পরিবেশকে দূষণমুক্ত করতে, পেট্রোল এবং ডিজেলচালিত গাড়ির পরিবর্তে বাজারে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি বা ‘ইলেকট্রিক ভেহিকল’-এর প্রচলন শুরু হয়। বিদ্যুৎচালিত গাড়ির খরচ কম, জীবাশ্ম জ্বালানিরও প্রয়োজন নেই।
ভবিষ্যতে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির ব্যবহার আরও বৃদ্ধি পাওয়ার কথা বলছেন বহু গাড়ি বিশেষজ্ঞ। কিন্তু অন্য একটি অংশের দাবি, আগামী দিনে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির বাজার ধুয়েমুছে সাফ করে দিতে পারে অ্যামোনিয়া ইঞ্জিন চালিত গাড়ি।
সম্প্রতি চিনের এক গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা বিশ্বের প্রথম যাত্রিবাহী অ্যামোনিয়া ইঞ্জিন চালিত গাড়ি তৈরি করেছে।
চিনের সংস্থার দাবি, অ্যামোনিয়া ইঞ্জিন চালিত গাড়ি খুব সহজেই বিশ্ব বাজার থেকে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির প্রভাবকে শেষ করে দিতে পারে।
চিনের ‘ইমোজি’ নামের এক সংস্থা অ্যামোনিয়া ইঞ্জিন চালিত ট্র্যাক্টর তৈরি করেছে। তারা এই অ্যামোনিয়া ইঞ্জিন ব্যবহারের উপকারিতার বিষয়টি তুলে ধরেছেন।
অ্যামোনিয়া ইঞ্জিনচালিত গাড়িতে প্রচুর পরিমাণে অ্যামোনিয়া ব্যবহার করা হয়। সংস্থার দাবি, এই ধরনের গাড়ির ব্যবহার পুরোদমে শুরু হলে তা বাতাসে দূষিত কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ প্রায় ৯০ শতাংশ কমিয়ে ফেলতে পারে।
টয়োটা সংস্থার অধিকর্তা কোজি সাতো জানিয়েছেন, ইঞ্জিনে অ্যামোনিয়ার ব্যবহার বাণিজ্যিক দিক দিয়ে খুবই সফল হতে পারে। কী এমন রয়েছে অ্যামোনিয়া ইঞ্জিনে?
সংস্থার দাবি, অ্যামোনিয়ার দহনের ফলে কার্বনের নির্গমন হয় না। হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনে ভেঙে যাওয়ার পর হাইড্রোজেন পরমাণুগুলিকে জ্বালানি কোষে পাঠানো হয়।
অ্যামোনিয়া ইঞ্জিন গাড়িতে ব্যবহার করলে তা শক্তি সংরক্ষণ করার পাশাপাশি পরিবেশকে দূষণের হাত থেকে বাঁচাতেও সাহায্য করে।
ধীরে ধীরে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির পরিবর্তে অ্যামোনিয়া ইঞ্জিন চালিত গাড়ির ব্যবহার বৃদ্ধি পেতে থাকলে বাজার থেকে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে দাবি সংস্থার।
তবে অ্যামোনিয়া ইঞ্জিনের ব্যবহার ব়ৃদ্ধি পেলে বিপদের আশঙ্কাও রয়েছে। বাতাসে অ্যামোনিয়া গ্যাসের অধিক উপস্থিতি ক্ষতিকর।
অ্যামোনিয়া ইঞ্জিন চালিত গাড়ির ব্যবহার শুরু হলে অ্যামোনিয়া পাম্প স্টেশনেরও প্রয়োজন হবে। ট্যাঙ্কের ভিতর বেশি পরিমাণ অ্যামোনিয়া নিয়ে যাতায়াত করাও বিপজ্জনক।
কোনও কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে বাতাসের সঙ্গে অ্যামোনিয়া মিশলে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মানুষের শ্বাসজনিত সমস্যা দেখা দেয়। এমনকি অ্যাসিড বৃষ্টির আশঙ্কাও থাকতে পারে। তাই খুব সন্তর্পণে অ্যামোনিয়া গ্যাসের আদানপ্রদান করতে হবে।