পাঁচ রাজ্যের নির্বাচন শেষ। তার মধ্যে তিন রাজ্যেই আশানুরূপ সাফল্য বিজেপির। এই জয়ের পরে উৎসবের আমেজ বিজেপি শিবিরে। বৃহস্পতিবার ছিল প্রথম বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠক। সভাগৃহে প্রধানমন্ত্রী প্রবেশ করতেই দলীয় সাংসদদের মধ্যে ‘মোদীজি’, ‘মোদীজি’ রব ওঠে।
তবে প্রধানমন্ত্রীকে এই প্রথম দেখা যায় এই বিষয়ে আপত্তি জানাতে। ‘মোদীজি’ নন, তিনি চান তাঁকে ডাকা হোক মোদী বলে। যা দেখে অনেকের বক্তব্য, মোদী বার্তা দিতে চেয়েছেন— ‘আমি তোমাদেরই লোক’।
তবে পরবর্তী বক্তৃতায় তিনি এই প্রসঙ্গ তুলে ধরতে ভোলেননি যে ‘মোদীজি’ শব্দবন্ধ তাঁকে দলের সবার মধ্যে আপন করে নিতে বাধা তৈরি করছে। তাই আর ‘মোদীজি’ নয়, তিনি চান তাঁকে ‘মোদী’ ডাকা হোক।
‘মোদীজি’র গ্যারান্টির পরিবর্তে ‘মোদী কি গ্যারান্টি’ বলার জন্য বৃহস্পতিবার সাংসদদের পরামর্শ দিয়েছেন মোদী। রাজনীতির অনেকের মতে, তিন রাজ্যে জয়ের অন্যতম কারণ এই ভোট প্রতিশ্রুতি (গ্যারান্টি)।
তাই আগামী লোকসভা নির্বাচনের প্রচারেও ‘মোদী-গ্যারান্টি’ শব্দবন্ধকে প্রচারের হাতিয়ার করতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি নেতা-কর্মীরা যাতে ‘মোদী গ্যারান্টি’-র উপর জোর দেন, তা তাঁদের মনে গেঁথে দিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী।
পাশাপাশি, ভোটের আগে সাংসদদের বিনয়ী হয়ে, আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে, সেই বার্তাও ‘মোদীজি’ থেকে ‘জি’ বাদ দেওয়ার মধ্যে দিয়েই সম্ভবত বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন মোদী।
তিন রাজ্যে এই জয় ব্যক্তিগত সাফল্যের চেয়ে দলগত সংহতির জয় বলে ব্যাখ্যা করেছেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘দলীয় কর্মীরা আগামী দিনে আরও কঠোর পরিশ্রম করার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন।’’
শীতকালীন অধিবেশনের পরেই ‘বিকশিত ভারত সঙ্কল্প যাত্রা’ শুরু করা হবে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। সমাজের শেষ ব্যক্তিটি সরকারি প্রকল্পের সুফল পাচ্ছেন কি না, তা খতিয়ে দেখতে ওই যাত্রায় সমস্ত সাংসদদের শামিল হতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বৈঠকের শেষে কেন্দ্রীয় সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আজ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন নিয়ে বেশ কিছু তথ্য আমাদের সামনে তুলে ধরেন। দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন রাজ্যে পাঁচ বছর কংগ্রেসের শাসন থাকার পরে ৪০টি নির্বাচন লড়েছে রাহুল গান্ধীর দল।’’
এর পর প্রহ্লাদের সংযোজন, ‘‘জিতেছে মাত্র সাতটিতে। সাফল্যের হার ১৮ শতাংশ। অন্য দিকে, বিজেপি পাঁচ বছর শাসন করার পরে ৩৯টি বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে নেমে ২২ বার ক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছে। সাফল্যের হার ৫৬ শতাংশ।’’
বিজেপির দাবি, আঞ্চলিক দলগুলি পাঁচ বছর শাসনের পরে সংশ্লিষ্ট রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখায় অনেক বেশি সফল। এ ধরনের রাজ্যগুলিতে ৩৬ বার নির্বাচনে জেডিইউ, তৃণমূল-সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক দল সব মিলিয়ে ১৮ বার জিতেছে।
আবার দু’বার টানা ক্ষমতায় থাকার পরে তৃতীয় বার ক্ষমতা ধরে রাখার প্রশ্নে মাত্র ১৪ শতাংশ সাফল্য পেয়েছে কংগ্রেস। সেখানে বিজেপির সাফল্য ৫৯ শতাংশ।