন অ্যাপলের সিইও টিম কুক। চলতি মাসেই মুম্বই এবং দিল্লিতে ‘অ্যাপল স্টোর’ খুলে ফেলেছেন টিম। সেই উপলক্ষে ভারত সফরেও এসেছিলেন তিনি।
কখনও মুকেশ অম্বানীর বাড়িতে, কখনও বা বলি অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিতের সঙ্গে রেস্তরাঁয় বসে মুম্বইয়ের বিখ্যাত বড়া পাও খেতে দেখা গিয়েছে টিম কুককে।
অ্যাপলের নিজস্ব বিপণির উদ্বোধন করতে এসেও প্রতিভার খোঁজ থামাননি টিম। পাঁচ বছর বয়সি রণবীরের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। এতটুকু বয়সে রণবীরের প্রতিভা দেখে মুগ্ধ হন তিনি। কোডিংয়ে দক্ষ রণবীরকে জুন মাসে ‘ওয়ার্ল্ডওয়াইড ডেভেলপার্স কনফারেন্স’-এ আমন্ত্রণ জানান টিম।
তবে, ভারতে অ্যাপল নিজস্ব বিপণি খোলার পর কৌতূহলী হয়ে পড়েছেন অনেকেই। কোডিংয়ে যাঁরা হাত পাকিয়েছেন, তাঁদের জন্য এ এক সুবর্ণ সুযোগ।
অ্যাপল স্টোরে চাকরি পেতে গেলে শিক্ষাগত যোগ্যতা কী হওয়া প্রয়োজন? প্রতি মাসে বেতনই বা কত?
১৮ এপ্রিল ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বইয়ে অ্যাপল স্টোর উদ্বোধন করেছেন টিম। মুম্বইয়ের বান্দ্রা কুরলা কমপ্লেক্সের একটি বিলাসবহুল মলে খুলছে অ্যাপলের নিজস্ব বিপণি।
মুম্বইয়ে বিপণি খোলার দু’দিন পর ২০ এপ্রিল ভারতের রাজনৈতিক রাজধানী দিল্লিতে অ্যাপল স্টোরের উদ্বোধন করা হয়। দিল্লির সাকেত এলাকার একটি বিলাসবহুল মলে এই অ্যাপল স্টোরের উদ্বোধন করেছেন টিম।
ভারতে অ্যাপলের দু’টি স্টোরে ১৭০ জন কর্মী কাজ করেন। মুম্বই এবং দিল্লির স্টোরে তাঁরা কর্মরত রয়েছেন।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, অন্যান্য প্রযুক্তি সংস্থার বিপণির কর্মীরা যে পরিমাণ বেতন পান, সেই তুলনায় অ্যাপল স্টোরের কর্মীদের ৪ গুণ বেশি বেতন দেওয়া হবে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, অ্যাপল স্টোরের কর্মীদের প্রতি মাসে এক লক্ষ টাকা বেতন দেওয়া হবে। অর্থাৎ কর্মীদের বার্ষিক উপার্জন দাঁড়াবে ১২ লক্ষ টাকা।
তবে অ্যাপল স্টোরে চাকরি পাওয়ার সুযোগ মিলবে পর্যাপ্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলে। ব্যাচেলর অফ টেকনোলজি এবং মাস্টার অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নিয়ে পড়াশোনা করলে স্টোরে কাজ করার আবেদন জানানো যাবে।
শুধু তাই নয়, তথ্যপ্রযুক্তিতে স্নাতকোত্তর থাকলেও অ্যাপল স্টোরে কাজ মিলতে পারে বলে সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর।
ইতিমধ্যেই অ্যাপল স্টোরে যে কর্মীরা কাজ করেন তাঁদের একাংশ গ্রিফিথ এবং কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে পড়াশোনা করে এসেছেন।
আবার কোনও কোনও কর্মীকে ইউরোপ এবং পশ্চিম এশিয়া থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁরা বিদেশেও অ্যাপল স্টোরে কর্মরত অবস্থায় ছিলেন। সেখান থেকে তাঁদের ভারতে নিয়ে আসা হয়েছে।
ভবিষ্যতে ভারতকে কেন্দ্র করেই ব্যবসা করার পরিকল্পনা রয়েছে অ্যাপলের। সেই কারণেই জোড়া অ্যাপল স্টোর খুলেছেন টিম কুক।
আবার অনেকে মনে করেন যে, অ্যাপল স্টোর খোলার পর ভারত বিশ্বের অন্যতম বড় মোবাইল ফোন বিক্রির বাজারে নিজের প্রত্যক্ষ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে।
ভারতে অ্যাপল স্টোরগুলি উদ্বোধন করতে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেছেন টিম। সরকারি সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ভারতের মেধাসম্পদকে কাজে লাগানোর ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন অ্যাপলের সিইও।
মোদীর সঙ্গে দেখা করার কথা জানিয়ে কুক টুইটারে লেখেন, ‘‘উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ। ভারতের ভবিষ্যৎ অগ্রগতিতে যে প্রযুক্তির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে সে বিষয়ে আপনার মতামত জানলাম। শিক্ষা, উৎপাদন শিল্প এমনকি পরিবেশ নিয়েও আলোচনা হল। দেশ (ভারতে) জুড়ে বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’
কুকের টুইটের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর রিটুইট, ‘‘আপনার সঙ্গে দেখা করে খুব খুশি হলাম। বিভিন্ন বিষয়ে মত বিনিময় করে এবং ভারতে প্রযুক্তিগত রূপান্তরের কথা জানাতে পেরে আমি আনন্দিত।’’