এ বার পূর্ব সিরিয়ায় হামলা চালাল আমেরিকা। বুধবার দু’টি এফ-১৫ যুদ্ধবিমানের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ন’জন।
গত দু’সপ্তাহে দু’বার সিরিয়াকে নিশানা করে হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। আমেরিকার নিরাপত্তা সচিব লয়েড অস্টিন বুধবারের হামলার প্রসঙ্গে দাবি করেছেন, যেখানে হামলা চালানো হয়েছে সেখানে অস্ত্রাগার ছিল।
লয়েডের আরও দাবি, ইরান থেকে পাচার করা অস্ত্র সিরিয়ার অস্ত্রাগারে রাখা হত। সেই সব অস্ত্র ব্যবহার করে ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে সিরিয়া যাতে যুদ্ধে নামতে না পারে সেই কারণেই বুধবারের হামলা বলে জানিয়েছে আমেরিকা।
ইজ়রায়েল-হামাস সংঘর্ষকে ইরান যেন কোনও ভাবে ‘আঞ্চলিক’ যুদ্ধে পরিণত করতে না পারে, তাই আমেরিকার এই পদক্ষেপ বলে মনে করছেন অনেকেই।
তবে ইরানকে দূরে সরাতে গিয়ে সিরিয়ায় বার বার আক্রমণ ওয়াশিংটন এবং তেহরানের সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
২৬ অক্টোবরেও সিরিয়ার দু’টি অস্ত্রাগারে হামলা চালিয়েছিল আমেরিকা। তবে সেই হামলায় প্রাণহানি হয়নি।
ইজ়রায়েল-হামাস সংঘর্ষে হামাসের দোসর হয়েছে লেবাননের জঙ্গি গোষ্ঠী হিজ়বুল্লা। হামাসের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করার কথা জানিয়েছে তারা।
ইজ়রায়েলের উত্তর সীমান্তে ইতিমধ্যেই সে দেশের বাহিনীর সঙ্গে হিজ়বুল্লা গোষ্ঠীর সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। হিজ়বুল্লার তরফে সাবধান করা হয়েছে আমেরিকাকেও।
হিজ়বুল্লার বার্তা, প্যালেস্তাইনকে কোনও ভাবেই ইউক্রেনের সঙ্গে তুলনা করলে চলবে না। আমেরিকা-সহ ইজ়রায়েলের সমর্থক দেশগুলিকেও লেবাননের জঙ্গিগোষ্ঠী এই বার্তা দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
একটি বিবৃতি জারি করে লেবাননের জঙ্গিগোষ্ঠীর এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘প্যালেস্তাইনকে যদি কেউ ইউক্রেন ভেবে থাকে তা হলে ভুল করা হচ্ছে। বাইরের কোনও শক্তি ইজ়রায়েল এবং হামাসের সংঘাতে হস্তক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নিলে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ইজ়রায়েলের সঙ্গে হামাসের যুদ্ধে শামিল হতে চাইছে ইরানও, এমনটাই দাবি তেহরানের। অভিযোগ, হামাসকে অস্ত্র সরবরাহ করছে ইরান। এ ভাবে তারা যুদ্ধের ‘দ্বিতীয় মুখ’ খুলতে চাইছে।
ইরানকে সহযোগিতা করতে তৈরি হেজ়বুল্লাও। তাই বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে বলে দাবি ইজ়রায়েলের।
ইজ়রায়েল সেনাবাহিনীর এক আধিকারিক এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) জানিয়েছেন, গাজ়ায় অস্ত্র সরবরাহ করছে ইরান। সিরিয়া দিয়ে অস্ত্র পাঠাচ্ছে তারা।
ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, সিরিয়া থেকে উত্তর ইজ়রায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় শোনা গিয়েছে সাইরেনও।
যুদ্ধে যোগ দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে হিজ়বুল্লাও। তারা ঘোষণা করেছে, সঠিক সময় এলে হামাসের সঙ্গে তারাও হাত মেলাবে এবং যুদ্ধ শুরু করবে। লেবাননের এই জঙ্গিগোষ্ঠী ইরানের সহযোগিতায় চলে। ইরানই হিজ়বুল্লাকে যুদ্ধের রসদ জোগায় বলে দাবি।
ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, লেবাননের ভূখণ্ড থেকে এক ডজনেরও বেশি রকেট ছোড়া হয়েছে। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানান, হিজ়বুল্লাকে ঠেকাতে উত্তর সীমান্তকে শক্তিশালী করার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।
ইজ়রায়েলের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট বলেন, ‘‘বিশ্ব জুড়ে সন্ত্রাসের যে অক্টোপাস রয়েছে ইরান তার প্রধান। সেই অক্টোপাসের একটি হাত হিজ়বুল্লা এবং অন্যটি হামাস।’’