বিশ্বের বৃহত্তম দফতর ভবনের শিরোপা এত দিন ছিল আমেরিকার মাথায়। ভার্জিনিয়ার বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত আমেরিকার প্রতিরক্ষা দফতরের অফিস পেন্টাগন বিশ্বের সবচেয়ে বড় অফিসের তকমা পেয়েছিল। চলতি বছরে সে শিরোপা আসে ভারতের কাছে।
চলতি বছরের ১৭ ডিসেম্বর বিশ্বের সবচেয়ে বড় অফিস ভবনের উদ্বোধন করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই অফিস ভবনটি গুজরাতের সুরাতে অবস্থিত।
সুরাতে তৈরি বিশ্বের সবচেয়ে বড় অফিস ভবনের নাম সুরাত ডায়মন্ড বুর্স। হিরে তৈরির যাবতীয় কাজ এই অফিসে হয়।
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সুরাত ডায়মন্ড বুর্সের অফিস ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়। নির্মাণকাজের জন্য ভারতীয় মুদ্রায় আনুমানিক ৩,৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।
সুরাত ডায়মন্ড বুর্স ভবনটি ১৫ তলার একটি অফিস। অফিস ভবনটি তৈরি করেছে এক বিখ্যাত স্থাপত্য সংস্থা। প্রকল্পের সিইও মহেশ গাধভি জানিয়েছেন, সুরাত ডায়মন্ড বুর্স গুজরাতের হিরের বাজারকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
১৫ তলার বহুতলে কর্মীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য রয়েছে মোট ১৩১টি লিফ্ট। পরিবেশ রক্ষার যাবতীয় নিয়ম মেনেই বহুতলটি তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি নির্মাতাদের।
নির্মাতাদের দাবি, বহুতল অফিস ঠান্ডা রাখার জন্য প্রাকৃতিক উপায়ে সেখানে বায়ু চলাচলের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। ব্যবহৃত হয়েছে সৌরশক্তিও।
সুরাত ডায়মন্ড বুর্সের নির্মাতারা জানিয়েছেন, অফিসটিতে মোট ৬২২৪৫০.৩৬৮ বর্গমিটার কাজের জায়গা (ফ্লোর এরিয়া) রয়েছে। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার হিরে লেনদেন করার অফিস এই এলাকায় গড়ে উঠতে পারে বলে নির্মাতাদের দাবি।
ডায়মন্ড রিসার্চ অ্যান্ড মার্চেন্টাইল (ড্রিম) সিটির অন্তর্গত সুরাত ডায়মন্ড বুর্সের অফিসটি চলতি বছরের অগস্ট মাসে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অফিস ভবনের শিরোপা পায়।
নির্মাতারা জানিয়েছেন, বহুতল উদ্বোধনের দিন বিশ্ব জুড়ে মোট ৭০ হাজার জন অতিথিকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে।
সুরাতের অফিসে কর্মীর সংখ্যাও প্রচুর। সুরাত ডায়মন্ড বুর্স প্রায় ৬৫ হাজার মানুষের কর্মস্থল। নভেম্বর মাস থেকে ২৬৮ মিটারের এই বহুতলে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
সুরাত ডায়মন্ড বুর্সের অফিস ভবনে রয়েছে নিরাপদ সিন্দুক, কনফারেন্স হল, রেস্তরাঁ এবং ব্যাঙ্ক। বিনোদনের জন্য নানা রকম আয়োজনও রয়েছে এই অফিসে। কর্মীদের জন্য আলাদা একটি হলঘর তৈরি করা হয়েছে যেখানে তাঁরা বিভিন্ন রকম কাজ করতে পারেন।
প্রদর্শনীশালা থেকে শুরু করে প্রশিক্ষণশালাও তৈরি করা হয়েছে সুরাত ডায়মন্ড বুর্সের অফিস ভবনে। বিশ্বের ৯০ শতাংশ হিরে কাটা হয় সুরাতে। হিরে কাটা, পালিশ করা থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক লেনদেন, সব কাজই হবে এই অফিসের এক ছাদের তলায়।
হিরে রফতানির জন্য যে সরকারি ছাড়পত্রের প্রয়োজন হয় তা-ও পাওয়া যাবে সুরাত ডায়মন্ড বুর্সের অফিস ভবনে। ছাড়পত্রের জন্য আলাদা করে বাইরে কোথাও যেতে হবে না।