Ranchordas Pagi

Ranchordas Pagi: পায়ের ছাপে ওজন মাপতেন! সেনাকে সাহায্য করে পান বিরল সম্মান, এ এক অন্য রণছোড়দাসের গল্প

পারিবারিক সূত্রে পদবি, রবারী। তবে তাঁর নামের পাশে ‘পগী’ই মানানসই বলে মনে হত।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২২ ১৬:৩৫
Share:
০১ ১৬

পায়ের ছাপ দেখে মানুষ বা জীবজন্তুর ওজন নির্ভুল ভাবে বলে দিতে পারতেন রণছোড়দাস। পারিবারিক সূত্রে পদবি, রবারী। তবে তাঁর নামের পাশে ‘পগী’ই মানানসই বলে মনে করতেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রয়াত ফিল্ড মার্শাল স্যাম মানেকশ’।

০২ ১৬

‘পগী’ অর্থাৎ পায়ের ছাপ সম্বন্ধে যাঁর অগাধ জ্ঞান রয়েছে। যদিও অনেকের মতে, ‘পগী’র অর্থ হল পথপদর্শক। যিনি মরুরাজ্যের মধ্যে দিয়ে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছে দেন।

Advertisement
০৩ ১৬

রণছোড়দাস ‘পগী’র নামে আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছে একটি সেনাফাঁড়ির নামকরণ করেছিলেন মানেকশ’। সেই প্রথম কোনও অসামরিক ব্যক্তির নামে সেনাফাঁড়ির নাম রাখা হয়েছিল। গুজরাতের বনাসকণ্ঠা জেলার সুইগামে ‘রণছোড়দাস ফাঁড়ি’তে তাঁর একটি মূর্তিও বসানো হয়েছে।

০৪ ১৬

অধুনা পাকিস্তানের পিঠাপুর গ্রামে রবারী পরিবারে জন্ম রণছোড়দাসের। যাযাবর সম্প্রদায়ের সেই পরিবারের সদস্যরা উট ও গবাদি পশু পালন করে রুজিরোজগার করতেন। দেশভাগের পর পাক সীমান্তের ওই গ্রাম থেকে এ দেশে চলে আসেন রণছোড়দাসরা।

০৫ ১৬

আপাত সাধারণ মনে হলেও শুধুমাত্র পথপদর্শক ছিলেন না পগী। বস্তুত, তাঁর দক্ষতার কথা জেনেই ভারতীয় সেনার গাইডের কাজে তাঁকে নিযুক্ত করেছিলেন বনাসকণ্ঠা জেলার পুলিশ সুপার বনরাজ সিংহ ঝালা। সে সময় পগীর বয়স ছিল ৫৮।

০৬ ১৬

পগীর দক্ষতার পরিচয় পাওয়া গিয়েছিল ১৯৬৫ এবং ’৭১-এর ভারত-পাক যুদ্ধে। মরুরাজ্যে পায়ের ছাপ দেখে যিনি নিখুঁত ভাবে বলে দিতে পারতেন, ওই ছাপের মালিক কত ওজনের বা উচ্চতার। তাঁর লিঙ্গপরিচয়ও জানিয়ে দিতেন পগী।

০৭ ১৬

জীবনের শেষ দিনগুলিতে পগীর নামই আউড়েছেন মানেকশ’। সেটি ছিল ২০০৮ সাল। সে সময় তিনি চিকিৎসাধীন তামিলনাড়ুর ওয়েলিংটন হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানতে চেয়েছিলেন, ‘‘স্যর, এই পগী কে?’’

০৮ ১৬

মানেকশ’র শেষ দিনগুলিতে তাঁর জবানিতে পগীর কীর্তি জানতে পারেন চিকিৎসকেরা। ’৬৫-র ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের গোড়ার দিকে গুজরাতের কচ্ছ এলাকায় বিধকোট দখল করে নিয়েছিলেন পাক সেনারা।

০৯ ১৬

পাক সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১০০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছিলেন। সে সময় ছাড়কোট এলাকায় ১০ হাজার ভারতীয় সেনার একটি দলকে পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। লক্ষ্য ছিল, তিন দিনের মধ্যে এলাকা পুনরুদ্ধারের।

১০ ১৬

মরুভূমির মধ্যে দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছনোর কাজে প্রয়োজন ছিল এক দক্ষ পথপ্রদর্শকের। সেই প্রথম রণছোড়দাস পগীর সাহায্য নেয় ভারতীয় সেনা।

১১ ১৬

সেনার তরফে ব্যক্তিগত ভাবে এ প্রস্তাব দিয়েছিলেন মানেকশ’। রণছোড়দাসের জন্য ভারতীয় সেনায় একটি বিশেষ পদও তৈরি করেছিলেন তিনি— ‘পগী’।

১২ ১৬

মানেকশ’ তথা সেনার থেকে প্রস্তাব পেয়ে পথপদর্শকের ভূমিকায় নামেন পগী। ১০ হাজার সেনাকে মরুভূমির মধ্যে দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের ১২ ঘণ্টা আগেই গন্তব্যে পৌঁছে দেন তিনি।

১৩ ১৬

’৬৫-র যুদ্ধে সেনাকে আরও সাহায্য করেছিলেন পগী। মরুভূমির মধ্যে সীমান্ত এলাকায় যে ১২০০ পাক সেনা লুকিয়ে রয়েছেন, তা জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। বালির উপরে শুধুমাত্র পায়ের ছাপ দেখেই সেই নির্ভুল তথ্য দিতে পেরেছিলেন পগী। মনে করা হয়, পগীর তথ্যের ভিত্তিতেই ওই যুদ্ধে সফল হয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী।

১৪ ১৬

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ’৭১-এর যুদ্ধে আরও সাফল্য পান পগী। সে বার পগীর সাহায্যেই যুদ্ধের ময়দানে রসদ পৌঁছনোর কাজ চলত। পাকিস্তানের পালিনগর শহরের দখল নিতেও পগী সাহায্য করেছিলেন। খুশি হয়ে নিজের পকেট থেকে পগীকে ৩০০ টাকা উপহার দিয়েছিলেন মানেকশ’।

১৫ ১৬

২০০৮ সালে ১০৮ বছর বয়সে মারা যান ফিল্ড মার্শাল মানেকশ’। তার কয়েক বছরের মধ্যেই প্রয়াত হন পগী। বয়স হয়েছিল ১১২। তার অনেক আগেই অবশ্য ভারতীয় সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়েছেন তিনি।

১৬ ১৬

তাঁর নামে একটি ফাঁড়ির নামকরণ ছাড়াও পগীকে আরও সম্মানে ভূষিত করা হয় ’৬৫ এবং ’৭১-এর তাঁর অবদানের জন্য ‘সংগ্রাম পদক’, ‘পুলিশ পদক’ ছাড়াও ‘সমরসেবা স্টার’ প্রদান করা হয় পগীকে। গত বছর ‘ভূজ: দ্য প্রাইড অব ইন্ডিয়া’ নামের বলিউড সিনেমাতে পগীর কীর্তিকাহিনির ঝলক পাওয়া গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement