পেশায় অভিনেত্রী। নেশায় রাজনীতিবিদ। আমাদের দেশে এমন উদাহরণ ভূরি ভূরি। তবে তাঁদের বেশির ভাগই অভিনয় জীবনের তুমুল জনপ্রিয়তা নিয়েই রাজনীতিতে এসেছেন।
তবে রুমা রেশমি এক্কা এ সবের থেকে আলাদা। তিনি শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদে আসন্ন ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী।
ফাঁসিদেওয়া ব্লকের মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। নিজে আদিবাসী। আদিবাসী সমাজেও তাঁর প্রভাব রয়েছে।
অভিনেত্রী এবং রাজনীতিবিদ হওয়ার পাশাপাশি রুমা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ওঁরাও সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। এ বার তাঁকে দেখা যাবে প্রচার-মঞ্চের আর্কলাইটের নীচে।
সাংস্কৃতিক জগৎ, বিশেষ করে সিনেমার পর্দায় যথেষ্ট জনপ্রিয় মুখ রুমা। আদিবাসী আঞ্চলিক ভাষায় ‘মোর স্বপ্ন’ ও ‘টেম্পার’-এই দুই ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। এ ছাড়া টলিউডের ছবি ‘তোমায় আমায় মিলে’, ‘কিরীটি রায়’ ছবিতেও অভিনয় করছেন উত্তরবঙ্গের এই শিল্পী।
রুমার বাড়ি ফাঁসিদেওয়ার খারুভাঙা এলাকায়। সেখান থেকেই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন তিনি।
২০০৭ সালে শিলিগুড়ি জ্যোৎস্নাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ে থেকে পড়াশোনা শেষ করেন রুমা। তার পর উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি হন শিলিগুড়ি কলেজে।
স্নাতক পাশ করার পর ২০১৫ সালে রুমা বারাণসী চলে যান। স্নাতকোত্তর স্তরে ভরতনাট্যম নিয়ে পড়াশোনা করতে বারাণসী যান তিনি।
২০১৮ সালে কলকাতায় এসে চলচ্চিত্র ভবনে ‘ফিল্ম মেকিং’ নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। ঝাড়খণ্ডের একটি তথ্যচিত্র থেকেই তিনি রুপোলি পর্দায় কাজ শুরু করেছিলেন।
২০১৬ সাল থেকেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল রুমা। মমতা তাঁকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন বলে বহু বার শোনা গিয়েছে রুমার গলায়।
২০২০ সাল থেকে সক্রিয় ভাবে ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেন। মানুষের পাশে থেকে মুখ্যমন্ত্রীর আদর্শেই কাজ করে যেতে চান বলেও তিনি বার বার বলেছেন। রুমার দাবি, আগামী দিনে পিছিয়ে পড়া জনজাতির উন্নতির জন্যই নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যেতে চান।
তাঁকে প্রার্থী হিসাবে বেছে নেওয়া প্রসঙ্গে রুমা বলেন, ‘‘দল আমাকে সুযোগ দিয়েছে। আমি খুবই খুশি। মানুষ আমাকে কাজ করার সুযোগ দিলে হতাশ করব না। ২০১৬ থেকে পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কাজ শুরু করি গ্রামে। বছর চারেক আগে থেকেই পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কাজ শুরু করেছিলাম নিজের গ্রামে।’’
এলাকার বাসিন্দাদের কাছে তিনি খুবই কাছের মানুষ বলেই দাবি রুমার। তাই মানুষের বিপুল সমর্থন পেয়ে জিতবেন বলেও আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি।