পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের পেশা রয়েছে। ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং, শিক্ষাকতার মতো পেশা যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে কিছু অদ্ভুত পেশাও। এ রকমই এক পেশা হল, সদ্যোজাতদের নামকরণ করা। যে সব বাবা-মা অনেক মাথা খুঁড়েও বাচ্চার নাম কী রাখবেন, তা ঠিক করতে পারেন না বা যুতসই নাম খুঁজে পান না, তাঁরাই এই পেশার সঙ্গে যুক্তদের সাহায্য নিয়ে থাকেন। তবে পেশাদার নামকরণ শিল্পীদের দিয়ে বাচ্চার নাম ঠিক করালে ভাল মতো গাঁটের কড়িও খরচা করতে হবে। এই পেশার সঙ্গে যুক্ত এ রকমই এক জন টেলর এ হামফ্রে। ওই পেশা থেকে বর্তমানে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করেন তিনি।
নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা টেলর পেশাদার নামকরণিক। সদ্যোজাতদের জন্য নিখুঁত এবং মানানসই নাম ঠিক করে দেওয়াই ৩৩ বছর বয়সি টেলরের নেশা এবং পেশা।
সন্তানদের নামকরণের ব্যাপারে বাবা-মায়েদের মুশকিল আসান করতে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা করে নেন টেলর।
বাচ্চার মানানসই নাম ঠিক করে দিয়ে কিছু কিছু অভিভাবকের কাছে সাত-আট লক্ষ টাকাও পারিশ্রমিক নেন টেলর।
সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্কারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টেলর বলেন, ‘‘যদি বাচ্চাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় নামগুলি দেখা যায়, তা হলে দেখা যাবে যে এই সব নামের অর্থে আমাদের সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধ অন্তর্নিহিত রয়েছে।’’
টেলর জানিয়েছেন, ২০২২-এ তিনি একশোরও বেশি বাচ্চার নামকরণ করেছেন।
দেড় লক্ষ টাকার বিনিময়ে কী কী পরিষেবা দেন টেলর? টেলর জানিয়েছেন, ওই টাকার বিনিময়ে বাবা-মায়েরা তাঁর সঙ্গে সন্তানের নাম নিয়ে ফোনে আলোচনা করতে পারেন।
পাশাপাশি, টেলর ওই অভিভাবকদের একটি নামতালিকা পাঠান। যেখান থেকে বাবা-মায়েরা নিজেদের পছন্দমতো নাম বেছে নিতে পারেন। তালিকা তৈরি হয় ওই পরিবারের পূর্বপুরুষদের নাম বিশ্লেষণের পর।
আট লক্ষ টাকার বিনিময়ে এই সব পরিষেবা ছাড়াও বাবা-মায়ের ব্যবসা এবং পেশার সঙ্গে মিলিয়েও তাঁদের সন্তানের নামতালিকা দেন টেলর।
২০১৫ সালে এই পেশায় হাতেখড়ি হয় টেলরের। সেই সময় তিনি নিজের হাতে তৈরি একটি নামতালিকা দিয়ে সমাজমাধ্যমে ব্যবসা শুরু করেন।
টেলর বলেন, ‘‘প্রথমে ইনস্টাগ্রামে আমার ফলোয়ারের সংখ্যা অনেক কম ছিল। কিন্তু আমি বাচ্চাদের নামকরণের জন্য বিভিন্ন অভিনব নাম ঠিক করে তা পোস্ট করার পর থেকে আমার ফলোয়ার বাড়তে থাকে। অনেকেই এই বিষয়ে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে বাচ্চাদের নামকরণের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।’’
টেলর জানান, ২০১৮ সালে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে শিশুর নামকরণ প্রক্রিয়ায় অভিভাবকদের সাহায্য করে তিনি খুব মহৎ কাজ করছেন।
একই সঙ্গে টেলর বুঝতে পেরেছিলেন যে, এই কাজে তাঁর বিশেষ দক্ষতা রয়েছে। তাই নিজের ব্যবসা নিয়ে আরও সচেতন হন। কী ভাবে এই ব্যবসা আরও বাড়ানো যায়, তা নিয়েও চিন্তা-ভাবনা শুরু করেন।
টেলর জানিয়েছেন, আবার অনেক সদ্যোজাতদের নামকরণ নিয়ে তাঁকে প্রচুর ঝক্কি পোহাতেও হয়। কিছু কিছু বাচ্চার অভিভাবকদের কোনও নামই পছন্দ না হওয়ায় তাঁকে অনেক বেশি খাটতে হয় বলেও টেলর জানান।
তবে পরিশ্রমের যথাযথ মূল্যও পান টেলর। কয়েক বছরের ব্যবসায় টেলর বর্তমানে বহু টাকার মালিক।